1910 সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদুল্লাহ যখন সংস্কৃতে এম.এ. ক্লাসের ছাত্র এক গোঁড়া ব্রাহ্মণ পণ্ডিত পঠনীয় বিষয় ‘বেদ’ শাস্তের ক্লাস থেকে অব্রাহ্মণ বিধায় শহীদুল্লাহকে বের করে দেন, তাকে বেদ পড়াতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেন। এ নিয়ে সারা ভারতবর্ষে সুধীমহলে আলোডন সৃষ্টি হয়। শহীদুল্লাহর সংস্কৃত এম.এ. পড়া হলো না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার ভাষা শিক্ষার জন্য Comperative Phliglology (তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব) বিভাগ চালু করলেন। শহীদুল্লাহ হলেন একমাত্র ছাত্র। 1912 সালে তিনি এম.এ. পাস করেন নি। এই তিনিই হলেন জ্ঞানতাপস ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্। তাঁর জীবন, সাধনা ও রচনাপঞ্জি নিয়ে গবেষণা করেছেন তাঁরই পুত্র আ. জা. ম. তকীয়ূল্লাহ্। ভাষা আন্দোলনকে যাঁরা সংগঠিত করেছেন এবং এই আন্দোলনের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন মুহম্মদ তকীয়ূল্লাহ তাঁদের অন্যতম। 1948 সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.এ. এবং এল. এল. বি অধ্যয়নরত অবস্থঅয় এদেশের প্রগতিশীল রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত হন। 1948 সালে প্রাক্কালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন অফিসার হিসাবে নিয়োগের জন্য ইন্টার সার্ভিস সিলেকশন বোর্ড (আই.এস.এস.বি) কর্তৃক তিনি বাঙ্গালী হিসাবে প্রথম নির্বাচিত হয়েও তৎকালীন ভাষা আন্দোলনে কর্মী হিসাবে জড়িয়ে পড়ায় সেনাবাহিনীতে যোগদানে বিরত হন। 1949 সালে রাজনৈতিক কর্মতৎপরতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত হন এবং তার নামে হুলিয়া বের হওয়ায় আত্মগোপন করেন। 1950 সালে পাকিস্তান সরকার তাকে গ্রেপ্তারের জন্য 5 হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন। আমাদের ভাষা ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে প্রগতিশীল ছাত্র ও যুব সমাজকে সংগঠিত করার জন্য 1951 সালে ‘যুবলীগ’ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তিনি তখন কমিউনিস্ট পার্টির ঢাকা জিলা কমিটির সম্পাদক ছিলেন। 1952 সালে ভাষা আন্দোলন সংগঠনে এই যুবলীগের ভূমিকা ছিল অনন্য। তকীয়ূল্লাহ 1956-58 সালে যুবলীগ কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যঃতম সদস্য ছিলেন। তিনি 1952-55 সালে পর্যন্ত রাজবন্দী ছিলেন 1962 সালে 6ই ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচারবিরোধী গণ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সাথে আবার গ্রেপ্তার হন এবং সর্বজনাব শেখ মুজিবুর রহমান, তফাজ্জল হোসেন (মানিক মিয়া), তাজউদ্দিন আহম্মদ, কফিলউদ্দিন চৌধুরী, আবুল মনসুর আহম্মদ প্রমুখের সাথে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে 26নং সেলে বন্দী ছিলেন। মুহম্মদ তকীয়ূল্লাহ্, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সূচিত ও বাংলা একাডেমী প্রবর্তিত বাংলা বর্ষপঞ্জির সংস্কার সাধন করেছেন। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত এই বর্ষপঞ্জি বাংলাদেশে প্রচলিত আছে। তকীয়ূল্লাহ্ প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে 1402 বঙ্গাব্দ হতে বাংলাসনের বর্ষপঞ্জির (শহীদুল্লাহ্ বর্ষপঞ্জি) দিন তারিখ গণনা করা হচ্ছে। তকীয়ূল্লাহ্ বর্তমানে গবেষক ও লেখক হিসাবে কর্মরত আছেন। তিনি বাংলা একাডেমী, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জীবনসদস্য এবং American Society of Animal Science (USA), National Geographic Society (USA)-এর সদস্য।
আ. জা. ম. তকীয়ূল্লাহ
১৯৫২-৫৫ সালে পর্যন্ত রাজবন্দী ছিলেন ১৯৬২ সালে ৬ই ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচারবিরোধী গণ-আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সাথে আবার গ্রেপ্তার হন এবং সর্বজনাব শেখ মুজিবুর রহমান, তফাজ্জল হোসেন (মানিক মিয়া), তাজউদ্দিন আহম্মদ, কফিলউদ্দিন চৌধুরী, আবুল মনসুর আহম্মদ প্রমুখের সাথে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ২৬নং সেলে বন্দী ছিলেন। মুহম্মদ তকীয়ূল্লাহ্, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সূচীত ও বাংলা একাডেমী প্রবর্তিত বাংলা বর্ষপঞ্জির সংস্কার সাধন করেছেন। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত এই বর্ষপঞ্জি বাংলাদেশে প্রচলিত আছে। তকীয়ূল্লাহ্ প্রস্তাবিত পদ্ধতিতে ১৪০২ বঙ্গাব্দ হতে বাংলাসনের বর্ষপঞ্জির (শহীদুল্লাহ্ বর্ষপঞ্জি) দিন তারিখ গণনা করা হচ্ছে। তকীয়ূল্লাহ্ বর্তমানে গবেষক ও লেখক হিসাবে কর্মরত আছেন। তিনি বাংলা একাডেমী, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জীবনসদস্য এবং American Society of Animal Science (USA), National Geographic Society (USA)- -এর সদস্য।