‘মুদ্রাভঙ্গ’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ সংহিতার বিয়ের অভিজ্ঞতা ছিল মর্মান্তিক। ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার কয়েকমাস পর সে জয়ব্ৰতর সংস্পর্শে আসে। ছোট্ট মেয়ে টিকলিকে নিয়ে জয়ব্ৰত তখন একা। এই সম্পর্কটিও ভেঙে যায়। জয়ব্রতকে বিশ্বাসঘাতক মনে করে সংহিতা। একাকিত্বে সৃজন—উন্মাদনায় দিন কেটে যায় তারপর। আটান্ন-র সংহিতা এখন নামকরা চিত্রকর। এখন রাতে ঘুমোলেই স্বপ্নে আসছে অদ্ভুত এক মিছিলের ছবি। এরপরই একটা ঘটনা ঘটে। জয়ব্ৰতর মিনতিভরা ফোন পেয়ে তার ওখানে যেতে বাধ্য হয় একদিন সংহিতা। সে দেখে টিকলির অ্যাসিডদগ্ধ ভয়ংকর চেহারা। সে শোনে জয়ব্রত ক্যানসারে আক্রান্ত। কিঞ্চিৎ বিমুঢ়তার পর জেগে ওঠে ভালবাসার আলো| টিকলিকে দেখামাত্র তার চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেয় আশ্চর্য বান্ধবী মিলা। সব ভুলে জয়ব্রতকে হাসপাতালে ভর্তি করে সংহিতা। সমরেশ মজুমদারের ‘মুদ্রাভঙ্গ’ উপন্যাসে পাপপুণ্যময় জীবনের বিচিত্র জলছবিতে আলতো লেগে আছে হৃদয়ের বিষাদ।
সমরেশ মজুমদার
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের জন্ম ১০ মার্চ ১৯৪৪।
তাঁর শৈশব এবং কৈশাের কেটেছে জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সের চা বাগানে। লেখাপড়ায় মন বসতাে না একদমই। ইচ্ছে ছিল নায়ক হবেন। তাই জলপাইগুড়ির বন্ধুদের নিয়ে সাজাতেন নাটকের দল। বাজারের জন্য দিদিমার দেয়া টাকা বাঁচিয়ে তাও খরচ করতেন বন্ধুদের নিয়ে। ষােলাে বছরের এক তরুণ সমরেশ কলকাতায় আসেন ১৯৬০ সালে। ভর্তি হন স্কটিশ চার্চ কলেজে, বাংলায়। এখানেও শুরু হলাে থিয়েটার আর নাটক লেখা, গল্প লেখার কাজ। নাটক লিখলেও নাটক হতাে না। অভিনয়ও জমছে না ঠিকমতাে। ততদিনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাসের সার্টিফিকেট জুটলাে কপালে। কিন্তু নায়ক হওয়ার স্বপ্ন আর পূরণ হলাে না। এবার নাটক বাদ। গল্প লেখায় সময় ব্যয়। ১৯৭৬ সালে দেশ পত্রিকায় ছাপা হলাে তাঁর প্রথম উপন্যাস দৌড়। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। প্রকাশিত গ্রন্থ ২১৫।
সমরেশ মজুমদার ১৯৮২ সালে পান ‘আনন্দ পুরস্কার'। কালবেলা উপন্যাসের জন্য সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান ১৯৮৪ সালে।