মানহাজ হলো দীনী বিষয়সমূহ গ্রহণ করার ও বাস্তবায়ন করার পদ্ধতির নাম। দীনী প্রতিটি কাজে ও বিষয়ে মানহাজের তাৎপর্য ও গুরুত্ব অত্যধিক। মানহাজ যদি বাড়াবাড়ি ও শিথিলতা থেকে মুক্ত হয়ে মধ্যমপন্থি না-হয়, তাহলে বিচ্যুতি আবশ্যক। তাই একজন মুসলিমের জীবনে বিশুদ্ধ মধ্যমপন্থি মানহাজ অপরিহার্য। আর ইমাম আলবানী রাহিমাহুল্লাহ ছিলেন বিংশ শতাব্দীর বিশুদ্ধ মানহাজের কান্ডারি। বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি মুক্ত বিশুদ্ধ মানহাজ উম্মাহর সামনে তুলে ধরতে তিনি ছিলেন অকুতভয়।
ইমাম আলবানী রাহিমাহুল্লাহ হাদীসশাস্ত্রে যে বিরাট অবদান রেখেছেন, তা থেকে বাংলাভাষী মুসলিমরা উপকৃত হলেও তার আকীদা, মানহাজ ও ফিকহী অবদান থেকে বঞ্চিত রয়েছে। ইমাম আলবানী রাহিমাহুল্লাহ-এর হাদীসশাস্ত্রের বাইরেও অন্যান্য ইলমী ঝরনা থেকে বাংলাভাষী মুসলিমরা যেন উপকৃত হতে পারে, সে-লক্ষ্যে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করি। এর প্রথম পদক্ষেপ ছিল ফিকহ কেন্দ্রিক ‘ফাতাওয়ায়ে আলবানী’ সংকলন। আলহামদুলিল্লাহ ফাতাওয়ার সংকলনটি পাঠকদের কাছে আশাতীত গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। ইনশাআল্লাহ তার ফাতাওয়ার সংকলন সামনে আরও কয়েক খণ্ডে প্রকাশ হবে। আর এর ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় পদক্ষেপ ‘মানহাজুস সালাফ’ নামক মানহাজ বিষয়ক এই গ্রন্থটি।
• মানহাজুস সালাফ সংকলন ও অনুবাদের ক্ষেত্রে অনুসৃত পদ্ধতি
১. ‘মানহাজুস সালাফ’ গ্রন্থটির অধিকাংশ আলোচনা শাইখ ড.শাদী ইবন মুহাম্মাদ ইবন সালিম আলে-নুমান সংকলিত ‘জামিউ তুরাসিল আল্লামা আলবানী ফিল মানহাজ’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।
২. ইমাম আলবানী রাহিমাহুল্লাহ-এর আলোচনা কোনোরকম পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা ছাড়াই অনুবাদ করা হয়েছে। তবে দুএক জায়গায় পাঠকদের সুবিধার্থে হুবহু অনুবাদ না করে সংক্ষিপ্ত অথবা বৃদ্ধি করা হয়েছে। যেসব জায়গায় সংক্ষিপ্ত বা বৃদ্ধি করা হয়েছে, সেসব জায়গা টীকায় ‘পরিমার্জিত’ লিখে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে।
৩. টীকায় আয়াত ও হাদীসের যে উদ্ধৃতি উল্লেখ করা হয়েছে, তা আমার নিজের পক্ষ থেকে। টীকায় সকল হাদীসের হুকুম লাগানো হয়নি। কারণ, তিনি গ্রহণযোগ্য হাদীস ছাড়া দলীল গ্রহণ করতেন না। তবে দুএক জায়গায় প্রদত্ত মতামতকে শক্তিশালী করার জন্য তিনি দুর্বল হাদীস এনেছেন। সে-দুএকটি হাদীসের দুর্বলতা টীকায় উল্লেখ করা হয়েছে।
৪. ইমাম আলবানী রাহিমাহুল্লাহ-এর আলোচনার পূর্বে ও পরে আমার পক্ষ থেকে যে-টীকা ও আলোচনা সংযোজন করা হয়েছে, তার শুরুতে মোটাদাগে ‘আমি বলবো’ উল্লেখ করে সেসব টীকা চিহ্নিত করা হয়েছে। পাঠকদের বিষয়টি খেয়াল রাখার পরামর্শ রইলো।