মেঘডুবি (হার্ডকভার)
বই পড়ে মানুষ কি লাভ করে তা আমার জানা নেই, আমি বই পড়ি শখে, মনের আনন্দে। যদিও বয়স মাফিক এখনো খুব বেশি বই পড়া হয়নি, তবে যতোগুলোই বই পড়েছি কিন্তু কোনোদিন ই কোনো বই নিয়ে রিভিউ লেখা হয়নি। এটিই আমার লেখা প্রথম বই রিভিউ, তাই ভুলক্রটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। খুবই সংক্ষেপে লেখার চেষ্টা করলাম৷ কবিতা, নাটক ও ছোটগল্পের ন্যায় উপন্যাস সাহিত্যের একটি বিশেষ শাখা। আর এই শাখায় প্রতিটির সংলাপ, রূপ যখন সুন্দরভাবে গুচ্ছিত থাকে তখনই উপন্যাসের মাধ্যমেই জীবনের কোন অর্থ বা ভাষ্য প্রকাশ করার চেষ্টা করে । 'মেঘডুবি' এর মাঝে আমি খুঁজে পেলাম সেই ভাষ্যটুকু । এতোগুলো চরিত্রের মধ্যেও গচ্ছিত ভাবে সাজানো প্রতিটি গল্পের প্রতিটি অংশ। যদিও এই উপন্যাসের সকল চরিত্র ই কাল্পনিক তবে আমার কাছে মনে হল এ যেনো কারো জীবনের লেখিত রূপ। বইটির শুরু হয় এক অন্য রকম এক রহস্য দিয়ে । মেঘডুবি গল্পের শুরুতেই রহস্য টা শুরু হয় বাবলু শিকদার কে নিয়ে। কেনোই বা শুধুমাত্র ক্রাইত তাকে দেখতে পায়? কেনোই বা ক্রাইত আর তার বাবাকে নিয়ে আসা হয় থানায়? কেনো ই বা তাদের মারধর করা হয়? এসব প্রশ্ন জেগে উঠবে পাঠকের মনে। আর সেইসব উত্তর খুঁজে পেতে হলে আপনাকে চোখ বুলাতে হবে মেঘডুবি এর প্রতিটি পৃষ্ঠায়। একাকীত্বের মধ্যে বন্দি থাকা শিশির ও সুকন্যার আবার তাদের প্রানে বেঁচে থাকার নতুন স্পন্দন জোগায় তবে ভাগ্যর নির্মম পরিহাস তা মানতে নারাজ। প্রতিবেশি দেশ থেকে আসা মেয়েটি বারবারই বাস্তবতার কাছে পরাজিত হচ্ছে। আমার কষ্ট হয় তাহমিনার জন্য আর প্রচন্ড রাগ হয় হীরণ সাহেবের মতো লোক দের প্রতি। সমাজে যারা প্রভাব খাটিয়ে চলছে। ভালোলাগে শিক্ষক সাচিং এর মতো লোকেরা এখন আছে এই ভেবে, আবার একটু অভিমান হয় পরিচালকের উপর৷ যখন জেনে যাবে থাকব না আর, রেখো না বুকে পুষে খুব হাহাকার। আমিও মানুষ ছিলাম, দেরি হলেও বুঝবে, ব্যাথা দিয়ে নীল আকাশে পাখি হয়ে খুঁজবে। কী হতো বলে গেলে, শোনো, ভালোবাসি, ফিরিয়ে দিলে বেদনার আমি যে বাসি....। মেঘডুবি উপন্যাসে কিছুটা পথ পাড়ি জমানোর পর পর যখন এইরকম ছোটো ছোটো কবিতাগুলো ভেসে উঠে তখন এই প্রাণে জাগে সঞ্চার, মেঘডুবি তে ডুব দেওয়ার অদৃশ্য অনুভূতি। লেখক কিঙ্কর আহসান যে একজন স্বপ্নবাজ হিসেবে অসাধারণ, তিনি তা এই গল্পের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করেছেন যাতে পাঠকদের মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। সবিশেষ বলবো পূর্ণতা-অপূর্ণতা, আশা-আকাঙ্খা, রাগ-অভিমান, ভালোবাসা, সার্থকতা সকল মিশ্রণে মিশ্রিত মেঘডুবি । তাই সেই আকাশের মেঘের মধ্যে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হয়... ইচ্ছে