জুয়েলের হাতে ড্রেসিং করা। পোড়া যায়গাটা ড্রেসিং করেছে। এই জন্যই দেরি হয়েছে মনে হয়। জুয়েল লাবনীর সামনে একটা ব্রাউন প্যাকেট ধরে বলল, ইউ আর ওয়েলকাম। লাবনী প্যাকেট খুলল। ভেতরে একটা কালো রঙের ওড়না। এটা তার স্যালোয়ারের সাথে খুব ভাল মত ম্যাচ হবে। তার স্যালোয়ারটা কালো। জুয়েল যদি এখন একটা লাল রঙের ওড়নাও নিয়ে আসত, লাবনী সেটাই পরত। ম্যাচিং এর কথা চিন্তা করত না। লাবনী শুধু ফিসফিস করে বলল, থ্যাংকস জুয়েল। থ্যাংকস দিতে হবে না বলেই তো আগেভাগে বললাম ইউ আর ওয়েলকাম। ওড়না গায়ে দেও। নাকি ঈদের দিন পরবে বলে রেখে দেবে? লাবনী ওড়না গায়ে দিতে দিতে বলল, আচ্ছা তুমি এভাবে কালার ম্যাচ করালে কিভাবে? তুমি ভুলে যাচ্ছ লাবনী, আমি একজন ডিজাইনার। কালার আমি ম্যাচ করাতে না পারলে কে পারবে? এবার বল কি চাও। বলব না। কেন? তুমি দেবে না। কে বলল দেব না? তুমি বলেছ। আমি? আমি কখন বললাম? তোমার চেহারার রঙ চেঞ্জ হয়ে গেছে। আমি একজন ডিজাইনার। আমি রঙ চিনি। রঙ আমার সাথে কথা বলে। তোমার চেহারার রঙ বলছে তুমি এখন আমাকে এড়াতে চাইছ। হ্যা, চাইলে হয়তো দেবে। কিন্তু সেটা হবে ভিখারিকে ভিক্ষা দেবার মত। তোমার গায়ের আগুন নেভানোর জন্য আমি হাত পুড়িয়েছি। এই পোড়া হাতে আমি ভিক্ষা নেব না। সো, আমি কি চাই সেটা আর বলছি না। তুমি বল জুয়েল। আমি দেব। খুশি হয়েই দেব। জুয়েল লাবনীর কাঁধে হাত রাখল। লাবনীর চেহারা শক্ত হয়ে আছে। তার ঠোট কাপছে। লাবনী কিছু একটা বলতে চাইছে। মুখে কথা আসছে না। জুয়েল এবার লাবণীর ঠোটে একটা আঙুল রেখে গম্ভীর গলায় ডাকল, লাবনী। লাবণী জবার দিল না। সে তাকিয়ে আছে জুয়েলের চোখের দিকে। জুয়েল যখন আর একপা এগিয়ে এলো ততক্ষনে লাবণীর নিশ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। লাবণীর গালে আঙুল বুলিয়ে জুয়েল ফিসফিস করে বলল, তোমারে করিব পান, অ-নামিকা, শত কামনায়, ভৃঙ্গারে, গোলাসে কভু, কভু পেয়ালায়!
মারুফ রেহমান
মারুফ রেহমান একজন লেখক। পত্রিকা, রেডিও, টেলিভিশন থেকে শুরু করে ক্ষুদে বার্তা (sms), বড় বার্তা (e-mail)... যেখানে লেখার সুযােগ পান, সেখানেই তিনি লেখেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক রিয়ালিটি টিভি শাে কে হতে চায় কোটিপতি’র ক্রিয়েটিভ টিমে ছিলেন। দেশ টিভিতে তার গ্রন্থনা ও পরিকল্পনায় ২০০৯ থেকে প্রচারিত হয়েছে ফান শাে "দেশ ই গল্প"।