আল্লাহর বান্দাদের তাওহীদের কালিমা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ । বাক্যটি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, এটি উচ্চারণের সাথে সাথে পাল্টে যায় ব্যক্তির জীবনদর্শন,লাইফস্টাইল,রুচিবোধ-সহ সবকিছুই। এর ভিত্তিতে নির্ধারণ হয় ভুল-সঠিক, হালাল-হারাম নির্ণয়ের মানদণ্ড। বান্দা এই কালিমাকে সমুন্নত করতে নিজ জীবন বিলিয়ে দিতেও কার্পণ্য করেন না। আল্লাহ এমন কী মর্ম লুকিয়ে রেখেছেন এ বাক্যে ! যার জন্য মুমিনগণ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতেও প্রস্তুত।
কালিমার দাবি মানলেই মুমিন জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। শুধু তাই-ই না, আখিরাতের ময়দানে সবচেয়ে বেশি ভারীও হবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ । জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়া ঈমানকে নবায়ন করতে রাসূল (সাঃ) আদেশ দিয়েছেন বারবার কালিমার চর্চা করতে। তাই গুরুত্বপূর্ণ এই বাক্য গভীরভাবে অনুধাবন করা বেশ জরুরী। কিন্তু এর মূলভাব বোঝা নিয়ে আমাদের বেশ কমতি রয়েছে । ৬৫০ বছর পূর্বে প্রখ্যাত ইমাম ইবনু রজব হাম্বলি (রহিঃ) এ বিষয়ে রচনা করেছেন কালজয়ী এক পুস্তিকা। যেখানে অল্প কথায় ভেঙ্গে ভেঙ্গে কুরআন ও হাদীসের আলোকে উপস্থাপন করেছেন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর মর্মকথা।
শাইখ জিয়াউর রহমান মুন্সি (হাফিঃ)-এর অনুবাদে বইটি হয়ে উঠেছে আরো বেশি সহজবোধ্য। আমরা চাই, অফিস, বাসা কিংবা ভ্রমণেও আপনার সঙ্গী হোক গুরুত্বপূর্ণ এই বইটি। তাই আনা হয়েছে এক ব্যতিক্রমী সাইজে, যাকে বলা যেতে পারে মুঠোবই।
ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী
ইমাম ইবনে রজব জন্মগ্রহণ করেন বাগদাদে ১৩৩৫ খ্রিস্টাব্দে (৭৩৬ হিজরি)। তার দাদা ছিলেন একজন ধর্মতত্ত্ববিদ, ইসলামী শাস্ত্রের বিশিষ্ট বিদ্বান, বিশেষ করে হাদিস শাস্ত্রের। তার বাবাও বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং বহু পণ্ডিতগণে কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। তার বয়স যখন পাঁচ, ইবনে রজবের পরিবার দামেস্কে স্থানান্তরিত হয়, তখন তিনি জেরুজালেম সফর করেন এবং সেখানে আল-আলা'ঈর কাছে জ্ঞানার্জন করেন। এরপর তিনি বাগদাদে যান এবং সেখান থেকে মক্কা গমন করেন। মক্কায় তার পিতা তার শিক্ষার জন্য সু-ব্যবস্থা করে রাখেন। এরপর তিনি মিশর সফর করেন এবং এরপর আবার দামেস্কে ফিরে যান, সেখানে তিনি ছাত্রদের শিক্ষাদান শুরু করেন। তিনি ইবনে আন-নাকীব (মৃত্যু ৭৬৯ হিজরি), আস সুবকি, আল ইরাকি (৮০৬ হিজরি), মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল আল খাব্বাজ এবং প্রমুখ বিদ্বানের কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি যুগশ্রেষ্ঠ 'আলিমে দ্বীন ইবনে কায়্যিম আল যাওজিয়্যাহ রহঃ এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার কাছে অধ্যয়ন করেন। ইমাম আন-নববী রহঃ কর্তৃক রচিত প্রসিদ্ধ গ্রন্থ "চল্লিশ হাদীছ" এর একটি বৃহৎ ব্যাখ্যা (শরাহ) ইবনে রজব রচনা করেছিলেন (জামি' আল-উলুম ওয়াল হিকাম) যা আজ পর্যন্ত চল্লিশ হাদীছের শ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যা গ্রন্থ হিসেবে সমাদৃত হয়ে আসছে। জীবনের শেষ দিকে তিনি শ্রেষ্ঠতম হাদীছ গ্রন্থ ছহীহ আল-বুখারীর ব্যাখ্যা রচনা শুরু করেন কিন্তু "জানাজার সালাত অধ্যায়ে" পৌঁছার আগেই মৃত্যু বরণ করেন। তিনি সেই গ্রন্থের নাম দিয়েছিলেন ফাৎহুল বারী যা পরবর্তীকালে দার ইবনে জাওযী থেকে ৭ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। ইবনে রজবের মৃত্যুর ২০ বৎসর পর ইবনে হাজার আস্কলানী রহঃ ছহীহ আল-বুখারীর ব্যাখ্যা রচনা শুরু করেন এবং ইবনে রজব আল হাম্বালি রহঃ এর সম্মানে গ্রন্থের শিরোনাম দেন ফাতহুল বারী যেটা ছহীহ আল বুখারীর শ্রেষ্ঠতম ব্যাখ্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
Title :
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর মর্মকথা (পেপারব্যাক)