মরণোত্তম (হার্ডকভার)
বইবাজার মূল্য : ৳ ২৪০ (২০% ছাড়ে)
মুদ্রিত মূল্য : ৳ ৩০০
প্রকাশনী : অন্যপ্রকাশ
বিষয় : সমকালীন-উপন্যাস , বইমেলা ২০২০
Related Bundles
Bundle | Title | Price |
বইঃমরণোত্তম মরণোত্তম মানে যেখানে জীবনের চেয়ে মৃত্যু উত্তম ।যেখানে জীবিত মানুষটির চেয়ে মৃত মানুষটি বেশি গুরুত্বপূর্ন হয়ে ওঠে ,সেখানে মরন তো উত্তম । এক নিরীহ আজিজ মাষ্টার ও তার প্রতিবাদের গল্প ।এক ছাত্রীর ধর্ষনের বিচার চাইতে গিয়ে প্রশাসন রাজনীতিবীদদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের গল্প ।আপাতদৃষ্টিতে প্রাসঙ্গিক অনেক দিক লেখক সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন ।
বইঃ মরণোত্তম লেখকঃ সাদাত হোসাইন ধরণঃ উপন্যাস প্রকাশনীঃ অন্যপ্রকাশ প্রকাশকঃ মাজারুল ইসলাম প্রকাশকালঃ ২০২০ প্রচ্ছদঃ চারু পিন্ট মুদ্রিত মূল্যঃ ২২৫ টাকা রেটিংঃ ৯/১০ গল্প সংক্ষেপঃ দবির খাঁ মেমোরিয়াল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আজিজ মাস্টার। দবির খাঁ স্কুল অর্থের অভাবে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। স্কুলের নামটাও উঠে যাচ্ছে সাইনবোর্ড থেকে। তিনি ঢাকায় যাচ্ছেন স্কুলটি এমপিভুক্তি করার জন্য অনশন করবেন এজন্য। তিনি একা একা চলে যান অনশন করতে, সেখানে তার সাথে পরিচয় হয় আসাদের। কিন্তু তার এই অনশন করতে আসার পিছনে আরকটি বড় কারণ আছে। তার স্কুলের দশম শ্রেনির ছাত্রী কোহিনুরের ধর্ষন এর প্রতিবাদ। কোহিনুর স্কুলে আসার সময় প্রতিদিন তাকে উতক্ত্য করত স্হানীয় ক্ষমতাধর নুরুল মোল্লার ছেলে। আজিজ মাস্টার নুরুল মোল্লার কাছে বিচার নিয়ে যান, তিনি তার ছেলেকে শাস্তি দিবেন বলেন আজিজ মাস্টারকে। কিন্তু সে দিন দিন আরো হিংস্র হয়ে ওঠে। আবারও আজিজ মাস্টার যখন বিচার নিয়ে যান তখন তিনি কোহিনুরকে তার কাছে পাঠানোর জন্য বলেন, তিনি কোহিনুরের সাথে কথা বলবে আর তার ছেলেকে শাস্তির ব্যবস্হা করবেন। কিন্তু কোহিনূর তার বাড়িতে যাওয়ায় নুরুল মোল্লা জোর করে কোহিনূরকে ধর্ষণ করে। কোহিনূর এই নৃশংসতা সহ্য না করতে পেরে আত্মহত্যা করেন। নুরুল মোল্লা ক্ষমতাসীন দলের নেতা, তিনি পুলিশ, সাংবাদিক, সকলকে হাতের মুটোয় নিয়ে নেয়। কোহিনুর হত্যার বিচার না পেয়ে, আজিজ মাস্টার ঢাকায় আসেন কোহিনূর হত্যার প্রতিবাদ করার জন্য। আজিজ মাস্টার ঢাকার পরিস্হিতি বুঝার জন্য প্রথমে স্কুলের এমপিভুক্তি করার দাবিতে অনশন শুরু করেন। পরে তিনি কোহিনুর হত্যার প্রতিবাদে গায়ে কেরোসিন দিয়ে আত্মহত্যার করবেন বলে ঘোষণা দেন। আজিজ মাস্টার গায়ে কেরোসিন ঢেলে হাতে মশাল নিয়ে প্লেসক্লাবের সামনে দাড়িয়ে আছে।আজিজ মাস্টারের গলায় ব্ল্যাকবোর্ড ঝোলানো তাতে বড় বড় অক্ষরে লেখা, “আমি কোহিনুরের বাবা। কোহিনুর আমার মেয়ে। আমি তার ধর্ষণ ও হত্যার বিচার চাই।" উৎসুক জনতা কেউই তাকে আটকাতে এগিয়ে আসছে না। তারা মোবাইলে ছবি আর ভিডিও তোলায় ব্যস্ত। আজিজ মাস্টারের আত্মহত্যার পর সবাই সোচ্চার হয়। কোহিনুর হত্যার প্রতিবাদে সবাই রাস্তায় নামে। আজিজ মাস্টারের মৃত্যুর পর কোহিনূর হত্যার বিচার হয়, আর দবির খাঁ স্কুলও এমপি ভুক্ত হয়। পাঠঅনুভূতিঃ উপন্যাসটি নুসরাত জাহান হত্যার প্রতিবাদে লেখা। নুসরাত জাহান তার শিক্ষকের হাতে নির্যাতিত হন। কিন্তু লেখক মরণোত্তমে দেখিয়েছেন যে কিভাবে একজন শিক্ষক তার ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজের জীবনটাও দিয়ে দিল। লেখক সাগর-রুণী হত্যা ও তনু ধর্ষণের বিচার না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন, তাদের হত্যার প্রতিবাদ জানান। মরণোত্তম একটি প্রতিবাদী উপন্যাস। এই উপন্যাসটিতে কোন প্রকার ভুল চোখে পড়ে নি,টাইপিং ভুলও চোখে পড়েনি। এক কথায় অসাধারণ ছিল মরণোত্তম উপন্যাসটি। ভালো লাগা দুটো লাইন- “সেই সে মিছিলে, তুমিও কি ছিলে, নাকি ছিল শুধু একা কেউ? জেনে রেখো আজ,একা এ আওয়াজ,হবে শত সহস্র ঢেউ!" “আর কোনো বোনকে জানেয়ারদের কবলে পড়তে দেব না, প্রতিবাদ শুরু হোক আমার থেকে।" আমার প্রথম লেখা বুক রিভিউ। ভুল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
সমাজের ভয়াবহ শোষণ, নিপীড়ন এবং অত্যাচার তুলে ধরেছেন লেখক সাদাত হোসাইন তার মরণোত্তম বইটিতে। এ যুগের মানুষের অসারতা, স্থুলতা, বাতুলতা, অপরিপক্ক আগ্রহ অর্থাৎ তারা কতোগুলো অন্যায়ের বিচার আসলেই চায় আর কতগুলো ব্যাপারে হুজুগে দৌড়ায় তা এই বই পড়লে পাঠক নিজেই বুজতে পারবে। আর প্যারাসাইকোলজি ব্যাপারে বলতে গেলে আজিজ মাস্টার এবং তার মৃত বাবার সাথে স্বপ্নে কথোপকথন গল্পের ধারাটা সুন্দর করে বয়ে এগিয়ে নিয়েছে। প্রথমদিকে শুরুটা ধীরগতির হলেও পর্যায়ক্রমে পাঠককে মিশে যেতে হবে গল্পের পটভূমিতে। সবশেষে বলতে হয় মরণোত্তম বইটিতে লেখক লেখনশৈলী দ্বারা পাঠককে প্রভাবিত করেছেন। আর সেই প্রভাব আপনিও পেতে চাইলে বইটি এখনি পড়ে ফেলুন।
উন্নত বিশ্বের রাষ্ট্র গুলোর যে কোন প্রতিবাদের ভাষা বা প্রতিরোধ ফুটে উঠে কোন কিছু ঘটার আগেই কিন্তু আমাদের এই উপমাহাদেশে চিত্র ভিন্ন। কোন একটা ঘটনা ভাইরাল না হওয়া পর্যন্ত কারো আমলেই যাবে না সেটা যত মারাত্মক ঘটনাই হোক। যদি ফেইজবুকে ভা ইউটিউব এ ভাইরাল হয় তাহলেই প্রতিবাদ হয়। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়েও আমরা নিজেদের ফ্যামিলির কথা ভেবে, সমাজের কথা ভেবে এক পা আগালে আবার দুই পা পিছনে ছুটে যাই। মরণোত্তম বইটা পড়ার পরে নিজের প্রতি লজ্জা লাগছে। ঘৃনা জন্মাচ্ছে। আমরাও মানুষ? কতশত অপরাধের প্রতিবাদ না করে নিশ্চুপ নিরবে মুখ বুঝে সহ্য করেছি। কিন্তু দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকে যায় তখন আর কিছুই করার থাকে না। বইটা পড়ার পরে মনে হয়েছে আমার মনের কথা গুলো লেখক বলছে বা আমার মনের অজান্তে কেউ এখানে লিপিবদ্ধ করে রেখেছে। দুইটা কারনে আমাদের প্রতিবাদের ভাষার গর্জন নিন্মগামী ১। মাটি উপরে পাওয়া মিডিয়া খনি যার কাজ ই হলো রং ছটানো ২। আমরা মানুষ হিসাবে আজব পাবলিক কোন ইস্যু ছাড়া হিসুও করতে পারি না। শুধু কোহিনূর নয়, হাজার কোহিনূর রয়েছে শুধু মাত্র ক্ষমতাবান লোকদের ভয়ে নিশ্চুপ। উপন্যাসের কথাঃ এই বইটি প্রতিবাদের গল্প। যারা রাষ্ট্র নিয়ে চিন্তা করে তাদের গল্প। যারা ক্ষমতাবান দের হিংসা ও লোভের শিকার হয়ে সর্বত্র হারিয়ে পথে নেমেছে তাদের গল্প। এটা সেই বাবাদের কথা তুলে এনেছে তারা নিজের ফ্যামিলির কথা ভেবে অনেক অন্যায় মেনে নিতে হয়েছিলো। আমার বইয়ের রিভিউ লেখার অভ্যাস খুব কম। আমি পড়তেই বেশি পছন্দ করি কিন্তু।আমার মনে হলো এই বইটি নিয়ে দুইটি কথা লেখা প্রয়োজন। আমার লেখায় অনেক ভুল হয়। এই দেশের রাজনীতি আমাদের সবাই কে আজিজ মাস্টার করে রেখেছে। এখান থেকে মুক্তি পাওয়ার একটাই উপায় মরণ। প্রতিবাদ না করতে পারলে, অধিকার আদায় করতে পারলে মরণ ই উত্তম।