বর্তমান যুগকে প্রযুক্তি, জ্ঞান বিজ্ঞান ও বস্তুবাদের ভিত্তিতে অনেক উন্নত, আধুনিক আপনি বলতে পারেন। কিন্তু আত্মিক শুদ্ধতা, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা যে চরম বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, তা আর ব্যাখ্যা করে বলা লাগবে না।
নারী অধিকার আজকে আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। সবাই সোচ্চার। তারপরও নারী নির্যাতন ও নারীর প্রতি সহিংসতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কেন? কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ার কারণে স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে দিচ্ছে, কন্যা সন্তান প্রসব করলে তালাকের হুমকি দিচ্ছে, এমন ঘটনা হরহামেশাই আমাদেরকে শুনতে হচ্ছে। একাধিক কন্যা সন্তানের জন্মে অনেক পিতার মধ্যেই এক প্রকার চাপা কষ্টও লক্ষ্য করা যায় ।
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, নিশ্চয় তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের আচার-আচরণ বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে অনুকরণ করবে। এমনকি তারা যদি দব্বের গর্তেও প্রবেশ করে থাকে, তাহলে তোমরাও এতে তাদের অনুকরণ করবে। [সহীহ বুখারী : ৩০৮]
জাহেলী যুগের কথা আমরা জানি, নারীর প্রতি অবিচার এতটাই চরমে পৌঁছে ছিল যে, পিতা নিজের কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দিত। কন্যা সন্তানের প্রতি যে আচরণ আমরা সমাজে দেখছি, তা কি হাদীসে বর্ণিত সেই পঁচন ও অশুভ প্রত্যাবর্তনেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে?
অন্তত পুত্র সন্তানের জন্মে আমরা যতটা খুশি হই, কন্যা সন্তানের বেলায় কি ততটা খুশি হতে পারি? এই অসুস্থ মানসিকতার প্রতিকার না করে কি নারীর প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা রোধ করা সম্ভব? তা ছাড়া রাসূলুল্লাহ সা. কন্যা সন্তান প্রতিপালনে যে মহা সুসংবাদ দিয়েছেন, সেগুলো জানলে কন্যা সন্তানের বাবারা নিজেদেরকে সত্যিই গর্বিত মনে করবেন। আর যারা এখনও এই নেয়ামত লাভে ধন্য হয়নি, তারা নিশ্চয়ই কন্যা সন্তানের আশায় বুক বাঁধবেন।