বাংলা পড়তে গিয়ে আনিসুজ্জামানের মনে হয়েছিল, সাহিত্যকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব নয়। তাঁর চোখ চলে যায় ইতিহাসের বৃহত্তর পটে। গবেষণার বিষয় ছাপিয়ে যায় নির্ধারিত সীমানা। কারণ, তাঁর মনে হয়েছিল, যে সমাজ থেকে সাহিত্য রচিত হচ্ছে, রাজনৈতিক আন্দোলন বা অর্থনীতির সঞ্চালনের উৎসও সেটিই। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার পর পর্যন্ত দেশের চলমান ইতিহাসে তিনি ছিলেন রাজপথে। আনিসুজ্জামানের গবেষক ও কর্মিসত্তা এভাবে মিশে যায়। ছড়িয়ে পড়ে তাঁর লেখার বিষয়। এ বই ইতিহাস, সমাজ, সংস্কৃতি ও সাহিত্য নিয়ে তাঁর বৈচিত্র্যপূর্ণ ভাবনার এক সারসংকলন।
আনিসুজ্জামান
আনিসুজ্জামান (১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭ - ১৪ মে ২০২০) ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ, লেখক ও জাতীয় অধ্যাপক। তিনি ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইমেরিটাস অধ্যাপক ছিলেন। ভাষা আন্দোলন (১৯৫২), উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান (১৯৬৯), এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে ‘মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য’, ‘আমার একাত্তর’, এবং ’সোশ্যাল এস্পেক্টস অব এন্ডোজেনাস ইন্টেলেকচুয়াল ক্রিয়েটিভিটি’। প্রবন্ধ গবেষণায় অবদানের জন্য তিনি ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে একুশে পদক, ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার, এবং ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ পুরস্কার লাভ করেন।