ফ্ল্যাপে লিখা কথা আমিনুর রহমান সুলতান আশির দশকের কবি। তবে নিরুদ্ধ স্রোতের কবি নন। অনেক সতীথের মতো থেমে যান নি। চলেছেন স্বভাবজ রুপান্তরে। জলের সিঁড়িতে পা রেখেছিলেন, দেখেছেন জলও বরফ হয়, হয়ে ওঠে শৃঙ্গ-হিমালয়। পা-রাখলেই সিঁড়ি অতিক্রমণের প্রশ্ন। পর্তারোহীর আর কোনো বিকল্প নেই। তাই শৃঙ্গারোহণের জন্যই তো এই বদল। জীবন ও শিল্পের কারবারে দক্ষিণা তো এক ধরেণের নিয়তি। কবিকে বলতেই হয় ,ফিরে যাও দক্ষিণা চেয়ো না। জলে সিঁড়ি থাকলেও বরফে বিলীন; এর কারণও রূপান্তর। তাই আবারও প্রস্তুতি করে নেয়া নতুন সিঁড়ি । বালির অসংখ্য চরায় স্বপ্ন দেখতে গেলেও আছে তিমির,চোরাবালি তো আছেই। জীবনভর যে নদী অন্বেষণ ,তারই সৃষ্ট চরের তিমিরে ডুবে যায় নদী। কারণ মুখোশটি মৃন্ময়। মৃন্ময় মুখোশ বলেই তো তীব্র সৃষ্টি জননাকাঙ্খা। কিন্তু বরফ তো গলবেই, আবারও সিঁড়ি অদৃশ্য হবে, পা রাখাটাও আর সাজবে না। অতএব পানসি সাজানো। আমাদের ঐতিহ্য ,ভূগোল, প্রবংশগতভাবে রূপকথার রাজা-রাজড়ার প্রস্তুতি পানসি। পানসি কি যায়? এই পবে এ প্রশ্নও মীমাংসিত কবি-র কাছে। নতুন উদ্দামতার যে রূপান্তর ও শক্তি সেটি একান্তই কবির নিজের প্রচেষ্টাধ ‘সাঁতার’ । হ্যাঁ , আমিনুর রহমান সুলতান, পানসি যাবে না সাঁতার যাবে এই গ্রন্থে রূপান্তরিত, নতুন ও সমকালীন এই অথে , এই গ্রন্থেই লক্ষ্য করা যাবে আঞ্চলিকতার সঙ্গে আন্তজাতিকতার সেতু বন্ধন। আছে আবহমান লোকসংস্কৃতির বিস্তার মননে ,চিন্তায় ও সভ্যতায় ক্রমবিকাশে। সাধুর কর এসবের পরিণত ফসল।
সূচিপত্র * জলের সিঁড়িতে পা * ফিরে যাও দক্ষিণা চেয়েও না * চরের তিমিরে ডুবে যায় নদী * মৃন্ময় মুখোশ * পানসি যাবে না সাঁতার যাবে * একুশের আলো * সাধুর কর * ঘরবারান্দার আলোআঁধার কাব্যনাটক * ভূমিকার পরিবরতে
আমিনুর রহমান সুলতান
আমিনুর রহমান সুলতানের জন্ম ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৬৪, ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জের খৈরাটি গ্রামে। তিনি বাংলা একাডেমির উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত। তাঁর প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে "সিজন ও মাহির প্রভাত ফেরি", "সকালবেলার পাখি", "ছোটদের বঙ্গবন্ধু", "সোমেন চন্দের ছেলেবেলা", "বাড়ির নাম ৩২ নম্বর", এবং "ভাষা আন্দোলনের কিশোর ইতিহাস"। কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে "জলের সিঁড়িতে পা", "পানসি যাবে না সাঁতার যাবে", "সাধুর কর", এবং "লোকগল্পের কবিতা"। তাঁর গবেষণা ও প্রবন্ধগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত "বাংলাদেশের কবিতা ও উপন্যাস: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা" এবং "শালিহর গণহত্যা"। তিনি ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব সাহিত্য পুরস্কার (২০১২), হাসান হাফিজুর রহমান সাময়িকী পুরস্কার (২০১১), এবং কবিতা সংক্রান্তি সম্মাননা (২০০৭) সহ বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন।