ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ লালনদর্শন মানে লোকোত্তরের মহৎজ্ঞান। লোক ও লোকোত্তরের মূল পার্থক্য না জানলে লালন মোটেও বোধগম্য হয় না। লালনদর্শন তাই লোকদর্শন নয় লোকোত্তরদর্শন। ‘লা’ বা ‘না’ কে যিনি লয়েছেন তিনিই লালন। সুতরাং ‘লা’ কে লওয়ার মধ্যে নিহিত আছে শাঁইজির লোকোত্তরদর্শনের সারমর্ম তথা লালনধর্ম। লালন শাঁইজি স্থানকালে আবদ্ধ নন। তিনি সর্বকালীন ও সর্বজনীন। তাই প্রচলিত রাজা বাদশাদের ইতিহাসের মধ্যে শাঁই লালন নেই। তাঁকে নিয়ে যারা ইতিহাস বা জীবনীচর্চা করে তারাও লালনভাব থেকে বহুদূরে ছিটকে পড়েছে। এ প্রথম লোকোত্তরদর্শনের শুদ্ধ আলোকে ফকির লালন শাহকে প্রচলিত সব ধারণাতন্ত্রের বাইরে এনে দাঁড় করালেন কবি আবদেল মাননান।ভ লোকেরা গুপ্তসুপ্ত যে লালনকে এতোদিন খোঁজেনি মাননান সে দুর্গম পথ ধরে এগিয়েছেন। কেবল বইপত্রের মধ্যে লালনচর্চার সীমা ভুলেও তিনি টানেননি। লালন শাহের ভাষাবাক্য ধরে ধরে দেখিয়েছেন তাঁর মনাতীত অনামক সত্তার আড়ালগুলো। লালনদর্শনের মূলভিত্ত জন্মান্তরবাদ, আধ্যাত্মবাদ, গুরুবাদ, সার্বক্ষণিক ধ্যান ও রূপক ভাষার ব্যাখ্যা যেমন এতে ছেঁকে তুলেছেন তেমনই এ অঞ্চলে হাজারো বছরের প্রবহমান লোকোত্তরচর্চাকেও একীভূত করেন লালন ঘরানায়।