ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাসের জন্ম মহর্ষি পরাশরের ঔরসে ও অবিবাহিতা মৎস্যগান্ধার গর্ভে-দ্বাপর যুগে। কৃষ্ণবর্ণ ছিলেন বলে এবং দ্বীপে ভূমিষ্ট হওয়ায় তাঁর নাম বৃষ্ণদ্বৈপায়ন আর সর্বপ্রথম বেদের সংগ্রহ ও সম্পাদনা করেন বলে অপর নাম বেদব্যাস। এজন্য তাঁর ‘মহাভারত’ পঞ্চম বেদ নামে কথিত। এমনকি অষ্টাদশ পুরাণের রচয়িতাও তিনি । উপরন্তু ‘পাতঞ্জল দর্শন’ এর যথপোযুক্ত টীকাও প্রণয়ন করেন তিনি। এর পলে ‘যুদ্ধবিদ্যা, দর্শন-শাত্রজ্ঞান নীতি শাস্ত্র পারদর্শিতা, মানবহৃদয়-বিজ্ঞান, সব ক্ষেত্রে এমনই নৈপুণ্য প্রকাশ করেছেন যে তাঁর ররচিত গ্রন্থের সবটা তাঁর রচনা কি-না এ বিষয়ে অনেকে দ্বিমত পোষণ করেন। বিরুদ্ধবাদীদের মত-কৃষ্ণদ্বৈপানের সময়কালে ব্যাস একটি উপাধি ছিল, ভিন্ন ভিন্ন লেখক ভিন্ন ভিন্ন সময়ে কৃষ্ণদ্বৈপায়নের ন্যায় ঐ সকল গ্রন্থ রচনা করেন এবং তাঁরা সকলোই কৃষ্ণদ্বৈপায়নের মতোই পণ্ডিত ছিলেন। পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচারে পরবর্তীতে এ কথা প্রমাণিতও হয়।
প্রসিদ্ধি আছে সহাভারত রচনার জন্য লেখক অনুসন্ধানকালে ব্রহ্মা তাকে গণেশের সাহায্য গ্রহণ করার পরামর্শ দেন। গণেশ দ্বৈপায়নের প্রস্তাবে বিরতীহীনভঅবে লিখে যাবার শর্ত প্রধান করেন। প্রস্তাবে সম্মত হয়ে দ্বেপায়নও পরি-শর্ত প্রদান করেন যে ‘আপনিও না বুঝে আমার কথিত শ্লোক লিপিবদ্ধ করতে পারবেন না।’ গণেশ তাতে সম্মত হয়ে লেখনী ধারণ করলে কৃষ্ণদ্বৈপায়ন রচনা প্লট তৈরির করার সময় পাবার জন্য মাঝে মাঝে এমন দুর্বোধ্য শ্লোক রচনা করলেন গণেশ তা বুঝে লিখতে যে সময় নিতেন সে অবকাশে দ্বৈপায়ন পরবর্তী শ্লোক রচনার সময় পেয়ে যেতেন । দূর্বোধ্য সেই সব শ্লোক পরবর্তীতে ‘ব্যাতকুট’ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। বস্তুত কৃষ্ণদ্বৈপায়নের কবিত্বশক্তি অনেক ক্ষেত্রে আদি কবি বাল্মীকির চেয়েও বেশি।