ছদ্মনৈতিকতা ও মর্যাদাবোধের রহস্যময় ধারায়, এই গুপ্ত চক্রান্তের কাহিনিপরম্পরা ও আতঙ্ক একটি ছোট ও ঘনবদ্ধ বসতিকে কতটা জটিল করে তুলতে পারে তার চমকপ্রদ ও জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত ‘মৃত্যুর কড়ানাড়া’র প্রতিটি ছত্রে দেখবার মতো। অবশ্য কাহিনির পুনর্র্নির্মাণে মার্কেসের বিস্ময়কর ক্ষমতা এর আগে আমরা ‘নিঃসঙ্গতার একশো বছর’এও দেখেছি।
‘মৃত্যুর কড়ানাড়া’ও সেরকমই আর একটি প্রগাঢ় প্রাণবন্ত নাটক যার মধ্যে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না এমন একটা সহজ বৈশিষ্ট্য এত স্বচ্ছন্দ, এত সুসংবদ্ধ ও সুসংহতভাবে ফুটে ওঠে যে, লক্ষ করলে অবাক হতে হয়। সাহিত্যে মৃত্যুযন্ত্রণা সচরাচর একটা সমাজের ঐতিহ্য বনাম আধুনিকতা, অবাস্তব বনাম বাস্তব এই দুই সংঘাতপূর্ণ শক্তির মধ্যে দিয়ে উন্মোচিত হয়। এই বই একবার পড়বার পরই ফুরিয়ে যাওয়ার বই নয়।
প্রতি পঠনেই পাঠক এক নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হবেন। নতুন নতুন আবিষ্কারে, নতুন তাৎপর্যে, নতুন বিস্তারে যেমন বিস্ময়বিমুগ্ধ হবেন তেমনই নব নব জটের খেলায় কাহিনির নাটকীয় মোচড়ে হয়ে উঠবেন রুদ্ধশ্বাস! আর এখানেই মার্কেস ও ‘মৃত্যুর কড়ানাড়া’র প্রকৃত শক্তি।