ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ মানব সভ্যতার বিকাশে এই পৃখিবীর বিচিত্র রংগমঞ্চে যে কোন ক্ষেত্রে ভিন্ন মাত্রায় হলেও নেতৃত্বের ভূমিকা নিতান্তই অনিশ্চায়ক। এই গ্রন্থে লেখক দেশের ভিন্ন ভিন্ন অংগনের চারজন খ্যাতনামা ব্যক্তির চিন্তা ও কর্মের কিছু পরিচিতি ব্যক্তিগত টুকরো স্মৃতির মাধ্যমে হাজির করেছেন। অন্যরূপ আলোকে আঁকা চিত্রগুলো ব্যতিক্রমধর্মী বটে। লেখকের গভীর ইতিহাস সচেতনতা এবং দেশ ও বিশ্ব পটভূমির সংগে ব্যাপক পরিচিতি এই বিবরনগুলোকে করেছে বিশেষভাবে প্রাসংগিক ও আকর্ষনীয়। বিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে লেখকের নির্বাচিত এই চার মহাপুরুষ নানা অংগনে বিচরন করছেন। তাদের অবদান রয়েছে জাতিগঠনে, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায়, জ্ঞান বিতরনে এবং সমাজ সেবায়। লেখকের কাছ থেকে দেখা এই চারজন মহাপুরুষদের মধ্যে অন্যতম হলেন বাংলাদেশর স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মুক্তিযুদ্ধের রূপকার ও সেনাপতি তাজউদ্দিন আহমেদ হলেন আর একজন অন্য অংগনে সিলেটের একজন নিবেদিত প্রাণ সমাজ সেবক ও লেখকের পিতা এডভোকেট আবু আহম্মদ আব্দুল হাফিজ হলেন আর একজন। অন্য মহাপুরুষ হচ্ছেন হলেন আর একজন। অন্য মহাপুরুষ হচ্ছেন জ্ঞানতাপস গুরুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক স্যার। সমকালীন সমাজ, শিক্ষাঙ্গন, জ্ঞানজগত ও রাজনীতির বিস্তৃত বিশ্লেষণ হল এই স্মৃতি কথার প্রেক্ষাপট। বইটির আর একটি বিশেষ আকর্ষণ হল চার মহাপুরুষের বিশ্বাসযোগ্য সংক্ষিপ্ত অথচ পরিপূর্ণ জীবন বৃত্তান্ত। সূচিপত্র প্রথম অধ্যায় : আমার আব্বু আবু আহমদ আবদুল হাফিজ, অনন্য সমাজসেবক : জীবন বৃত্তান্ত দ্বিতীয় অধ্যায় : আমার আব্বার স্মৃতি তৃতীয় অধ্যায় : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতির পিতা : জীবন বৃত্তান্ত চতুর্থ অধ্যায় : জনহিতে নিবেদিত অবুতোভয় রাষ্ট্র নেতা পঞ্চম অধ্যায় : অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক, জ্ঞানতাপস গুরু : জীবন বৃত্তান্ত ষষ্ঠ অধ্যায় : রাজ্জাক স্যার- কাছে থেকে দেখা সপ্তম অধ্যায় : তাজ উদ্দিন আহমদ, মুক্তিযুদ্ধের রূপকার : জীবন বৃত্তান্ত অষ্টম অধ্যায় : মুক্তিযুদ্ধের রূপকার
আবুল মাল আবদুল মুহিত
লেখক, গবেষক, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ, কূটনীতিক, প্রশাসক, পরিবেশবিদ ও অর্থনীতিবিদ আবুল মাল আবদুল মুহিতের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৫শে জানুয়ারি, সিলেটে। তার পিতা তৎকালীন সিলেট জেলা মুসলিম লীগের কর্ণধার অ্যাডভােকেট আবু আহমদ আবদুল হাফিজ, মাতা সিলেট মহিলা মুসলিম লীগের সহ-সভানেত্রী সৈয়দ সাহার বানু চৌধুরী। পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের সদস্য হিসেবে মুহিত কর্মজীবনের সূচনা করেন।
প্রায় তের বছর পূর্বপাকিস্তান এবং কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকারের চাকরি করে ১৯৬৯ সালে তিনি ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে অর্থনৈতিক কাউন্সিলর হিসেবে নিযুক্তি পান। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান ঘােষণা করে তিনি মার্কিন বিদ্বজ্জনমহল এবং সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ২৫ বছরের সরকারি চাকরিজীবনে তিনি পূর্বপাকিস্তানে বাগেরহাটে মহকুমা কর্মকর্তা, পাকিস্তানের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মিনিস্টার ও চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স, ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক, ম্যানিলায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং সবশেষে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব হিসেবে ১৯৮১ সালে স্বেচ্ছা অবসরে যান।
১৯৮২ এবং ১৯৮৩ সালে তিনি বাংলাদেশের অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলেন এবং এ সময় তিনি ESCAP-এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যােগ দেন এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন। ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে ২০০৯-১৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে তিনি পুনরায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ইতিহাস, অর্থনীতি, প্রশাসন, ভ্রমণ, পরিবেশ, রাজনীতি এবং সুশাসন হচ্ছে তার লেখালেখির বিষয়। ইংরেজি ও বাংলায় প্রকাশিত তার বইয়ের সংখ্যা চব্বিশটির ঊর্ধ্বে।মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান এবং অন্যান্য কৃতিত্বের জন্য ২০১৬ সালে তিনি স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন।