ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ একটি বিপুল সংকটের সময় যখন বিভিন্ন ইচ্ছার সংঘর্ষে মানুষ সত্যকে চিহ্নিত করতে পারছে না। সেই সময় কয়েকটি মানুষ দুটি ভাষার উচ্চারণের পরিধির মধ্যে নিজেদের পরিচয় নির্মাণের চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের মানুষের জীবনের ইতিহাসে এই ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয় অথচ এ রকম ঘটনা আমরা সাহস করে পরীক্ষা করে দেখিনি। কবি আল মাহমুদ অত্যন্ত হয়ে সফলতার পদপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছেন। এ এক অসাধারণ কৃতিত্ব। সর্বাংশে দ্বিধামুক্ত হয়ে একটি সময়ের শাসনের মধ্যে দুটি ভিন্ন ভাষার জীবনকে তিনি পরষ্পরের প্রতি মমতার আকর্ষণে একত্রিত করেছেন। এটা কম দক্ষতার পরিচয় নয়। ‘কাবিলের বোন’ উপন্যাসের মধ্যে জীবনের যে অঙ্গীকার ব্যক্ত হয়েছে তা দীর্ঘকাল পাঠকের মনে রেখাংকন রেখে যাবে। সৈয়দ আলী আহসান
আল মাহমুদ
আল মাহমুদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি ব্যবসায়ী পরিবারে ১১ জুলাই ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। একুশ বছর বয়স পর্যন্ত এ শহরে এবং কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার অন্তর্গত জগৎপুর গ্রামের সাধনা হাইস্কুলে এবং পরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড হাইস্কলে পড়াশােনা করেন। এ সময়েই লেখালেখি শুরু।
তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার তিরিশ দশকীয় ভাবধারায় ভাটি বাংলার জনজীবন, গ্রামীণ দৃশ্যপট, নদীনির্ভর জনপদ, চরাঞ্চলের কর্মমুখর জীবনচাঞ্চল্য ও নর-নারীর চিরন্তন প্রেম-বিরহের বিষয়কে অবলম্বন করে আধুনিক বাংলা ভাষার প্রচলিত কাঠামােয় অত্যন্ত স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততায় আঞ্চলিক শব্দের সুন্দর প্রয়ােগে কাব্যরসিকদের মধ্যে নতুন পুলক সৃষ্টি করেন। তিনি ১৯৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন ।
১৯৭৫-এ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের সহ-পরিচালক পদে যােগদান করেন। পরে ওই বিভাগের পরিচালকরূপে ১৯৯৩ সালের এপ্রিলে তিনি অবসর নেন।
কবিতা, ছােটগল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধের বই মিলিয়ে আল মাহমুদের বইয়ের সংখ্যা পঞ্চাশাের্ধ। আল মাহমুদ বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার ও রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশে পদকসহ বেশ কিছু সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। সৈয়দা নাদিরা বেগম তার সহধর্মিণী। তাঁদের পাঁচ পুত্র ও তিন কন্যা।