জীবন তার সুবিশাল বহু প্রসারিত করুক সবার কে। আনন্দে পরিপূর্ণ হোক সবার জীবন।’- মহাপুরুষের বাণী তার ঘোষণা- ‘আমি মানুষের হৃদয়ে ভালোবাসা জাগিয়ে তুলতে চাই। এই ইচ্ছার শেষ কোথায়?
হুমায়ূন আহমেদের অতুলনীয় সংলাপে বোনা মঞ্চ-সফল নাটকের শেষ দৃশ্য পর্যন্ত খুঁজতে হবে এ প্রশ্নের উত্তর।
এক রুদ্ধশ্বাস যাত্রা কিন্তু আনন্দে পরিপূর্ণ।
এই মঞ্চ নাটকটি কিভাবে লেখা হল সেই গল্পটি বলি।
একদিন সকালে অপরিচিত এক ভদ্রলোক এসে উপস্থিত। তাঁর হাতে এক কার্টুন বিদেশী সিগারেট, চারটা চমৎকার খাতা, ছ’টা বল পয়েন্ট। তিনি বললেন, আপনাকে একটা নাটক লিখতে হবে। আপনার জন্যে সিগারেট, খাতা কলম নিয়ে এসেছি। আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই তিনি বিদেয় হলেন। এবং এক সপ্তাহ পর আবার একগাদা সিগারেট নিয়ে উপস্থিত। কি মুশকিল! আমি বিদেশী সিগারেটের ধোঁয়া টানি এবং দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে ভাবি কি করে এই বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত আমার বিপদ ত্রাতা হিসেবে টেনে আনলাম ‘মহাপুরুষ’ কে। মহাপুরুষরা মানুষকে উদ্ধার করেন। আমাকেই বা করবেন না কেন? এই ইচ্ছে মহাপুরুষের জন্ম কথা।
যাঁরা আমার এই নাটকটি মঞ্চে আনতে চান তাঁদের বলছি- মঞ্চায়নের জন্যে আমার কোন পূর্ব অনুমতির প্রয়োজন নেই। সংলাপ বদলানো যাবে না এবং নাটক শেষ করতে হবে “আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে” এই গানটি দিয়ে (গীত বিনাত; ২১২) এই দু’টি মাত্র শর্ত। খুব কঠিন শর্ত নিশ্চয়ই নয়। -- হুমায়ূন আহমেদ
হুমায়ূন আহমেদ
পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু খারাপ বাবা একটাও নেই।'
হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের প্রবাদপ্রতিম জনপ্রিয় একজন ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও জনপ্রিয় লেখক বলে গণ্য করা হয়। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮, নেত্রকোনা জেলায়। তার আত্মজীবনীতে নেত্রকোনার নানান কথা উঠে এসেছে। এমনকি সেখানে তিনি 'শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ' নামে একটি স্কুল ও প্রতিষ্ঠা করেছেন।
মারা গেছেন: ১৯ জুলাই, ২০১২, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সে সময়ে তিনি লিখেছিলেন 'নিউইয়র্কের নীলাকাশে ঝকঝকে রোদ' এখানে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সময় পাওয়া যায়। ' এখানে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সময় পাওয়া যায়।
সন্তান শীলা আহমেদ, নুহাশ হুমায়ূন, নোভা আহমেদ, বিপাশা আহমেদ, নিনিত আহমেদ, নিষাদ আহমেদ। নুহাশ হুমায়ুন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার । তার উল্লেখযোগ্য কীর্তি হল 'ইতি তোমারই ঢাকা', 'পেটকাটা ষ' ও 'মশারি'। ২০১৮ সালে 'ইতি তোমারই ঢাকা' নাটকটির মাধ্যমে বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে।
ভাইবোন: মুহম্মদ জাফর ইকবাল, আহসান হাবীব, রুখসানা আহমেদ, সুফিয়া হায়দার, মমতাজ শাহিদ। ভাইবোনদের মধ্যে প্রায় সবাই লেখক। মুহম্মদ জাফর ইকবাল বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সায়েন্স ফিকশন লেখক। আহসান হাবীব উম্মাদ নামক একটি বহুল প্রচারিত রম্য পত্রিকার সম্পাদক।
জনপ্রিয় উপন্যাসসমূহ:
বাদশাহ নমদার
শঙ্খনীল কারাগার
আগুনের পরশমনি
মেঘ বলেছে যাবো যাবো
বাদশাহ নামদার
অপেক্ষা
নন্দিত নরকে
এইসব দিনরাত্রি সহ আরো আরো অনেক। (যারা হুমায়ূন পাঠে ভীষণ ভীষণ আগ্রহী তারা আরো আরো বইয়ের নাম জানতে চাইলে বই বাজার ডট কমে খুজে দেখতে পারেন। তার সমস্ত বই আমাদের সাইটে পাবেন।) আপনার পড়া হুমায়ূনের বইয়ের নাম আমাদের জানান।
হুমায়ূন পাঠ আপনার সময়কে রাঙিয়ে তুলবে না শুধু, আপনার সময়কে আপনার কাছে নিয়ে আসবে, আপনাকে হাসিকান্নায় মাতিয়ে তুলবে। বই পড়ুন, বইয়ের সাথে থাকুন।