আতিয়া বাগমার। আমার এই স্নেহভাজনার নাম প্রথমেই মনে করতে হয়। কারণ, তার সাপ্তাহিক “বাংলার জয়” পত্রিকার জন্য অনুরােধ রাখতে গিয়ে এই পুস্তকের সূচনা। এক সংখ্যার পরও অনুরােধ অব্যাহত রইল। তারই ফল ঃ কালরাত্রি খণ্ডচিত্র। তিন বছর পাণ্ডুলিপি আমার কাছে পড়ে ছিল। বই প্রকাশের তাগিদও এলাে এবার আতিয়া বাগমারের কাছ থেকে। তার দোহার প্রিয় আজিজ বাগমার ঢাকা কলেজে আমার প্রিয় ছাত্র ছিল। দম্পতির আগ্রহে আমার গড়িমসি ভাব কেটে যায়।এই সময় প্রকাশনার ভার গ্রহণ করে আর এক স্নেহভাজনা অনুজাপ্রতিম হাসনা আলম। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক প্রায় তিন দশকের। চাণক্য বলে গেছেন, বিলাস-ব্যসনে, দুর্ভিক্ষে, রাষ্ট্রবিপ্লবে, শ্মশানে (কবরে) বন্ধুত্বের পরীক্ষা হয়। মাহবুব আলম (আমার ডাকে, জগবন্ধু’) এবং হাসনা আলম আমাকে যে, কবর পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে শেষ পর্যন্ত উত্তীর্ণ হবেন তা আগে থেকে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায়। কারণ, প্রথম তিনটিতে তারা পাশ করে গেছেন। ফুল মার্কস। এক শ’য় এক শ'।আমি বাগমার ও আলম দম্পতির সুদীর্ঘ জীবন এবং সুখময় দৈনন্দিনতা কামনা করি।বইটি ১৯৭১ সনের পঁচিশে মার্চের রাত্রির খণ্ডচিত্র এবং অন্যান্য স্মৃতিচারণা।আত্মবিস্মৃত বাঙালি জাতি। অতীতের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যে আমার এই দীন প্রচেষ্টা।প্যাপিরাস প্রেসের হেলাল উদ্দীন গত বছর পৃথিবী ছেড়ে গেছেন। উত্তরাধিকারী মােতাহার হােসেন প্রবহমান রেখে চলেছেন তার ঐতিহ্য। কল্যাণময় হােক মােতাহার এবং প্যাপিরাসের সকল কর্মীদের ভবিষ্যৎ
শওকত ওসমান
জন্ম : জানুয়ারি, ১৯১৭ সালে পাড়া মেহেদী মহল্লায়। গ্রাম : সবলসিংহপুর, থানা : খানাকুল, মহকুমা : আরামবাগ, জেলা : হুগলী, রাজ্য : পশ্চিমবঙ্গ, রাষ্ট্র : ভারতবর্ষ, পিতা : শেখ মহম্মদ এহিয়া মাতা : গুলেজান বেগম। শওকত ওসমান তার সাহিত্য ক্ষেত্রের ছদ্মনাম। আসল নাম শেখ আজিজুর রহমান।
শিক্ষা : প্রথমে মক্তব, সবলসিংহপুর জুনিয়র মাদ্রাসা এবং পরে ১৯২৯-এ কলকাতা মাদ্রাসা-এ আলিয়াতে ভর্তি হন সপ্তন শ্রেণিতে। নবম শ্রেণিতে এ্যাংলাে-পার্সিয়ান শাখায় স্থানান্তর । ১৯৩৩-এ প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। ১৯৩৪-এ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি এবং ১৯৩৬ সালে প্রথম বিভাগে আই.এ.পাস। ভর্তি হন অর্থনীতিতে বি.এ. অর্নাস ক্লাসে। ১৯৩৯ সালে বি.এ. পাস। ১৯৪১-এ দ্বিতীয় শ্রেণিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা এম.এ.।
পুরস্কার : ১৯৬২ সালে আদমজী, ১৯৬৬ সালে বাংলা একাডেমি, ১৯৬৭ সালে প্রেসিডেন্টের প্রাইড অব পারফরমেন্স পদক, ১৯৮৩ সালে একুশে পদক, ১৯৮৬ সালে নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক, ১৯৮৮ সালে মুক্তধারা পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে ফিলিপস্ সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯১ সালে টেনাশিস পুরস্কার এবং স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, ১৯৯৬ সালে মাহবুবউল্লাহ ফাউন্ডেশন পদক।
মৃত্যু : সকাল ৭.৪০ মিনিট, ১৪ মে ১৯৯৮, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, ঢাকা।