‘মেঘ ছিল, বৃষ্টিও’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ সে ছিল এক আদর্শবান যুবক, একজন সৎ নাগরিক। অন্তত হতে চেয়েছিল। কিন্তু জীবন তাকে স্বস্তিতে রাখেনি। শৈশবেই পিতৃহীন, মাকে নিয়ে মামার বাড়ির আশ্রয়ে প্রতিপালিত। দু’বেলা দু’মুঠো জোটে ঠিকই, কিন্তু অমানুষিক পরিশ্রমের বিনিময়ে। চাকরি একটা খুবই দরকার তার। কিন্তু কে দেবে! ঘুষ দিতে পারলে হয়তো হয়, কিন্তু ঘুষ দেবার মতো অনৈতিক কাজ কল্পনাতেও প্রশ্রয় পায় না তার। অনেক কিছুই ছিল না তার। কিন্তু চোখে পড়ার মতো একটা শরীর ছিল। নিয়মিত ব্যায়ামচৰ্চায় সুগঠিত স্বাস্থ্যের জন্য একটা পদকও জুটেছিল তার। তবু সে ছিল গুরুত্বহীন একজন মানুষ। এই গুরুত্বহীন মানুষটিই কীভাবে একদিন সকলের চোখে হয়ে উঠল বিশেষ মানুষ, এক সাম্রাজ্যের নেপথ্যলোকের পটভূমিকায় লেখা এই উপন্যাস।
সমরেশ মজুমদার
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের জন্ম ১০ মার্চ ১৯৪৪।
তাঁর শৈশব এবং কৈশাের কেটেছে জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সের চা বাগানে। লেখাপড়ায় মন বসতাে না একদমই। ইচ্ছে ছিল নায়ক হবেন। তাই জলপাইগুড়ির বন্ধুদের নিয়ে সাজাতেন নাটকের দল। বাজারের জন্য দিদিমার দেয়া টাকা বাঁচিয়ে তাও খরচ করতেন বন্ধুদের নিয়ে। ষােলাে বছরের এক তরুণ সমরেশ কলকাতায় আসেন ১৯৬০ সালে। ভর্তি হন স্কটিশ চার্চ কলেজে, বাংলায়। এখানেও শুরু হলাে থিয়েটার আর নাটক লেখা, গল্প লেখার কাজ। নাটক লিখলেও নাটক হতাে না। অভিনয়ও জমছে না ঠিকমতাে। ততদিনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাসের সার্টিফিকেট জুটলাে কপালে। কিন্তু নায়ক হওয়ার স্বপ্ন আর পূরণ হলাে না। এবার নাটক বাদ। গল্প লেখায় সময় ব্যয়। ১৯৭৬ সালে দেশ পত্রিকায় ছাপা হলাে তাঁর প্রথম উপন্যাস দৌড়। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। প্রকাশিত গ্রন্থ ২১৫।
সমরেশ মজুমদার ১৯৮২ সালে পান ‘আনন্দ পুরস্কার'। কালবেলা উপন্যাসের জন্য সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান ১৯৮৪ সালে।