বহু কষ্টে স্কুলের হেড স্যারের কাছ থেকে ছুটি মঞ্জর করে নেয় নুবায়ের। বুক ভরা আশা আর দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে সে পৌঁছে যায় তাদের গ্রামের দাদার জমিদার বাড়িতে। নুবায়েরকে কোলে নিয়ে তার মা-বাবা যে শহরমুখী হয়েছিল বহু বছর আগে তারপর আর এ জমিদার বাড়িতে আসেনি। একসময়ের লােকজনের কোলাহলে মুখরিত জমিদার বাড়িটি আজ পরিত্যক্ত। দাদার জমিদার বাড়িটি একনজর দেখে নিয়ে ভালাে লাগে নুবায়েরের। বাড়ির বিশালতা তাকে মুগ্ধ করে। মনে মনে অনুতপ্ত হয় এই ভেবে যে কেন সে এখানে আগে আসেনি। বাড়ির রুগ্ন দশা আর এখানে ওখানে গড়ে ওঠা ঝােপঝাড় তার মনের আনন্দকে এতটুকু ম্লান করতে পারেনি। জমিদার বাড়িতে সময় কাটতে থাকে তাদের। জমিদার বাড়ির কেয়ারটেকার জগলু মিয়ার আতিথেয়তায় তারা যখন অর্থ তখন লােকটির প্রতি সন্দেহের পাল্লা ভারি হতে থাকে নবায়েরের। লােকটির মৃতমানুষের মতাে চোখের দৃষ্টি তার ভিতর ভয়ের জন্য দেয়। উচছুঙ্খল কুকুরগুলোেও তার যন্ত্রণায় নতুন মাত্রা যােগ করে। নুবায়ের বুঝতে পারে তার দাদার জমিদার বাড়িটি আজ ভুতুড়েপল্লিতে পরিণত হয়েছে। বাড়ির এখানে ওখানে ছড়িয়ে আছে শুধু রহস্য । ভয় আর আতংক। তাদের পুরাে পরিবারটি যখন ভয়ে আতংকে কোণঠাসা। নবায়ের তখন মনে মনে সাহসী হয়ে ওঠে। এদিকে ভয়ংকর শক্তিশালী ভূত লয় প্রতিশােধ নিতে উঠেপড়ে লাগে। একসময় ভয়ংকর ভূত লমুর মুখােমুখি হয় নুবায়ের। সে প্রাণে বাচতে পারবে কিনা জানে না । তবে বেচে থাকার জন্য সে ছটফট করতে থাকে। প্রতিটি ক্ষণ, প্রতিটি মুহূর্ত নুবায়েরকে মৃত্যু যন্ত্রণায় ঘিরে থাকে ।
জিয়ন খান
জিয়ন খান পৈতৃক নিবাস কিশােরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলায়। শৈশব ও কৈশােরের দিনগুলাে কাটিয়েছেন নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায়। এরপর থিতু হয়েছেন ময়মনসিংহ শহরে। তিনি কিশােরগঞ্জের সরকারি গুরুদয়াল কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ময়মনসিংহের আনন্দ মােহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে উদ্ভিদ বিজ্ঞানের উপর বিএসসি (অনার্স) ও এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। পেশা হিসেবে নিয়েছেন কলেজের শিক্ষকতাকে। ময়মনসিংহ শহরে একটি বেসরকারি কলেজে কর্মরত আছেন। লেখালেখি তার নেশা। ইতােপূর্বে দৈনিক সমকাল, দৈনিক আজকের কাগজ, দৈনিক ডেসটিনি-সহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় তার অসংখ্য লেখা প্রকাশিত হয়েছে। ২০০৯ সালে একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় প্রথম উপন্যাস। এরপর থেকে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। প্রশংসা কুড়িয়েছেন, পেয়েছেন অগণিত পাঠকের ভালােবাসা। সকলের সহযােগিতা থাকলে এগিয়ে যেতে চান অনেক দূর। স্বপ্ন দেখেন নতুন নতুন সৃষ্টির মাঝে বেঁচে থাকতে।