ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখতে গেলেই দরকার পড়ে দলিলপত্র বা উপাদানের। কিন্তু, আমাদের অযত্ন ও অবহেলার কারণে, অধিকাংশ দলিলপত্র এখন নষ্ট হয়ে গেছে। হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত পনের খন্ডের দলিলপত্রই এখন ভরসা।ঐ সব দলিলপত্রের বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আরো কিছু দলিলপত্র। ড. মুনতাসীর মামুন এরকম বিচিত্র সব দলিলপত্রের সন্ধান আমাদের দিচ্ছেন তাঁর নবতম গ্রন্থ মুক্তিযুদ্ধের ছিন্ন দলিল পত্রে। তাঁর পরিবেশনার কারণে সাধারণ একটি দলিলও পেয়েছে নতুন মাত্রা। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় ড. মামুনের এই গ্রন্থ এক মূল্যবান সংযোজন।
মুনতাসীর মামুন
মুনতাসীর মামুনের জন্ম ১৯৫১ সালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে এম. এ.. পিএইচ. ডি. ডিগ্রি লাভ করেছেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক। লেখালেখি করছেন ১৯৬৩ সাল থেকে। ছাত্রজীবনে জড়িত ছিলেন ছাত্র-আন্দোলনে এবং ১৯৬৯ সাল থেকে এ-পর্যন্ত অংশগ্রহণ করেছেন প্রতিটি সাংস্কৃতিক ও গণআন্দোলনে। স্বাধীন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন সম্পাদক। একই সময়ে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি। তাঁর সম্পাদনায় প্রথম প্রকাশিত হয় ডাকসু’র মুখপত্র ছাত্রবার্তা। এছাড়াও বাংলাদেশ লেখক শিবির ও বাংলাদেশ লেখক ইউনিয়নের ছিলেন তিনি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও যথাক্রমে প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম সম্পাদক। ঢাকা নগর জাদুঘরের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন তিনিও একজন । এছাড়াও তিনি জড়িত বিভিন্ন একাডেমিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। বাংলাদেশে লেখালেখির জগতে মুনতাসীর মামুন একটি বিশিষ্ট নাম। সমসাময়িককালে তার মতাে পাঠক নন্দিত লেখক খুব কমই আছে। গল্প, কিশােরসাহিত্য, প্রবন্ধ, গবেষণা, চিত্রসমালােচনা, অনুবাদ ইত্যাদিতে তার স্বচ্ছন্দ বিচরণ ও সেই সাথে রাজনৈতিক ভাষ্যে অর্জন করেছেন বিশেষ খ্যাতি । উল্লিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৭০। বাংলা একাডেমী পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার, ড. হিলালী স্বর্ণপদক পুরস্কার, প্রেসিডেন্ট পুরস্কার (১৯৬৩), মার্কেন্টাইল ব্যাংক স্বর্ণপদক ইত্যাদিতে তিনি সম্মানিত। স্ত্রী ফাতেমা মামুন ছিলেন একজন ব্যাংকার ।