শহর কিংবা উনশহরের গল্প' (২০১৬)- এটাই ছিলো এই কথাসাহিত্যিকের এ অবধি সর্বশেষ নতুন গল্পের বই। উপন্যাস- বয়ন, পালাটিয়া বা নদীধারা আবাসিক এলাকা'র নাম বললে আলাদা করে তাঁর নাম আর বলতে হয় না। তাঁর গল্পভাবনায় ক্যারেক্টর এন্ড প্লট কতটা নিরীক্ষাধর্মী তা সহসাই অনুমান করা যায়। তীক্ষ্ম পরিসমাপ্তি, পরিমিত বোধের পরিধি, লক্ষ্যভেদী কিন্তু সাবলীল বয়ানকৌশলের পারঙ্গমতা তাঁকে কথাসাহিত্যিক হিসেবে এক অনন্য মাত্রায় উত্তীর্ণ করেছে। ছোটগল্প সর্বদাই এক ব্যালান্স বীমের ওপরে দাঁড়িয়ে থাকে। অমনোযোগ, অসংযম, বিষয়ের বাইরে অতি বাচালতা তার সহ্য হয় না। ছোটগল্পকে খানিকটা জলের মতও বলা যেতে পারে। জলে সামান্য নুন মেশাও তো সে স্যালাইন, চিনি মেশালে সে শরবত। তখন জল আর জল থাকে কই? ছোটগল্পও তেমনটিই। কিন্তু প্রশ্ন হলো গল্পকে 'গল্প' রাখতে পারে কজন? বেশির ভাগেরই গল্প- হয় ঘটনার সরল বিবরণ, নয়তো উপন্যাসের চারাগাছ হয়ে পড়ে থাকে সাহিত্যের বেদিমূলে। পাপড়ি রহমান গল্পকে 'গল্প' হিসেবেই বুনে যান ও সে বয়ন-কৌশল অন্যকে দেখাতে পারা স্বল্পপ্রজ গল্পকারদের একজন তিনি। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সুলেখক পাপড়ি রহমানের একেবারেই ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকের দশটি নতুন গল্পের সমাহার গল্পগ্রন্থ 'করুণ ক্যাসিনো'। প্রতিটি গল্প আলাদা করে বুঝিয়ে দেয় বিষয়ের বিস্ময় কতটা শিকড়স্পর্শী, শব্দের কাঁটায় বাক্যের বুনন কতটা মসৃণ, মেদহীন গল্পের শরীর নির্মানে ভাস্কর কতটা দক্ষ। জলধি আনন্দিত পাপড়ি রহমানের দশটি আনকোরা গল্প নিয়ে এই গ্রন্থটি প্রকাশ করতে পেরে। নাহিদা আশরাফী