জীবন ও জগৎকে দেখার বিভিন্নমুখি দৃষ্টিভঙ্গি আছে। পরস্পরবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে মিল অমিলের এক খেলা আবহমান কাল ধরেই চলে আসছে। এর বিরাম নেই। পৃথিবীর রহস্য উদঘাটনে বিশ্লেষণে সৃজনশীল বিজ্ঞানীদের অব্যাহত যাত্রাও আবিষ্কার মানুষের জীবন ও সমাজকে আলোড়িত করেই চলছে। ধর্মতাত্তি¡কদের বিশ্বাস, বিজ্ঞানীদের সংশয় ও যুক্তি প্রমাণের পর বিশ্বাস, দার্শনিকদের উপলব্ধি এই সব কিছু নিয়ে ‘মানব সমাজ ও বিজ্ঞান’ রচনা করেছেন লেখক। মানবজাতির আদিকাল থেকেই মানুষ সবকিছু নিয়েই প্রশ্নকাতর। এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আবার নতুন নতুন অনেক প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে। অপার মহাবিশ্বের মতো অপার প্রশ্নের আরেক মহাবিশ্বের সম্মুখীন হয়েছে। সেজন্য অনুসন্ধান চলছে অবিরত সম্মুখপানে এগিয়ে যাওয়ার। এই পথ চলাতে কবিদের যেমন আনন্দ বিজ্ঞানীদেরও তেমনি আনন্দ। লেখকের আনন্দ তার পাঠককে তা জানানোর মধ্যে। বর্তমান গ্রন্থ তারই প্রয়াশ। ড. গোলাম মোরশেদ খান ১৯৫৪ সনে নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা খান মোহাম্মদ আবদুল হাকিম, মা আয়েশা খানম। পিতামহ ময়মনসিংহের প্রখ্যাত লোককবি জালালউদ্দিন খাঁ। পেশায় চিকিৎসক, শল্যবিদ্যার একটি শাখায় পিএইচ. ডি. করেছেন ১৯৮৮ সালে। বর্তমানে সৌদী আরবে একটি সামরিক হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত। পেশাগত জীবনে মানবশরীর ব্যবচ্ছেদের জটিল জগতের বাইরে জীবনের মৌলিক প্রশ্নগুলো সতত আলোড়িত করে তাকে- তাই তার উত্তর খুঁজে ফিরেন ইতিহাস, বিজ্ঞান এবং দর্শনে। পড়া ও লেখার অভ্যাস উত্তরাধিকার হিসেবেই পেয়েছেন পিতা-পিতামহের কাছ থেকে। লেখালেখিতে প্রবেশ কবিতা লেখার মাধ্যমে হলেও বর্তমানে বিজ্ঞান বিষয়ক নিবন্ধ এবং অনুবাদেই আগ্রহ বেশি। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ছয়টি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে অনুসন্ধিৎসা, যা কখনো পরিত্যাগ করা যাবে না। অনুসন্ধিৎসার বেঁচে থাকার অন্তর্গত কারণ রয়েছে। কেউ যখন অসীমের রহস্য, জীবনের জটিলতা ও বাস্তব প্রকৃতির সুষমা নিয়ে চিন্তা করে, তখন বেদনায় ভারাক্রান্ত হওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। কিন্তু একজন যদি এই রহস্য থেকে প্রতিদিন সামান্য ভগ্নাংশও হৃদয়ঙ্গম করার চেষ্টা করে, তবে তা প্রসংশনীয়। পবিত্র অনুসন্ধিৎসাকে কখনো মরতে দেবে না। -আলবার্ট আইনস্টাইন