মধু ও মৌমাছির গান (হার্ডকভার)

আধুনিক কবিতা জীবন ও শিল্পের যুগপৎ কবিতা, স্বপ্ন ও বাস্তবতার কবিতা, দার্শনিক অন্বেষা ও আধ্যাত্মিক ঐক্যত্ম্যতার কবিতা, চিন্তাপরম্পরার ছেদ ও দুজ্ঞেয় ভাবানুষঙ্গের কবিতা, আত্ম—আবিষ্কারের কবিতা। অনাস্থা, অস্থিরতা, দুরাশা, ক্লেদ, কূটাভাষ, বিরোধাভাস, সংশয়, নেতি, নাস্তি, নৈরাজ্য, দ্রোহ, দুঃখ, লেবিরিস্থ অন্বিষ্ট এক ধরনের সৃষ্টিশীলতা আধুনিক কবিতার সম্পদ। ব্যক্তির আত্ম-উন্মোচন এই কবিতার প্রধান উদ্দেশ্য। কথাগুলো বলেছেন গাজী আজিজুর রহমান তার ‘কবিদের কবি’ গ্রন্থে।

এ কথার জের ধরে বলতে হয় ‘মধু ও মৌমাছির গান’ কবিতাগ্রন্থে কবি হাদিউল ইসলাম তাঁর কবিতার পরতে পরতে যাপিত জীবনের নানান অনুষঙ্গ নিয়ে চিত্রকল্প এঁকেছেন। কবি এ জীবনকে অনেকটা জীবনানন্দীয় ভাষায় তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন ‘জঘন্য জীবন থেকে ফের নিংড়ে বার করছি— মধু ও মৌমাছির গান।’ আবার তিনি লিখেছেন— ‘খোলা আকাশের তলে তখনো ঘাসের ঠোঁট/ ধরে আছে হাসি/ আর মৃত হাসিদের গাঁয়ে আমি স্বপ্ন অবমুক্ত করে—/ চলেছি সরিয়ে শবাধার’... খাদে যদি চাষ হতো, গাঢ়তর বিস্তৃত সবুজে/ভরে যেতো কবিতার খাতা। কবি সবুজের শ্যামলিমায় কবিতার খাতা ভরে তুলতে চান।

 ‘একটা অতিকায় পাথর’ কবিতায় বলেন— ‘হায়েনার পিঠ থেকে পিছলে পড়া রোদে/

হায়েনা জন্মাচ্ছে ঢের/ নোংরা নর্দমার হাসি শহরময় ছড়িয়ে গেলে/ মুখে হাত চেপে সমস্ত গ্রন্থাগার গোপন করছে বিকট চিৎকার’/

 কবিতাগুলোর ভেতরে কবি একরকম দায়বদ্ধতা নিয়ে হাজির। এরকম অসংখ্য পঙ্ক্তির দেখা মিলবে তার কবিতায়।

কবিতায় চিত্রিত আশা-নিরাশা-হতাশা প্রেম-বিরহ-দেশাত্মবোধে উচ্চারিত পঙ্ক্তিমালায় নতুনত্বের স্বাদ পাঠককে মুগ্ধ করবে, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। আনোয়ার কামাল কবি, গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য আলোচক সম্পাদক, প্রকাশক—‘এবং মানুষ’ ঢাকা।