কূটনীতি ব্যবহারের ইতিহাস সুপ্রাচীন ও সুদীর্ঘ। সম্ভবত মানুষ সংঘবদ্ধ বা সমাজবদ্ধ হবার পর থেকেই কূটনীতির ব্যবহার শুরু হয়ে যায়। এই গ্রন্থে ঝানু কূটনীতিক হ্যারল্ড নিকোলসন দেখিয়েছেন, গ্রিক পুরাণের দেবতা বা অপদেবতা হার্মিসকে পৌরাণিক পৃথিবীর প্রথম কূটনীতিক বলা যায়। আমাদের ভারতবর্ষের পুরাণ ও ইতিহাস মহাভারত-এ ধৃতরাষ্ট্রের মন্ত্রী সঞ্জয় কূটনীতিক হিসেবে বিরাট ভূমিকা পালন করেছেন। কৌরবদের হয়ে তিনি পাণ্ডবদের সঙ্গে একাধিকবার দরবার করেন।
হ্যারল্ড নিকোলসন বৃটিশ কূটনীতিক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘকাল একটা ঝঞ্ঝাবিক্ষুদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনি বার্লিনে বৃটিশ দূতাবাসের একটি জরুরী শাখা তথা দপ্তরে প্রধান দায়িত্ব পালন করেন। তাই, এই গ্রন্থের আলোচ্য বিষয় তাঁর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতালব্ধ।
তাছাড়া তিনি আর্নেস্ট সার্টৌর’র Guide to Diplomatic Practice থেকে উদারভাবে সাহায্য নিয়েছেন। অপিচ, কাজে লাগিয়েছেন মি. ক্যাম্বন, স্যার আয়ার কুট প্রমুখের মতো প্রথিতযশা কূটনীতিকদের কর্মকাণ্ড ও সাফল্যের উদাহরণ।
হ্যারল্ড নিকোলসন-এর Diplomacy শিরোনামে এই গ্রন্থের বিষয়বস্তু কুটনীতির প্রথম পাঠ হিসেবে ছাত্র ও কর্মরত কূটনীতিকরা বহুকাল ব্যবহার করে আসছেন। মি. নিকোলসন শুধু কূটনীতির ইতিহাস ও বিকাশের ধারা বর্ণনা করেননি। তিনি ইউরোপ, আমেরিকা এবং প্রাচ্যের কূটনীতির ধরন বিষয়ে সবিস্তার আলোচনা করেছেন। সবশেষে কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডে সাফল্যের চাবিকাঠি কী হতে পারে সে বিষয়ে স্বচ্ছ ইংগিত রেখেছেন। তাঁর কাছে মনে হয়েছে, কূটনৈতিক ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করতে হলে
এই গ্রন্থে কূটনীতির উদ্ভব ও বিকাশের ইতিহাস যেমন মালোচনা করা হয়েছে, তেমনি দেখানো হয়েছে কেমন করে পুরাতন কূটনীতির রূপান্তর এবং আধুনিকায়ন ঘটে । সঙ্গে সঙ্গে উন্মোচন করা হয়েছে ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশের স্বকীয় কূটনৈতিক পথের স্বরূপ।