নিম্ন-মধ্যবিত্ত এই পরিবারটির আশার আলো হয়ে উঠে সৈকত। অভাবের সংসারে পড়ালেখার পাশাপাশি যথাসাধ্য চেষ্টা করে স্ব-উদ্যোগে উপার্জিত অর্থ দিয়ে পরিবারকে সাহায্য করতে। তার অসাধারণ মেধা, প্রজ্ঞা ও উদ্ভাবনী ধারণা এবং নিরলস পরিশ্রম তাকে ও তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধুকে সাফল্যের সিঁড়িতে এগিয়ে নিতে থাকে।
কাননদিঘির প্রকৃতি ও পরিবেশ সৈকতের চিন্তার ব্যপ্তিকে প্রসারিত করে। তার প্রাণশক্তিকে বাড়িয়ে দেয়। কাননদিঘির যে পাড়টায় একসময় সৈকতের পূর্বপুরুষদের বসতভিটা ছিল সেই পাড়েই একটা মনের মতো করে বিদ্যালয় গড়ে তুলবার স্বপ্ন দেখে সৈকত।তার স্বপ্নে সে দেখতে থাকে যে, সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আক্ষরিক অর্থেই মানুষের মতো মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে। তারা হবে প্রকৃত অর্থেই দেশপ্রেমিক মানবিক মানুষ। এই স্বপ্ন পূরণে নিরলসভাবে ওরা পাঁচবন্ধু পরিশ্রম করতে থাকে। এই প্রচেষ্টায় যুক্ত হয় অকাল বৈধব্যে অসহায় হয়ে পড়া অবস্থা থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানো পাঁচবন্ধুর একজন তপনের বড়দিদি শ্যামাঙ্গিনী। নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে শহরের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তি ইয়াকুব তালুকদারের অত্যন্ত আদরের একমাত্র কন্যা রত্না।
সামান্য এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এক মাস্তানের হাতে নির্মমভাবে খুন হয় তপন।তপনকে হারিয়ে অবশিষ্ট চারবন্ধু সীমাহীন শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে। তারপরও ওরা এগিয়ে নিতে থাকে কাননদিঘির পাড়ের বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে। রত্নার বাবার ঘৃণ্য চক্রান্তে এবং খুনি মাস্তানের অপচেষ্টায় সৈকতদেরকেই একসময় তপন হত্যা মামলার আসামি করা হয়। অন্ধ আইনের বিচারে ওদের সাজাও দেওয়া হয়। সেই সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে ব্রত হয় শ্যামাঙ্গিনী ও রত্না। সেইসাথে তারা কাননদিঘির পাড়ে সৈকতের স্বপ্নের বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজকেও এগিয়ে নিতে থাকে।