হয় মেঘডুবি নিয়ে হারিয়ে যাওয়ার। মেঘডুবি একটি বাস্তবিক চরিত্রের উপন্যাস। যা আমাকে বারবার মুগ্ধ করেছে। প্রথমে চরিত্র গুলো একটু জটিল মনে হলেও পরবর্তীতে প্রতিটি চরিত্র গুচ্ছিত রূপ প্রকাশ পাওয়ার উপন্যাসের প্রকৃত রস উপভোগ করা যায়। পরিশেষে প্রিয় লেখকের প্রতি ভালোবাসা জানাই তার এই মনোমুগ্ধকর লেখনীর মাধ্যমে আমাদের মন জয় করে নেওয়ার জন্য।
বুক রিভিউ বইয়ের নামঃ- মেঘডুবি লেখকঃ- কিঙ্কর আহসান প্রকাশনীঃ- অন্বেষা ব্যাক্তিগত রেটিংঃ-৮/১০ ★ক্রাইতঃ- পাহাড়ি এক ছেলে। অসম্ভব দারুণ বাঁশি বাজায় সামনে অপার সম্ভাবনা। একদিন রাজা পাথরের পাশ ঘেষে যাবার সময় দেখতে পায় বাবলু শিকদারের লাশ, সেই অপরাধে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ ক্রাইতের বাবাকে।শুরু হয় ক্রাইতের বাবলু শিকদারকে দেখা আর কিছু অগ্রিম কথা জেনে যাওয়া। একদিন এই বাবলু শিকদারের জন্যই হয়ত তলিয়ে যাবে ক্রাইত রাজা পাথরের কাছে সেই নদীতেই। তার ফুপি বসে থাকবে ভেজা মুড়ি নিয়ে তার অপেক্ষায় ফেরা হবেনা তার আর। ★শিক্ষক সাচিংঃ- ক্রাইতের শিক্ষক। যিনি খুবই বন্ধু ভাবাপন্ন এবং পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষদের জন্য কিছু করতে পারার প্রবল তৃষ্ণা বুকে নিয়ে ঘুরেন। ★সুকণ্যাঃ- গল্পের একজন অন্যতম ব্যাক্তি। ছোটখাট একজন গায়িকা থেকে বড় হবার স্বপ্নে যে স্যাকরিফাইস করছে সংসার। সেই স্বপ্নে যে গান ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারেনা একদিন এই মেয়েটাই জড়িয়ে যাবে একজনের সাথে, ছুটে আসবে ভালোবাসার টানে। ★শিশিরঃ- একজন সাধারণ ছেলের চোখভরা স্বপ্ননিয়ে বিদেশ যাত্রা এবং একটু ভালো থাকার প্রচেষ্টায় বিদেশিনী একজনকে বিয়ে করে সংসার ফাদা। হলোনা সংসার করা, তবে বুক ভর্তি ভালোবাসা তার মেয়ে ছালমার জন্য। বাবাদের হয়ত মেয়ে প্রতি ভালোবাসার মাত্রাটা বেশিই থাকে। জিবনে সে অর্থ উপার্জন করতে করতে ছুটতে থাকে নামের পেছনে,ফ্লিমের পেছনে টাকা ঢালার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিচয় হয় আরেক ব্যবসায়ী ক্ষমতাবানের সাথে, লোভ কাকে না ভর করে? জড়িয়ে যায় ষড়যন্ত্রে। সবকিছুর মাঝেও সে ভালোবাসে সবটুকু দিয়ে সুকণ্যাকে। হবে তাদের মিলন একদিন। ★মনজুরঃ- গল্পের চরিত্রে শিশিরের বন্ধু সে। এক অলস কচ্ছপ প্রকৃতির ব্যক্তি। এত অলস একটা ব্যাক্তি হতে পারে অবিশ্বাস্য।