ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ ৬১০ সালের দিকে রমযান মাসে হিজাজের মক্কা নগরীতে এক আরব বণিক শেষপর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসের চাকা ঘুরিয়ে দেওয়া অভিজ্ঞতা লাভ করেন। ইনিই মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ যাঁর মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের আবির্ভাব। আরবে তখন চলছিল জাহেলিয়া বা অজ্ঞতার যুগ : পারস্পরিক হানাহানিতে লিপ্ত ছিল বিভিন্ন গোত্র। দুর্বল অসহায়েরা আগ্রাসী পুঁজিবাদের অধীনে শোষিত হচ্ছিল। এক ধরনের আধ্যাত্নিক অস্থিরতা গোটা আরব বিশ্বকে কুরে কুরে খাচ্ছিল। এমনি পরিস্থিতিতে শান্তি ও সমন্ভয়ের ধর্ম ইসলামের বাণী প্রচারের দায়িত্ব পান মুহাম্মদ (স) । প্রায় একক প্রয়াসে ঐ অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে এনেছিলেন তিনি, প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এক নতুন আদর্শের। কিন্তু মোটেই সহজ ছিলো না এ কাজ। ঘরে-বাইরে অসংখ্য বাধা-বিপত্তির মোকাবিলা করতে হয়েছে তাঁকে। মুহাম্মদের (স) সেই অসাধারণ জীবন কাহিনী তুলে ধরেছেন ক্যারেন আর্মস্ট্রং তাঁর মুহাম্মদ : আ বায়োগ্রাফি অভ দ্য প্রফেট গ্রন্থে। মহানবীর (স) আবির্ভাবের কারণ বিশ্লেষণ করেছেন তিনি, সেই সাথে তুলে ধরেছেন বর্তমান বিশ্বে ইসলামের নামে গড়ে ওঠা বিভিন্ন মৌলবাদী গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডের ধর্মের মৌল বিষয়ের বিরোধিতার দিকটি ; আধুনিক বিশ্বের প্রেক্ষাটটে ইসলামকে অনুসরণ করার গুরুত্ব ব্যাখ্যা দিয়েছেন ।এই গ্রন্থে মহানবীর (স) জীবনের প্রতিটি পর্যায় যুক্তির আলোয় এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে যার ফলে এটি মুসলিম তো বটেই, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর কাছেও প্রয়োজনীয় বিবেচিত হচ্ছে।
সূচি ১. প্রতিপক্ষ মুহাম্মদ ২. মুহাম্মদ, আল্লাহর দূত ৩. জাহিলিয়া ৪. প্রত্যাদেশ ৫. সতর্ককারী ৬. দ্য স্যাটানিক ভার্সেস ৭. হিজরা : নতুন দিক নির্দেশনা ৮. পবিত্র যুদ্ধ ৯. পবিত্র শান্তি ১০. পয়গম্বরের পরলোকগমন?
শওকত হোসেন
শওকত হোসেন, একজন অনুবাদক, চট্টগ্রাম জেলার পরাগলপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার বিচার বিভাগীয় চাকরির কারণে শৈশব ও কৈশোর দেশের বিভিন্ন শহরে কেটেছে। বই পড়ার প্রতি অদম্য আগ্রহ তাঁর বই প্রেমী মায়ের প্রভাবেই এসেছে। ১৯৮৫ সালে "রানওয়ে জিরো-এইট" বইয়ের অনুবাদ মাধ্যমে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স সম্পন্ন করার পর, বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারী ব্যাংকে কর্মরত।
ক্যারেন আর্মস্ট্রং
ক্যারেন আর্মস্ট্রং রােমান ক্যাথলিক হিসেবে সাত বছর অতিবাহিত করার পর ১৯৬৯ সালে বৃত্তি : ত্যাগ করে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি হতে আরবীতে ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক সাহিত্য বিষয়ে শিক্ষকতা করেছেন এবং এক সরকারি বালিকা স্কুলে ইংরেজি বিভাগের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ সালে তিনি ফ্রিল্যান্স লেখক ও ব্রডকাস্টারে পরিণত হন। দীর্ঘদিন থেকেই যুক্তরাজ্যে ধর্মীয় বিষয়ে অন্যতম প্রধান ভাষ্যকার তিনি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও একই মর্যাদা অর্জনের পথে। বর্তমানে তিনি লিও বায়েক কলেজে জুডাইজম বিষয়ে শিক্ষাদান। করেছেন এবং রাব্বী ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। ক্যারেন আর্মষ্ট্রং অ্যাসােসিয়েশন অব মুসলিম সােস্যাল সায়েন্স-এরও সম্মানিত সদস্য। ১৯৯৯ সালে তিনি মুসলিম পাবলিক অ্যাফেয়ার্স’ কাউন্সিল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ক্যারেন আর্মষ্ট্রং-এর অন্যান্য উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ হচ্ছে : প্রু দ্য ন্যারাে গেইট (১৯৮১), বিগিনিং দ্য ওয়ার্ল্ড (১৯৮৩), দ্য গসপেল অ্যাকর্ডিং টু উওম্যান (১৯৮৭), হলি ওআর : দ্য ক্রুসেডস্ অ্যান্ড দেয়ার ইম্প্যাক্ট অন টুডে'স ওয়ার্ল্ড (১৯৯১), দ্য ইংলিশ মিস্টিকস্ অব দ্য ফোরটিন্থ সেঞ্চুরি (১৯৯১), আ হিস্ট্রি অব গড : দ্য ফোর থাউজেন্ড ইয়ার কোয়েস্ট অব জুডাইজম, ক্রিশ্চানিটি অ্যান্ড ইসলাম (১৯৯৩), জেরুজালেম : ওআন সিটি, থ্রি ফেইস (১৯৯৬), ইন দ্য বিগিনিং : আ নিউ ইন্টারপ্রিটেশন অব জেনেসিস (১৯৯৬), ইসলাম : আ শর্ট হিস্ট্রি (২০০১), বুদ্ধা (২০০০), দ্য ব্যাটল ফর গড : আ হিস্ট্রি অব ফান্ডামেন্টালিজম (২০০০) ও দ্য হিস্ট্রি অব মিথ।