এক তরুণীর চোখে দেখা স্বাধীনতা যুদ্ধের দিনগুলোর এই অনুপুঙ্খ বর্ণনা আমাদের নিবিড়ভাবে একাত্ম করে একাত্তরের বাস্তবতার সঙ্গে। আটপৌরে বাঙালি পরিবারের দিনানুদৈনিকতায় মুক্তিযুদ্ধ কোন অভিঘাত সৃষ্টি করেছিল, ঘরোয়া জীবনের চেনা মানুষগুলো কে কীভাবে তাতে সাড়া দিয়েছিল এইসব চিত্র মুগ্ধ বিস্ময়, অপার দৃঢ়তা ও দরদমাখা অনুভব নিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখিকা। বাংলার ইতিহাসের মহত্তম সংগ্রামের এই ছবি যেমন ভিন্নতর এক আমেজ সঞ্চার করে, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপক ও বহুমাত্রিক ব্যাপ্তি আমাদের সামনে তুলে ধরে। মুক্তিযুদ্ধবিষক বই যখন ছিল একেবারেই অপ্রতুল, সাহিদা বোগমের এই গ্রন্থ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল বহুল প্রচারিত সাময়িকী সচিত্র সন্ধানীতে এবং অচিরে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়ে পাঠকদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। সেই থেকে অব্যাহত রয়েছে এই বইয়ের আবেদন, যা কখনো ফুরিয়ে যাওয়ার নয়, নতুন প্রজন্মের পাঠকেরা যেখানে পাবেন মুক্তিযুদ্ধের নবতর ও নিবিড়তম পরিচয়।
সাহিদা বেগম
সাহিদা বেগম ১৯৫৫ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বিনারচর। গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা- মরহুম আলহাজ্ব আনােয়ার আলী ভূঞা ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। মা আলহাজ্ব হাসনা হেনা বেগম গৃহিণী। গবেষক প্রাবন্ধিক ও আইনজীবী সাহিদা বেগম ১৯৭০ সালে গাইবান্ধা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৭৩ সালে সিদ্ধেশ্বরী মহিলা মহাবিদ্যালয় ঢাকা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্মান (বাংলা সাহিত্য) ১৯৭৫ এবং ১৯৭৬ সালে লাভ করেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। ১৯৮৪ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ করেন। এন এন বি ডিগ্রি। কর্মজীবন : ১৯৮৫ সালে আইন ব্যবসা শুরু করেন। ঢাকা বারে যােগ দিয়ে। ১৯৮৮ সালে যােগ দেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বারে। অদ্যবধি আইন পেশায় নিয়ােজিত আছেন। বর্তমানে বাংলাদেশের সহকারী এটনী জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
‘স্বদেশ, ইতিহাস এবং মুক্তিযুদ্ধ সাহিদা বেগম এর রচনার মূল বিষয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তাঁর। রচনার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে। এ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ১৬টি গ্রন্থসহ ৬৯টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম এই যুদ্ধে যুদ্ধে নয় মাস ১৯৮৪ সালে বছর ব্যাপি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।