খালেদ হােসাইন। জন্ম: ১৯৬৪। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়। মা: সুফিয়া খাতুন। বাবা: গােলজার
হােসাইন।
ছেলেবেলায় বড়বােনের হাত ধরে বেড়াতে যেতেন। পরীদের বাড়ি। আকাশে পুঞ্জীভূত মেঘের সাদায় রবীন্দ্রনাথকে দেখে বিহ্বল হয়ে পড়তেন, কৈশােরেই। বুকে বেদনার বীজ বুনে দিয়েছিলেন জীবনানন্দ দাশ। মা কবিতা লিখতেন, আর স্বপ্ন দেখতেন। একটা স্বপ্ন ছিল, এই ছেলে কবি হবে। খালেদ হেসাইনের কবিতার জগতটি ক্রমাগত রহস্যময় হয়ে উঠছে। তিন দশক পরিব্যাপ্ত কাব্যসাধনার ফসল। ইলা মিত্র ও অন্যান্য কবিতা' (২০০০), ‘শিকারযাত্রার আয়ােজন' (২০০৫) ও জলছবির ক্যানভাস (২০০৬)। পাতাদের সংসার (২০০৭), এক দুপুরের। ঢেউ (২০০৮)। সংখ্যা খুব বেশি নয়, তবে বৈচিত্রভাস্বর। ব্যক্তিগত রােমান্টিকতা প্রসারিত হয়ে স্বদেশ-স্বকাল ছাপিয়ে সর্বজনীন ও সার্বভৌম হয়ে উঠছে। কবিতার অন্তর্গত শিরা-উপশিরার রক্তবদলই কেবল নয়, প্রাকরণিক নানা নিরীক্ষায়ও তিনি কবিতাকে স্বতন্ত্র করে তুলেছেন। খালেদ হােসাইনের কবিতাকে চেনা যায়। লেখকের ধাতটা আলাদা, কবিতার জাতটাও আলাদা। ভালােবেসে বিয়ে করেছেন আইরীন পারভীনকে, যিনি একটি কলেজে শিক্ষক। মেয়ের নাম রােদেলা। সুকৃতি, ছেলে অভীতি রৌদ্র। খালেদ হােসাইনের নেশা ভ্রমণ, স্বভাবে ঘরকুনে। পেশায় তিনি বাংলা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।
জীবনানন্দ দাশ
জন্ম : বরিশাল, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৯। আদি নিবাস গাওপাড়া, গ্রাম- বিক্রমপুর। পিতা বরিশাল ব্রজমােহন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সত্যানন্দ দাশ। বরিশাল ব্রজমােহন স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক (১৯১৫), বরিশাল ব্রজমােহন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আই.এ (১৯১৭) সালে । কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বি.এ (১৯২১) ডিগ্রী লাভ। ১৯২২-১৯২৮-এর কলকাতা সিটি কলেজে, ১৯২৯-এ বাগেরহাট কলেজে ও ১৯২৯-১৯৩০-এ দিল্লীর রামযশ কলেজে অধ্যাপনা। ১৯৩০-এ ঢাকার লাবণ্য গুপ্তের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ। কিছুকাল বেকার জীবন যাপন ইনসিওরেন্স কোম্পানির এজেন্ট হিসেবে কিছুদিন কর্ম সম্পাদন। কিছুকাল ব্যবসা করার পর ১৯৩৫-এ বরিশাল ব্রজমােহন কলেজে অধ্যাপনার চাকরি লাভ। ১৯৪৬ পর্যন্ত এ কলেজে অধ্যাপনা। অতঃপর কলকাতা গমন। ১৯৪৭-এ ‘দৈনিক স্বরাজ’-এর সাহিত্য বিভাগ সম্পাদনা। ১৯৫১-১৯৫২- তে খড়গপুর কলেজে, ১৯৫২ তে বড়িষা কলেজে ও ১৯৫৩ থেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত হাওড়া গার্লস কলেজে অধ্যাপনা।
প্রকাশিত উল্লেখযােগ্য কাব্যগ্রন্থ : 'ঝরা পালক' (১৯২৮), ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি (১৯৩৬), বনলতা সেন' (১৯৪২), সাতটি তারার তিমির' (১৯৪৮), রূপসী বাংলা’ (১৯৫৭) তিনি একজন কথাসাহিত্যিকও। মৃত্যুর পর প্রকাশিত উপন্যাস : মাল্যবান (১৯৭৩), সতীর্থ (১৯৭৪)। গল্প সংকলন : ‘জীবনানন্দ দাশের গল্প’ (১৯৭৯)। জীবনানন্দ দাশের অপ্রকাশিত রচনাবলী খণ্ডে-খণ্ডে প্রকাশিত হয়ে চলেছে। মৃত্যু : কলকাতা, ট্রাম দুর্ঘটনা, ২২ অক্টোবর, ১৯৫৪।