জাগতিক কোন ব্যাপারেই তার কোন আগ্রহ নেই তথাপি বন্ধুর প্রতি তার ভালোবাসা একদিন প্রকাশ পাবে প্রচন্ডভাবে। ★হিরণঃ- একজন অসাদু ক্ষমতাবান ব্যাবসায়ি। যার নারী দেহে প্রবল তৃষ্ণা। ক্ষমতা আর টাকার জোরে নিচে নামতে পারে অনেক, কতটা নিচে পাঠক পড়ে জানবে। ★তাহমিনাঃ- একজন অভিমানী বোকা প্রেমিকা। সে জানে যাকে সে ভালোবাসে তাকে সে পাবেনা তবুও কল্পনাতে আশায় বুক বেধে বারবার যায় তার কল্পনার মানুষের কাছে যদিও সেখানে উদাসিনতা আর মনখুন্নতা ছাড়া পায়না কিছুই। একটা মানুষ দুর থেকেও কতটা প্রচন্ডভাবে ভালোবাসতে পারে মান অভিমান জমিয়ে কল্পনায় সংসার গড়তে পারে সেটা তাহমিনা চরিত্র না পড়লে বোঝার উপায় নেই। আবেগ মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করে সেও একদিন ভুল পথে পরিচালিত হয়ে মাশুল গুনবে নিজের জীবন দিয়ে। কি বীভৎস নির্দয় হয় একতরফা ভালোবাসা গুলো। কখনও মনের গহীনের আর্তচিৎকার পৌছায়না কারো কান অব্দি। ★লেখকঃ- পুরো গল্পটাই যার ভিউ দিয়ে লেখা। একজন লেখক যার লেখায় অভিভুত হয়ে প্রেমে পড়ে সরল এক বোকা মেয়ে। যাকে ব্যবহার করে সে স্বার্থপরের মত। একজন স্বার্থান্বেষী মানুষ যার বড় হওয়ার স্বপ্ন প্রবল, সেই স্বপ্নের জন্য দিয়ে দিতে পারে যে কেন কিছু। কিন্তু সে নিজেও জানেনা বোকা মেয়েটা তার জিবনে কি আমুল পরিবর্তন এনে দিয়ে যাবে। আধাপাগল একটা মানুষ হয়ে রয়ে যাবে সে পৃথিবীর বুকে এবং সেই বোকা মেয়েটার কল্পনার সংসার নিজে করতে শুরু করবে। >>> বইটা নিয়ে যত বলবো হয়ত কম বলা হবে। লেখক যে কি মায়ার এক তুলিতে করে একেছেন সবগুলি চরিত্রকে ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় তা বলে বোঝানো অসম্ভব। মনে হয়েছে যেন এ সাধারণ মানুষের এক জিবনযাত্রা, হয়ত প্রতিনিয়ত ঘটছে আমাদের চারিপাশে। তার মধ্যে থেকেই লেখক এদের উঠিয়ে এনেছে ফুটিয়ে তুলেছে তার লেখার জাদুতে। মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়েছি বইটা।বেশি ভালোলেগেছের লেখকের কথা পড়ে, জেনেছি গল্পটা সত্যের ছোয়ায় লেখা তাই হয়ত সবগুলো চরিত্র এতটা জিবন্ত আর প্রাণবন্ত। ★নিজস্ব কথাঃ- বই পড়তে গেলে আমার স্বভাব লেখক পরিচিতি পড়া। কিন্তু লেখকের সম্পর্কে যা দেওয়া তাতে তো বিরাট তৃষ্ণায় একফোটা জল ঢালাও হয়না। শুরু করলাম ফেসবুকে খোজা কিছু পেলাম কিছু পেলাম না। হঠাৎই কালকে তার পেজ কিভাবে জানিনা আমার হোম পেজে আসলো হয়ত সার্চ করার বদৌলতে তাহারা সহ্য না করিতে পারিয়া আমাকে করুণা করিয়াছে। 😁😁 হয়ত সাধারণ পাঠক জায়গা পাবনা তার ভার্চুয়াল লাইফে তবে আগ্রহটা থেকে যাবে তার প্রতি অমলিন।বিশেষত তার লেখার জাদুতে। °°°°°সবশেষে বলতে চায় লেখকের লেখনী হয়ে থাক আাকাশের একটুকরো স্বচ্ছ সাদা মেঘ, যে মেঘ থেকে বৃষ্টি ঝরে মাঝে মাঝে প্রশান্ত করে ধরণী সেভাবে প্রশান্ত করুক আমার মত হাজারও পাঠকের হৃদয়কে। হয়ে থাকুক শরতের একগুচ্ছ কাশফুলের মত সাদা মেঘ যে মেঘ হারায়না রয়ে যায় সবসময় সবখানে°°°°°°.
