নারীবাদি বনাম নারীবাঁদি :
‘সত্যবাদী’ শব্দটায় যেমন কারও সমস্যা থাকার কথা না, ‘নারীবাদী’ শব্দের বেলায়ও তা-ই। কিন্তু সমস্যা হলো, এই শব্দের কতিপয় প্রয়োগকারীকে নিয়ে। কারণ, তাদের কথা ও কাজের মাঝে রয়েছে বিস্তর ফারাক। শিকারকে আকৃষ্ট করতে শিকারি তো কত লোভনীয় ফাঁদই পাতে! একটু গভীরে গিয়ে তাদের দৃষ্টিতে ‘নারী অধিকার’ ‘নারী স্বাধীনতা’র সংজ্ঞা জানতে চান; সদুত্তর মিলবে না। যে উত্তর পাবেন, বিবেক থাকলে ভাববেনওরা তো পানির পেয়ালায় মদ পান করতে চাইছে, মদ!ওরা নিরাপদ ঘরকে খাঁচা অপবাদ দিয়ে নারীকে ঘর থেকে বের করে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়েছে। ওদের রঙিন চিঠির খামের ভেতরে আছে নারীকে ভোগ করার ঘৃণ্য নীলনকশা। দুর্জনের ছলের অভাব হয় না আসলে! নারী হলো শিকড়, যে কিনা আঁকড়ে ধরে রাখে। অঙ্কুরে বিনষ্ট করতে পারলে শিকড় মজবুত হবে না। নারী হলো সূতো, যে কিনা গেঁথে রাখে, বেঁধে রাখে। সূতো কেটে দিলে সুচেরা একা একা ঘর বাঁধতে পারবে না। তাতে ধ্বংস হবে পরিবার, সমাজ তথা গোটা জাতি।
অন্ধ বধির মূক :
মানুষ সৃষ্টিগতভাবে স্বাধীনচেতা বলে অন্যের দৃষ্টিভঙ্গিকে অন্ধের মতো অনুকরণ করাকে নিজের জন্য বোঝা মনে করে। তাই স্রষ্টা থাকার বিষয়ে অমুক বিখ্যাতরা কী বলল, তমুক জ্ঞানীরা কী যুক্তি দেখাল, আপনার কাছে সেসবের মূল্য গোটা একটা শূন্যের সমান; যদি না নিজের সহজ-সরল চিন্তাশক্তি প্রয়োগ করে স্রষ্টাকে খুঁজে পান, যদি না আপনার অন্তরকে আপনি নিজের মতো করে বুঝিয়ে শান্ত করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেন–একজন স্রষ্টা অবশ্যই আছেন। ‘স্রষ্টা থাকা বা না থাকা’র বিতর্কের মঞ্চ থেকে ভারী ভারী যুক্তিতর্ক শুনে আপনার অন্ধকারাচ্ছন্ন অন্তরের ঘরটা আলোকিত হলো কি না, সেটা বোঝা যায় বিতর্ক শোনার পরও যেই আপনি সেই ‘আপনিই’ হয়ে রইলেন। স্রষ্টাকে অন্তর দিয়ে অনুভব করতে পারেন না বলে ‘কেউ নেই’ ভেবে হতাশাগ্রস্ত হন। ক্ষাণিক পরেই আবার ‘হয়তো কেউ একজন আছেন’ ভেবে আশাবাদী হয়ে ওঠেন–যখন দেখেন, জগতের কোনো কিছুর ওপর আপনার একবিন্দুও নিয়ন্ত্রণ নেই।