বাংলাদেশে গণিত উৎসবের কারণে শিক্ষার্থীদের গণিত শেখার আগ্রহ বাড়ছে। অনেক বছর ধরে বাংলাদেশে পাঠ্যবইয়ের বাইরে গণিত বই পাওয়া ছিল দুষ্কর। তবে এখন গণিতের ওপর অনেক বই পাওয়া যায়। তার পরও প্রাইমারি ও জুনিয়র স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য লেখা বইয়ের সংখ্যা এখনো খুব কম৷ ছোটো ক্লাসের শিক্ষার্থী, বিশেষ করে চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাণিতিক সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য একটি বই লেখার ইচ্ছা ছিল অনেক দিন ধরেই কিন্তু সময়-সুযোগ হচ্ছিল না। এখন আমার ছেলে যেহেতু প্রাইমারি স্কুলে পড়ে, তাই অস্ট্রেলিয়া আসার পরে আমি এখানকার গণিত অলিম্পিয়াডের ওপর কিছু বই সংগ্রহ করে পড়াশোনা শুরু করি। আমার ছেলের গাণিতিক সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের আরো অনেক শিশুর জন্য যদি একই কাজ করতে পারি, তাহলে কী চমৎকার একটি ব্যাপার হবে! তাই শেষ পর্যন্ত এরকম বই লেখার উদ্যোগ নিই। বইটি লেখার সময় আমাকে খুব বেশি মৌলিক চিন্তা করতে হয়নি, বরং বিদেশি বইয়ের সাহায্য নিয়েছি। তবে মূল চ্যালেঞ্জ ছিল বইটি আমাদের দেশের শিশুদের জন্য উপযোগী করে লেখা। এ ছাড়া সারা পৃথিবীতে গণিতের ভাষা কিন্তু একই। আর আমাদের দেশের শিশুরা যখন বড়ো হয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবে, তখন তাদের প্রতিযোগিতা (ও সহযোগিতা) করতে হবে সারা বিশ্বের দক্ষ মানুষদের সঙ্গে। তাই ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে এবং এক্ষেত্রে তাদের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের বই উপহার দিতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আর বইটি লেখার সময় তাহমিদ রাফি ও মোশারফ হোসেন অনেক সাহায্য করেছে। তাই তাদের প্রতি আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।
তামিম শাহরিয়ার সুবিন
তামিম শাহরিয়ার (ডাকনাম: সুবিন)-এর জন্ম ১৯৮২ সালের ৭ নভেম্বর ময়মনসিংহে। গ্রামের বাড়ি কুমিলা জেলার চান্দিনা উপজেলার হারং গ্রামে। তাঁর বাবা মাে: মােজাম্মেল হক ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং মা ফেরদৌসি বেগম গৃহিণী। স্ত্রী সিরাজুম মুনিরা ও পুত্র আরাভ শাহরিয়ারকে নিয়ে বর্তমানে সিঙ্গাপুরে বসবাস করছেন।
লেখাপড়া করেছেন হােমনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এ কে উচ্চ বিদ্যালয়, নটর ডেম কলেজ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ে। ২০০৬ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে পাস করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন বিভিন্ন প্রােগ্রামিং প্রতিযােগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। পরবর্তী সময়ে (২০০৭ ও ২০০৮ সালে) তিনি এসিএম আইসিপিসি ঢাকা রিজিওনাল-এর বিচারক ছিলেন। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও পরে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ শুরু করেন। বাংলাদেশে থাকাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন মুক্ত সফটওয়্যার লিমিটেড ও দ্বিমিক কম্পিউটিং। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডে একজন একাডেমিক কাউন্সিলর। বর্তমানে সিঙ্গাপুরে গ্র্যাব নামক একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন।