জন্ম : ২৫ নভেম্বর ১৯৩৩, বড়, চব্বিশ পরগনা। শৈশবে পিতৃহীন বহড়তে মাতামহের কাছে ও বাগবাজারে মাতুলালয়ে বড় হন। পড়াশােনা : বহড় হাইস্কুল, মহারাজা কাশিমবাজার স্কুল, প্রেসিডেন্সি কলেজ ; যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্যে অধ্যয়ন অসমাপ্ত। বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত কবিতা পত্রিকায় ‘যম’ কবিতা লিখে (১৯৫৬) সাহিত্যজগতে প্রবেশ । যুক্ত ছিলেন কৃত্তিবাস পত্রিকার সঙ্গে। কবিতা সাপ্তাহিকী’ পত্রিকা প্রকাশ করে আলােড়ন তুলেছিলেন কবিতাজগতে। কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ৫১ প্রণীত-অনূদিতসম্পাদিত কবিতা ও গদ্যগ্রন্থের সংখ্যা ১১১—তাছাড়া অজস্র অগ্রন্থিত রচনা ছড়িয়ে আছে পত্রপত্রিকায়। পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার, সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার, সম্বলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গঙ্গাধর মেহের পুরস্কার, মরণােত্তর রবীন্দ্র পুরস্কার। জীবিকাক্ষেত্রে সাংবাদিক হিসেবে যুক্ত ছিলেন আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে। অতিথি-অধ্যাপক হিসেবে বিশ্বভারতীতে সৃষ্টিশীল সাহিত্যের অধ্যাপনায় রত থাকাকালীন অকস্মাৎ হৃদরােগে শান্তি নিকেতনে মৃত্যু, ২৩ মার্চ ১৯৯৫।
মুকুল গুহ
কহলীল জিবরান
কহলীল জিবরান। জন্ম: ১৮৮৩ সাল, বিসাররী, লেবানন । পিতার নাম: খলীল জিবরান। মা কামিলেহ ছিলেন ইস্তিফান রাহমে নামক একজন জাযকের কন্যা। কৈশােরে মা, সভাই ও দু’বােনসহ আমেরিকা অভিবাসী হন। প্রথমে থিতু হন বষ্টনে এবং পরবর্তীকালে নিউইয়র্কে। ‘দ্য প্রফেট' গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি সারা পৃথিবীর কবিতা পাঠকের কাছে পরিচিত। প্রফেট প্রকাশিত হয় ১৯২৩ সালে। তার কবিতার উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্য হলাে ভৌগােলিক বিচরণের ক্ষেত্রে সময়হীনতা এবং মরমী দার্শনিকের এক অবাস্তব জগত। জিবরান তার বহু রচনায় বিভিন্ন ধারণা ব্যাখ্যা করতে ছােট ছােট বর্ণনামূলক আখ্যান ব্যবহার করেছেন। কিন্তু এসব ছিল মূলত নীতিকথামূলক আখ্যানের প্রতিস্থাপন। শিক্ষামূলক রচনা, প্রবচন, প্রতীকাশ্রয়ী কাহিনী ও শ্লেষসমৃদ্ধ গদ্য- কৌতুক এসবই হচ্ছে জিবরানের রচনার বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দিক। তবে আরবি ও ইংরেজি উভয় রচনাতেই তার অদ্ভুত ষ্টাইল তার রচনাকে দিয়েছে মনােমুগ্ধকর চমত্তারিত্ব। জিবরান ভালবাসা সম্পর্কে এক জায়গায় বলেন, ভালবাসা ব্যাখ্যা করার জন্য কোন শব্দের দরকার হয় না, কারণ ভালবাসা হল একটা অচঞ্চল প্রার্থনা সংগীত, যা রাতের নীরবতার ভেতরে শােনা যায় এবং সেখানে ধোঁয়াশা ও সবকিছুর জন্য রয়েছে নির্যাস। জিবরান ১৯৩১ সালের ১০ এপ্রিল, শুক্রবার নিউইয়র্কের সেন্ট ভিনসেন্ট হাসপাতালে মারা যান।