মাহবুব সাদিকের কবিতায় ছায়া ফেলে নিসর্গ ও নগর, শ্যামল প্রদেশ ও যন্ত্রবিশ্বের জটিলতা এবং অস্থির আন্তর্জাতিক পৃথিবী। তাঁর আবেগ-সংবেদনা প্রায়ই প্রকাশরূপ পায় সংহত ও অবিস্মরণীয় চিত্রকল্পে; কল্পনার দ্যুতি-বিচ্ছুরিত উপমা-রূপক-প্রতীকে। যুদ্ধভাসান-এর কবিতা প্রসঙ্গেও এ-বক্তব্য প্রাসঙ্গিক। যদিও এ গ্রন্থের মূল বিষয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। মাহবুব সাদিক একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা। পরো ন’ মাস ছিলেন ফ্রন্ডেÑযুদ্ধের বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ এই কাব্যগ্রন্থ তাই কোনো গতানুগতিক যুদ্ধের কবিতা নয়। যুদ্ধে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার সঙ্গে এই বইয়ের কবিতায় যোগ হয়েছে কবির সুগভীর শিল্পবোধ ও নান্দনিক আবেগ। এই বইয়ের অনেক কবিতা একাত্তরেই লেখাÑ বেশ কিছু লেখা হয়েছে পরেও। এ কবিতাগুলি জেগে উঠেছে কবির প্রগাঢ় দেশপ্রেম এবং সংগ্রামী চেতনা থেকে।
মাহবুব সাদিক
মাহবুব সাদিক (২৫শে অক্টোবর ১৯৪৭), জন্ম টাঙ্গাইলের আইসড়ায়। সা’দত কলেজে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করেছেন। পিএইচ.ডি. করেছেন বুদ্ধদেব বসুর কবিতার বিষয়ে। প্রথম জীবনে যুক্ত ছিলেন রাজনীতির সঙ্গে। শোষিত মানুষের জন্য লড়েছেন। একাত্তরে করেছেন মুক্তিযুদ্ধ। ষাট দশকের গোড়া থেকেই কবি হিসেবে খ্যাতি; কবিতা ছাড়াও লিখেছেন ছোটগল্প, উপন্যাস, ছড়া, কিশোর কবিতা ও উপন্যাস এবং প্রবন্ধ। মাহবুব সাদিকের প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা পঁয়ত্রিশেরও বেশি। একালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কবিরূপে চিহ্নিত মাহবুব সাদিক বাংলা একাডেমী পুরস্কারসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত।