মর্গের নীল পাখি
বইবাজার মূল্য : ৳ ১৭৫ (৩০% ছাড়ে)
মুদ্রিত মূল্য : ৳ ২৫০
প্রকাশনী : অক্ষর প্রকাশনী
বিষয় : সমকালীন-উপন্যাস
বুক রিভিউ ৯ বইয়ের নাম: মর্গের নীল পাখি লেখক:সেলিনা হোসেন প্রকাশনী:অক্ষর প্রকাশনী প্রথম প্রকাশ: ২০০৫ সাল পৃষ্ঠা: ১৯২ মূল্য: ২৫০ টাকা . বইটির মূল চরিত্র শুদ্ধ।উপন্যাসের শুরুর দিকেই শুদ্ধর এক বন্ধু এ্যাকসিডেন্টে মারা যায়। যাকে মর্গে দেখতে আসে শুদ্ধ।নিজের ভিতরে শূন্যতা অনুভব করে।এই শূন্যতার ব্যাখ্যা খুঁজেতে গিয়ে বন্ধুত্ব হয় ঢাকা মেডিকেলের মর্গের ডোম প্রাণেশের সাথে। কিন্তুু চারপাশের পরিবেশ,সমাজ একজন ডোমের শুদ্ধের বন্ধুত্ব কে সহজ দৃষ্টিতে দেখতে চায় না।বরং নানা ভাবে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। শুদ্ধ এসবের কোনো পরওয়া না করে বন্ধুত্বের মাঝে আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে যায়। প্রাণেশের বাড়িতে শুদ্ধ আসা যাওয়া করে।প্রাণেশের অপরূপ সুন্দরী বউ প্রীতি আর একমাত্র ছেলে সোমেন। তারা সবাই মিলে খাবার খায়, গল্প করে। কিন্তু হুট করে একদিন বউটা বিষ খেয়ে মারা যায়। মর্গে আসে তার লাশ।শুদ্ধ আবার মর্গে যায়।প্রানেশের কাছ থেকে মৃত্যুর কারন জানতে চায়।সব শুনে শুদ্ধর নিজেকে অপরাধী মনে হয়।কিন্তুু কেনো? এভাবে আরো কিছু অপ মৃত্যু, লাশ, আর মর্গের ঘটনা নিয়ে চলতে থাকে কাহিনী।বিম্ববতী, চম্পাকলি, রাশিমণি, দীপশিখা,শাহাবুদ্দিন, দীপাল ও রুচি সহ আরো কিছু চরিত্র রয়েছে উপন্যাসটিতে। . মানুষের জীবনের এক কঠিন সত্য হলো মৃত্যু। বইটি পড়ার সময় অন্তরে শোক ছেয়ে যাবে।লেখিকার লেখনীয় ভাষা অসাধারণ ছিলো।বইটি সম্পর্কে এর সম্পাদক বলেছেন, "ছেলেমেয়েরা বদলে দিচ্ছে রাষ্ট্রের সংজ্ঞা। তারা বলছে রাষ্ট্র নিজেই বেওয়ারিশ লাশ বহনকারী আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের গাড়ি। আর এ কথাটিই ফুটিয়ে তুলেছেন লেখিকা সুনিপুণভাবে।" . বইটিতে একটা উদ্ধৃতি খুব ভালো লেগেছে "ছেড়ে দেওয়ার জন্য হাত ধরিনি। আমি অসভ্য ছেলে নই। এখনও সমাজকে সুন্দর করার স্বপ্ন দেখি। তাহলে তোমার অযোগ্য হবো কেনো?" . সেলিনা হোসেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত নারী ঔপন্যাসিক। প্রখর বুদ্ধিমতি এই লেখিকার জন্ম ১৪ই জুন, ১৯৪৭, রাজশাহী শহরে। পড়াশোনাও শেষ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাঁর উপন্যাসে প্রতিফলিত হয়েছে সমকালের সামাজিক ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সংকটের সামগ্রিকতা। বাঙালির অহংকার ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তাঁর লেখায় নতুনমাত্রা যোগ করেছে। তাঁর গল্প উপন্যাস ইংরেজি, রুশ, মেলে এবং কানাড়ী ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তিনি ১৯৯৭ সালে বাংলা একাডেমির প্রথম মহিলা পরিচালক হন। ২০০৪ সালের ১৪ জুন চাকুরি থেকে অবসর নেন। ২০১৪ সালে তিনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান হিসেবে দুই বছরের জন্য নিয়োগ পান। প্রথম গল্পগ্রন্থ উৎস থেকে নিরন্তর প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে। ভ্রমণ তাঁর নেশা। তাঁর মোট উপন্যাসের সংখ্যা ২১টি, গল্প গ্রন্থ ৭টি এবং প্রবন্ধের গ্রন্থ ৪টি। লেখিকার প্রাপ্ত পুরষ্কারসমূহ: ড: মুহম্মদ এনামুল হক স্বর্ণপদক (১৯৬৯) বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮০) আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১) কামার মুশতারি স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮৭) ফিলিপস্ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৪) অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৪) একুশে পদক (২০০৯) রবীন্দ্রস্মৃতি পুরস্কার (২০১০) স্বাধীনতা পদক (২০১৮)। # বইবাজার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_মার্চ_২০১৯