সাহিত্যকীর্তি গ্রন্থমালা আধুনিক বাংলা কথাসাহিত্যের একটি সিরিজ প্রকাশনা। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের হাত ধরেই আধুনিক বাংলা সাহিত্যে আখ্যায়িকার শুরু, এ-কথা বলা যায়। ১৮৫৪ সালে তিনি কবি কালিদাসের অভিজ্ঞানশকুন্তল নাটকের উপাখ্যানভাগ বাংলায় পরিবেশন করেন। এরপর প্রায় শতবর্ষ ধরে বাংলা কথাসাহিত্যের যে-বিকাশ তার শীর্ষস্থানীয় গ্রন্থগুলেকে পাঠকের কাছে একত্রে তুলে দেওয়ার আকাক্সক্ষা নিয়েই সিরিজটি পরিকল্পিত হয়েছে। সারা বিশ্বের বাংলাভাষীদের কাছে সাহিত্যকীর্তি গ্রন্থমালার ২৪টি বই একসঙ্গে পাওয়া অত্যন্ত খুশির বিষয় হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। আগামীতেও এরকম কিছু গ্রন্থ পাঠকের হাতে তুলে দিতে পারবো বলে আমরা আশা রাখি।
ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (১৮৪৯-১৯১১) জন্ম যদিও বর্ধমানের একটি গ্রামে, সাত মাস থেকে ন বছর বয়স পর্যন্ত তিনি ছিলেন পিতার কর্মস্থল পূর্ণিমায়। ফলে বাংলা ভাষা তাঁর ঠিকমতো রপ্ত হয়নি। কৃষ্ণনগর কলেজে সেভেন্থ ক্লাসে ভর্তি হয়েই যখন বার্ষিক পরীক্ষার মৌখিক পর্বে উপস্থিত হন, তখন শিক্ষক তাঁকে শব শব্দটা বানান করতে বলেন। ইন্দ্রনাথ বলেন: শ ব। এবারে শিক্ষকের প্রশ্ন: কোন শ? ইন্দ্রনাত তখনো শ ষ স-র পার্থক্য করতে শেখেননি, তাই জবাব দেন : শ আর কী! অতঃপর শিক্ষকের জিজ্ঞাসা: শব মানে কী? ইন্দ্রনাথের মীমাংসা: তামাম। শিক্ষকের নির্দেশ: বাংলা শব্দ বলো। ইন্দ্রনাথের উত্তর : বিলকুল। এরপরও ইন্দ্রনাথ পরবর্তী উচ্চ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন এবং সাহিত্যিকরূপে প্রতিষ্ঠালাভ করে বাংলা ভাষা ও তার সংস্কার সম্পর্কে প্রবন্ধ ও অভিভাষণ লিখেছিলেন।