ভূমিকা একটি প্রশ্ন খুব সরল-সোজা : কেনো বর্তমান কালে রুমীর এতো সব অনুবাদ? কেনো-ই-বা আটশ’ বছর পরে এসেও রুমীর আবেদন এতো গাঢ ও গভীর? এই যে নিত্য-নতুন অভিঘাতময় শব্দমালা, চিত্র-দৃশ্য, গ্রন্থরাজি, সংবাদপত্র-পত্রিকা, টেলিভিশন-কম্প্যুটার, ইত্যাদি-তারপরও রুমীকে স্পর্শ করার, অভিনিবেশ সহকারে পাঠ করার সময় কোথায়? হ্যা, তারপরও কিছু থাকে। সেই থাকা রুমীতে-তাঁর নিঃশব্দতায়, তাঁর স্বপ্ন-চিত্রময়তায়, অতি চেনা, অতি চেনা, অতি জানাকে ফিরিয়ে দেয়ায়। তাঁর কবিতা আনন্দময় ও সুখের, আত্মভৃপ্তি ও বেদনার-এবং অনন্ত ভ্রমণের। আজকের পৃথিবীতে যখন কেবল চাওয়া আর চাওয়া-ই সার, তখন রুমী নিয়ে যান জগতের মধ্যে অন্য নিরাপদ আশ্রয়ে, আত্মা যাঁর একান্ত সম্বল। সুখের খোঁজ করতে গিয়ে আবিষ্কার করেন নিজেকে।রুমীকে যদি জগৎ-ভ্রমণের সঙ্গী হিশেবে পাওয়া যায়-তবে তিনি মহিমার অন্য এক প্রান্তরে এনে আমাদের পূর্ণ করেন, আমাদের দেখান স্মিত ও প্রখর সূর্যের কিরণ। আমরা বাগান থেকে মালির কাছে যাই, যাই শরীর থেকে সেই অন্তর্গত আঁধারে; অবগাহন করি গভীর সমুদ্রে। বন্ধুর আকাঙ্খায় নদীর মতো প্রবাহিত হই, পাখির মতো উড়ি।ভালোবাসার এক মধুময় সন্ধান দেন রুমী।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী
জন্ম ৩১ ডিসেম্বর ১৯৪৮, ফরিদপুর, বাংলাদেশ। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা থেকে ১৯৭০ সালে স্নাতক। পদ্য-গদ্য মিলিয়ে গ্রন্থের সংখ্যা পঞ্চাশের অধিক। উল্লেখযোগ্য পুরস্কার : বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১), যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (১৯৮৭), আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৯), বিষ্ণু দে পুরস্কার (২০০৭), রূপসী বাংলা পুরস্কার (২০১০), মহাদিগন্ত পুরস্কার (২০১১)। বাংলা একাডেমির ফেলো, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি। ভ্রমণ : ভারতবর্ষ, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, ইরাক, ইরান, কুয়েত।