নিরব সন্ধ্যায় কোথাও না গিয়ে চিঠি হাতে ক্ষেতে এসে বসেছে।রিমুর চিঠিটা শুকনো খড়ের উপর রেখে রেণুর চিঠিটা মেলে ধরলো আগে। পরিপাটি বাক্য, সাজানো লাইন, সব রেখে সবচেয়ে মধুর লেগেছে শুরুতে প্রিয় এর জায়গায় আপনি লিখে কমা দেওয়াটা। রেণুর কাঁচা হাতে লেখা প্রতিটি শব্দ বলে দিচ্ছিল এটা কাঁচা মনের হতেই পারে না।যেন সে যুগ যুগ ধরে প্রেম করে এসেছে।তার প্রকাশ করার অভিনবতা দেখে নিরব অবাক হয়ে বসে আছে। আবেগ বলে সে শ্রেষ্ঠ প্রেমের ব্যাখা লিখে দিয়েছে।বিশ বছর বয়সী কোনো নারী হয়ত এমন করে ব্যাখা দিতে পারবেনা।সে প্রতি পদে পদে আবেগ বলে বেড়িয়েছে, কিন্তু নিরবের কাছে একবারও তা আবেগ বলে মনে হয়নি।
যৌবনের শুরুতে এমন অনেক কিশোরীকে সে দেখেছে যে কিনা তার জন্য দিশেহারা হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু এ প্রথম এক তরুণীর সম্মুখীন সে হয়েছে যে কিনা তার বয়সকে তুচ্ছ মনে করে মন দিয়ে তার ভাবনা গুলোকে চিঠিতে রটিয়েছে। কি দারুণ তার লেখনী! চাহনির কথা উপরে তোলা থাকুক।কে এই তরুণী? আচমকা আমার জীবনে প্রবেশ করে আমার মুখশ্রীকে তার তৃষ্ণা বানিয়ে ফেললো। আমি চাইলেও এই মনকে ঘৃণা করতে পারবোনা।
নিরব শেষের লাইনটা পড়ে অট্টহাসিতে লুটিয়ে পড়লো। খসখসে খড়ের উপর চিৎ হয়ে শুয়ে চিঠিটাকে দেখতে দেখতে বললো,' বাচ্চা মেয়ের বাচ্চামিতে গলবো কি!!
বাষ্প হয়ে গেছি! মেঘ এসে এখন বৃষ্টি হয়ে নামবে তোমারই শরীরে তরুণী!! তোমারই শরীরে!'
বিঃদ্রঃ এটি আফনান লারার ২য় উপন্যাস "মেঘ বলেছে বৃষ্টি নামবে"