দরিয়ানগরের এক নিভৃতচারী বহুমাত্রিক স্রষ্টা কামরুল হাসান একাধারে কবি, নাট্যজন, গবেষক, সংগঠক ও সংস্কৃতিজন। স্বল্পপ্রজ হয়েও আঙ্গিক-সাধনায় তিনি বিভিন্নতাচারী ও নিরীক্ষাপ্রবণ। শিকড়ের সঙ্গে সর্বপ্রান্তের যোগাযোগ ঘটিয়ে মানবসৃষ্টিকলার নানাকৌণিক বিশ্লেষণে তিনি উৎসাহী। তাঁর সৃষ্টিশীলতার এক সচেতন অভিব্যক্তি তাঁরই সা¤প্রতিকতম কাব্যনাটক মোক্তার বলী ও নাফকন্যা ম্যামাচিং। এখানে ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন আচার, ভিন্ন সংস্কৃতি তথা সমাজসৃষ্ট কৃত্রিম বিভেদের ঊর্ধ্বে মানব-মানবীর চিরন্তন প্রেমবাহিত যে অভিন্ন মানববন্ধনের কথা উচ্চারিত, তা বিশ্বব্যাপী নানা বিভেদ-বৈচিত্র্যের মধ্যেও মানবিক ঐক্যের স্মারক। কবিতা ও নাটকের যৌথ-আঙ্গিকে শিল্পের এই বিজয়বার্তা আবার ঘোষণা করেছেন কবি-নাট্যকার কামরুল হাসান। মানবিক নান্দনিকতা অক্ষয় হোক। কামরুল হাসানের সৃষ্টিযাত্রা জয়যুক্ত হোক।
কামরুল হাসান
সব্যসাচী লেখক কবি কামরুল হাসান। জন্ম ২০ মার্চ ১৯৬৪, দরিয়াপাড়, কক্সবাজার শহর। পিতা প্রয়াত ডা. নুরুল হক ও মাতা রোকেয়া বেগম। শৈশব থেকে খেলাধুলা, চিত্রকলা, অভিনয়সহ শিল্প-সংস্কৃতির বিভিন্ন মাধ্যমের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তিনি একইসঙ্গে কবি, শেকড়সন্ধানী লেখক, গবেষক, নাট্যকার, নির্দেশক, অভিনেতা ও সংগঠক। রচিত ও নির্দেশিত নাটকসমূহ : খুকুড়ি, দ্রæহী পল্লান, কালাচাঁনের দোয়ারী, স্বপ্নসুখ। এই কবি মৈন কুমারী ও তমাটে কিশোর এবং জন্মজ্ঞাতি নামক ২টি কালজয়ী নাটক রচনা করেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থসমূহ : নাফকাব্য, রাখাইন কাব্যিয়া। সম্পাদিত গ্রন্থসমূহ : উর্মি, সৃষ্টি সৌন্দর্যের আরেক রূপ, আমরাও পারি, চিহ্ন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় স্মারক ২০১০, বিজয় স্মারক ২০১১, বিজয় স্মারক ২০১২, বিজয় স্মারক ২০১৪ প্রভৃতি। এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলা পিডিয়ায় ‘রাখাইন’ প্রকাশ। অর্ধশতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ লিখেছেন। পুরস্কার : কবি কোলকাতা সিটি করপোরেশন প্রদত্ত ‘সংস্কৃতি ও সম্প্রীতি ১৯৯৪’ পুরস্কার, ‘সাগরমুনি’ পুরস্কার ২০১০, বায়তুশ শরফ ফাউন্ডেশন সম্মাননা পদক ২০১০, ২০১১ সালে ‘শব্দায়ন প্রদত্ত বর্ষসেরা কবি ও কবিতা পুরস্কার ১৪১৭’, কবি নুরুল হুদা সম্মাননা ২০১২, কক্সবাজার প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ প্রদত্ত ‘জ্ঞানতাপস’ সম্মাননা ২০১২, লোকসংস্কৃতি বিষয়ে শিল্পকলা একাডেমী সম্মাননা পুরস্কার ২০১৫ লাভ করেন। ওয়াইপো ও এশিয়াটিক সোসাইটি পরিচালিত গবেষণা কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত।