হুমায়ুন আজাদ, শ্রেষ্ঠ কবিতার ভূমিকায়, লিখেছিলেন কবিতা তাঁর কাছে সৌন্দর্যের বিরামহীন বিস্তার, ইন্দ্রিয়ের অনন্ত আলোড়ন, জীবাশ্মের মতো নির্মোহ মহর্ষির প্রাজ্ঞতা, ধ্যানের অবিচল উৎসরণ, জীবনের আদিম উচ্ছল উৎসব, রূপক প্রতীক চিত্রকল্পের নির্বাণহীন অঙ্গার। বাঙলাদেশের প্রধান বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদ, দুরূহতম বিষয় থেকে সরলতম আবেগের অপরূপ প্রকাশ ঘটে তাঁর লেখায়। বাঙলা কবিতার অন্যতম প্রধান কবি হুমায়ুন আজাদ; জনপ্রিয় ধারায় তিনি কবিতা উৎপাদন করে চলেননি; তাঁর কাব্যসমগ্রে পাওয়া যায় তাঁর সময়ের শ্রেষ্ঠ আবেগ, উপলব্ধি, কামনা-বাসনা, সৌন্দর্যবোধ; পাওয়া যায় বাঙলা ভাষার সুস্থতম সৃষ্টিশীল রূপটি। হুমায়ুন আজাদ জনপ্রিয় বিষয়গুলো নিয়ে মাতেননি, মুখর হননি স্নোগানে; এমনকি প্রথাগত পাঠকেরা যে-অন্তরঙ্গ কণ্ঠস্বর শুনে বিহ্বল হতে ভালোবাসেন, সে-স্বরেও কবিতার নামে পদ্য দিয়ে তিনি বিভ্রান্ত করেননি পাঠকদের। তাঁর কবিতা অপূর্ব অসামান্য চিত্রকল্প, তীব্র আবেগ, পরিস্রুত বাঙলা ভাষার মিলন। তিনি সর্বাংশে আধুনিক; তিনি নগর পেরিয়ে এগিয়েছেন প্রকৃতির দিকে, আধুনিকের আবেগ দিয়ে উপলব্ধি করেছেন বহু বছর উপেক্ষিত নিসর্গকে; মৃত্যুবোধ ও ব্যক্তিগত যন্ত্রণার এমন আন্তরিক প্রকাশ ঘটিয়েছেন, যার তুলনা সহজলভ্য নয়। হুমায়ুন আজাদের এই অনবদ্য কাব্যসমগ্রটি পাঠকদের সুখী করে চলবে দশকের পর দশক। ১. অলৌকিক ইস্টিমার ২. জ্বলো চিতাবাঘ ৩. সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে ৪. যতোই গভীরে যাই মধু যতোই উপরে যাই নীল ৫. আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে ৬. কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু ৭. পেরুনোর কিছু নেই ৮. কিশোর কবিতা ৯. অনুবাদ কবিতা ১০. অগ্রন্থিত কবিতা
হুমায়ুন আজাদ
হুমায়ুন আজাদ (২৮ এপ্রিল ১৯৪৭ - ১১ আগস্ট ২০০৪; ১৪ বৈশাখ ১৩৫৪ - ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন একজন বাংলাদেশী কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, সমালোচক, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী, কিশোর সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার। তিনি বাংলাদেশের প্রধান প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক লেখক যিনি ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান- ও সংস্কারবিরোধিতা, নিরাবরণ যৌনতা, নারীবাদ ও রাজনীতি বিষয়ে নির্মম সমালোচনামূলক বক্তব্যের জন্য ১৯৮০-র দশক থেকে ব্যাপক পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
২০০২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের উপর কাজ করার জন্য জার্মান সরকারের নিকট একটি বৃত্তির আবেদন করেছিলেন। ২০০৪-এর ৭ আগস্ট জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান।
২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ আগস্ট রাতে একটি পার্টি থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আবাসস্থলে আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। ১২ আগস্ট ফ্ল্যাটের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।