কীর্তিমানদের নিয়ে অনেক কৃতিজন অনেক উন্নতমানের লেখা লিখেছেনপত্র-পত্রিকায় প্রথিতযশা ব্যক্তিদের জন্মদিন মৃত্যুদিনে সাহিত্য সাময়িকীতে তাদের অবদান নিয়ে লেখা বের হয়। তাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই কয়েকজন কৃতিমানের জীবন কথা নিয়ে আমার এই সাহসী প্রচেষ্টা। এমন অনেক কৃতিজন আছেন যারা সমাজকে দিয়ে গেছেন অনেক, আলাে ছড়িয়ে সমাজকে আলােকিত করেছেন কিন্তু তিনি নিজে আধুনিক প্রজন্মের কাছে আলােকিত হতে পারেননি। সে ব্যর্থতার দায় তাঁদের নয়-আমাদের। আধুনিক প্রজন্ম ইন্টারনেট, ফেসবুক নিয়ে গভীর চর্চা করেন কিন্তু অনেকেরই নাগালের মধ্যে এখনাে অক্ষয়কুমার দত্ত, কেশবচন্দ্র সেন, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, মুকুন্দ দাস, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী প্রমুখেরা প্রবেশ করতে পারেননি। সতের বছরের তরুণ শিক্ষক নবযুগের প্রবর্তক বাংলার সক্রেটিস বলে খ্যাত আধুনিক প্রস্তুতি যুগের স্থপতি হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরােজিও প্রযুক্তিবিদ্যায় প্রশিক্ষিত অনেক তরুণের মনােজগতে এখনাে স্থান পাননি। তাঁদেরকে নতুন প্রজন্মের কাছে নিয়ে আসার ইচ্ছাতেই আলােকপ্রাপ্ত কয়েকজন মনীষীকে নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করেছি। যাতে এ সময়ের ডিজিটাল প্রেমীরা বিজ্ঞান শিক্ষার সাথে সাথে আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি-সাহিত্যের ধারক ও বাহকদেরও জেনে নিজেদের পরিপূর্ণ করতে পারেন। এই কীর্তিমানেরা আমাদের সমাজের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের মনােজগতকে কর্ষণ করে তাতেও পরিবর্তন এনেছেন। একুশ শতকে বাস করে এ সময়ের অনেকেই উপলব্ধি করতে পারবেন না চৈতন্যদেব, রাজা রামমােহন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বেগম রােকেয়াকে কত প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে প্রচলিত প্রথার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়েছিল এবং পরিবর্তন আনতে পেরেছিলেন। সুনীতিকুমারের মত ভাষাবিদ, চারণকবি মুকুন্দদাসের মত স্বদেশী আমাদের গর্ব। এঁদের চর্চায় তরুণেরা অনুপ্রাণিত হয়ে জানবে বাঙালি কত সমৃদ্ধ জাতি।
করুণা রানী সাহা
করুণা রানী সাহা অধ্যপনা করেছেন প্রায় তিরিশ বছর। ১৯৭৯ সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক নিয়ােগ লাভ করে তিনি ১৯৮০ সালে সরকারি আযিযুল হক কলেজে বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যােগ দেন। পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, পাবনা, সরকারি আকবর আলী কলেজ, উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ-এ শিক্ষকতা করেন। ২০০৬ সাল থেকে প্রায় তিন বছর সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, পাবনায় অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে ২০০৯ সালে অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে যান। ‘বিবিধ আলােচনা কালােত্তীর্ণ রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশের উপন্যাসে সমাজ ও জীবনের শিল্পরূপ সমাজ ও সংস্কৃতি ‘আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের সাহিত্যে সমাজ ও সমকাল জানা অজানা কথা প্রসঙ্গ প্রকাশিত হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্য পর্যালােচনা, সমাজ, লােকসংস্কৃতি, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্যকর্ম তাঁর লেখার বিষয়বস্তু। লেখালেখি নিয়ে তিনি বিভিন্ন পত্রপত্রিকার সাথে যুক্ত আছেন। সমাজের প্রগতিশীল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে তিনি যুক্ত। অধ্যাপক করুণা রানী সাহার জন্ম সিরাজগঞ্জ শহরে। তিনি পড়াশােনা করেছেন সিরাজগঞ্জের সালেহা ইসাহাক সরকারি গার্লস হাইস্কুল, মুমিনুন্নিসা মহিলা কলেজ (ময়মনসিংহ), আনন্দ মােহন কলেজ ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (মহিলা) ময়মনসিংহে। করুণা রানী সাহার বাবা গােপাল চন্দ্র সাহা, মা গৌরী সাহা। তাঁর স্বামী প্রশাসন ক্যাডারের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি তিন সন্তানের জননী।