রিভিউঃ মেঘডুবি 'মেঘডুবি' এর মাঝে আমি খুঁজে পেলাম সেই ভাষ্যটুকু । এতোগুলো চরিত্রের মধ্যেও গচ্ছিত ভাবে সাজানো প্রতিটি গল্পের প্রতিটি অংশ। যদিও এই উপন্যাসের সকল চরিত্র ই কাল্পনিক তবে আমার কাছে মনে হল এ যেনো কারো জীবনের লেখিত রূপ। মেঘডুবি গল্পের শুরুতেই রহস্য টা শুরু হয় বাবলু শিকদার কে নিয়ে। কেনোই বা শুধুমাত্র ক্রাইত তাকে দেখতে পায়? কেনোই বা ক্রাইত আর তার বাবাকে নিয়ে আসা হয় থানায়? কেনো ই বা তাদের মারধর করা হয়? এসব প্রশ্ন জেগে উঠবে পাঠকের মনে। আর সেইসব উত্তর খুঁজে পেতে হলে আপনাকে চোখ বুলাতে হবে মেঘডুবি এর প্রতিটি পৃষ্ঠায়। একাকীত্বের মধ্যে বন্দি থাকা শিশির ও সুকন্যার আবার তাদের প্রানে বেঁচে থাকার নতুন স্পন্দন জোগায় তবে ভাগ্যর নির্মম পরিহাস তা মানতে নারাজ। প্রতিবেশি দেশ থেকে আসা মেয়েটি বারবারই বাস্তবতার কাছে পরাজিত হচ্ছে। আমার কষ্ট হয় তাহমিনার জন্য আর প্রচন্ড রাগ হয় হীরণ সাহেবের মতো লোক দের প্রতি। সমাজে যারা প্রভাব খাটিয়ে চলছে। ভালোলাগে শিক্ষক সাচিং এর মতো লোকেরা এখন আছে এই ভেবে, আবার একটু অভিমান হয় পরিচালকের উপর৷ যখন জেনে যাবে থাকব না আর, রেখো না বুকে পুষে খুব হাহাকার। আমিও মানুষ ছিলাম, দেরি হলেও বুঝবে, ব্যাথা দিয়ে নীল আকাশে পাখি হয়ে খুঁজবে। কী হতো বলে গেলে, শোনো, ভালোবাসি, ফিরিয়ে দিলে বেদনার আমি যে বাসি....। মেঘডুবি উপন্যাসে কিছুটা পথ পাড়ি জমানোর পর পর যখন এইরকম ছোটো ছোটো কবিতাগুলো ভেসে উঠে তখন এই প্রাণে জাগে সঞ্চার, মেঘডুবি তে ডুব দেওয়ার অদৃশ্য অনুভূতি। লেখক কিঙ্কর আহসান যে একজন স্বপ্নবাজ হিসেবে অসাধারণ, তিনি তা এই গল্পের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ করেছেন যাতে পাঠকদের মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। সবিশেষ বলবো পূর্ণতা-অপূর্ণতা, আশা-আকাঙ্খা, রাগ-অভিমান, ভালোবাসা, সার্থকতা সকল মিশ্রণে মিশ্রিত মেঘডুবি । তাই সেই আকাশের মেঘের মধ্যে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হয়... ইচ্ছে হয় মেঘডুবি নিয়ে হারিয়ে যাওয়ার। তাই মেঘডুবি বইটি সকল নতুন পাঠকদের ভালো লাগবে আশা করি।।।।
বইটি পড়ে ভালো লেগেছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে উনার লিখা পছন্দ করি।