ফ্ল্যাপে লিখা কথা মাঠ থেকে মাঠে, জলাভূমি, নদী কিংবা পুকুরে-সব খানেই দারুণ সম্ভাবনা খুঁজে পান শাইখ সিরাজ। খুঁজে পান প্রচলিত ও প্রথগত ব্যবস্থার অসংলগ্ন জায়গাগুলো। খাদ্য নিরাপত্তা প্রশ্নে বাংলাদেশ আজ অনেকটাই তৃপ্ত। কিন্তু এই তৃপ্তি অক্ষুণ্ন রাখার জন্য করণীয় অনেক। তাঁর তাগিদ ঠিক এখানেই। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান তিনটি খাতেই রয়েছে কৃষিনির্ভর গ্রামবাংলা তথা কৃষকের অবদান, বারবার তিনি সেটা ধরিয়ে দিচ্ছেন দেশের নীতিনির্ধারকদের । এক . কৃষি, দু্ই, গার্মেন্টস সেক্টর, তিন. রেমিটেন্স। গার্মেন্টস শিল্পের ৩৫ লাখ শ্রমিকের সবাই গ্রাম থেকে আসা, প্রবাসে অবস্থানকারী প্রায় ৭৫ লাখ মানুষের ৯৯ ভাগেরও বেশি গ্রামীণ কৃষকের সন্তান। আর কৃষি তো কৃষিই, বহুকাল ধরেই যা শিকার হয়েছে অবহেলা আর উপেক্ষার। বিয়ষগুলো খুব স্পষ্ট হওয়ার পরও আমাদের অর্থনীতির বড় অংশটির ভোগদখলকারী শহর-নগর। বিষয়গুলো শাইখ সিরাজ তাঁর কৃষি কার্যক্রম ‘চ্যানেল আই’ এর ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’, ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষের ডাক’, ‘বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘কৃষি দিবানিশি’ ছাড়াও বিভিন্ন টেলিভিশন অনুষ্ঠান, পত্রপত্রিকা লেখালেখির মাধ্যমে নিরন্তর তুলে ধরেন। তাঁর নিরলস কর্মসাধনায় পাল্টে গেছে গণমাধ্যম ও নাগরিক চিন্তার ধারা। বর্তমান গ্রন্থে উঠে এসেছে তাঁর গত এক বছরের সরেজমিন অনুসন্ধান, যা অর্থনীতিবিদ, কৃষি গবেষক, বিশ্লেষক ও চিন্তাবিদদের নতুন কিছু চালচিত্রের সন্ধান দেবে। খোরাক জোগাবে উন্নয়নচিন্তার।
কৃষি ও উন্নয়নচিন্তা বইয়ের সূচিপত্রঃ * পৃথকভাবে পেশ করা হোক কৃষি বাজেট * সৌখিন কবুতর পালন ও বাণিজ্যিক সম্ভাবনা * সাড়ে তিন বছরেও স্বাভাবিক জীবন পায়নি আইলাবিধ্বস্ত কয়বার মানুষ * হায় কপোতাক্ষ * রাবারচাষ : পাহাড়ে ভূমিহীন পুনর্বাসন * পাট : কতদূর এগোল কৃষক? * পার্থেনিয়াম : কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তার নীরব ঘাতক * বাংলাদেশে জারবেরা ফুল : কুঁড়ি থেকে প্রস্ফুটিত এক অবিশ্বাস * বীজবাণিজ্য বাড়ছে, বাড়ছে অবিশ্বাস * চিলি’স আইল্যান্ড : স্বপ্নের সংযোগ * মাছচাষে ষোলআনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম ‘ষোলটাকা’ * দূষণে বিপর্যস্ত কর্ণফুলি * ওমানের নার্সারি ও মেন্দুজশিল্পে প্রবাসী বাঙালিরা্ * স্যান্ডবার ক্রপ : পাল্টে যাচ্ছে উত্তরের চরগুলো * তাক ডুমাডুম বাজে ঢোল * পোলট্রি খাতের হতাশা : কেমন আছে সোনালি মুরগি? * কৃষি উৎপাদনে সরকার সফল, কিন্তু ব্যর্থ বাজার * সংসদীয় গণতন্ত্র ও গণমাধ্য * আলোছায়ার শ্বেতপত্র * প্রযুক্তিগুলো মাঠে যাচ্ছে না কার স্বার্থে? * কৃষিতে বিষের আগ্রাসন * কেঁচো কম্পোস্টের গ্রাম : ঝিনাইদহের মহেশ্বরচাঁদা * বিষয় : বিশ্ব খাদ্য দিবস * ভবিষ্যতের কৃষি ও চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গ * দুধেভাতে থাকার স্বপ্নটুকুও কি থাকবে না? * সাংবাদিকতা, উন্নয়ন সাংবাদিকতা * মধু উৎপাদন ও মৌছাষিদের সংকট * কৃষি সাফল্যে এগিয়ে যাচ্ছে চরাঞ্চল * ভাটি অঞ্চলের সাফল্য * অ্যালবাম
শাইখ সিরাজ
কৃষি সাংবাদিকতায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় পুরস্কার জাতিসংঘের এ এইচ বুর্মা অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের জন্ম চাঁদপুরে, ১৯৫৬ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ভূগােলে। ছাত্রজীবনেই সম্পৃক্ত হন গণমাধ্যমের বিভিন্ন শাখার সঙ্গে। টেলিভিশন জীবন শুরু করেন সত্তরের দশকের শেষ ভাগে। ১৯৮২ সাল থেকে একটানা ১৪ বছর পরিকল্পনা ও উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান মাটি ও মানুষ। ১৯৯৫ সালে ৩৯ বছর বয়সে উন্নয়ন সাংবাদিকতার জন্য পান সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশে পদক’ । ১৯৯৬ সালে তিনি অন্যতম অংশীদার হিসেবে দেশের সবচেয়ে বড় অডিও ভিজুয়াল সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৯ সালে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল আই প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ২০০৪ সাল থেকে চ্যানেল আইয়ে শুরু করেন কৃষি ও কৃষকের জন্য গণমাধ্যম কার্যক্রম হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ এবং ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষের ডাক’ । ২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে তার উপস্থাপিত ও পরিচালিত অনুষ্ঠান কৃষি দিবানিশি শুরু হয়। একইসঙ্গে তিনি মুদ্রণমাধ্যমেও কৃষি সাংবাদিকতা অব্যাহত রেখেছেন। নব্বইয়ের দশক থেকেই দেশের পত্রপত্রিকা ও জার্নালে অবিরাম লিখে চলেছেন কৃষি ও গণমাধ্যমবিষয়ক নিবন্ধ। জাতীয় পর্যায়ে এ পর্যন্ত পুরস্কার পেয়েছেন অর্ধশতাধিক। এ ছাড়াও তিনি অনেক আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অশােকা ফাউন্ডেশনের তিনি একজন ফেলাে দেশের প্রথম ডিজিটাল স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের তিনি পরিচালক ও বার্তাপ্রধান। শাইখ সিরাজ কৃষি ও গণমাধ্যম বিষয়ে ১০টিরও বেশি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর জীবন, কর্ম ও অবদান বিষয়ে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের অর্ধশতাধিক খ্যাতিমান লেখকের লেখা নিবন্ধ নিয়ে 'সান অব দ্য সয়েল’ নামের সংকলন। কৃষি সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে তিনি স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন।