এটি শুধুমাত্র একজন নারীর আত্মকথা নয়, বরং সমাজ ও রাজনীতির ভিক্টিম একজন প্রতিবাদী মানুষ হিসেবে সংগ্রামের আখ্যান। মূলত এই বইটি মানবাধিকারের জন্য লড়াই করা মানুষদের জন্য একটি প্রামাণ্য দলিল, যেখানে রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার নামক আয়নায় ক্ষতবিক্ষত একজন মানুষ কেমন করে বাঁচে, তা উঠে এসেছে এর নিগূঢ় ও নিখুঁত ব্যক্তিগত হয়েও বৈশ্বিক বয়ানে।
পাশাপাশি উঠে এসেছে সারা পৃথিবীতে অন্যায় আর দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রামের স্বরূপ।
বইটির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এই বইয়ের সততা, যেকারনে এই বইয়ের লেখককে সময় নিতে হয়েছে প্রায় দুই বছর। নিরাপত্তার খাতিরে দেশত্যাগ করে প্যারিসে নির্বাসনের নিরাপদ আশ্রয়ে গিয়ে তিনি বইয়ে লিখেছেন সেইসব সত্য, যেসব সত্য ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে রয়ে যাবে মানবসভ্যতার ইতিহাসকে উজ্জীবিত করতে।
লেখক বিশ্বাস করেন- ইতিহাস বলে যা লেখা হয় সেটা বিজয়ীর হাতে লেখা বাকোয়াজ। কিন্তু 'ইতিহাস লেখার ইতিহাস'টি লিখতে পারেন একজন সত্যিকারের লেখক যিনি নিজেই একটা জীবন্ত দলিল। তার হৃদয়ে জমা ব্যথা, দাগ আর নির্যাতনের চিহ্নগুলোই মূলত সেই ইতিহাস যা শাসকের চোখ এড়িয়ে লিখে রাখে মহাকাল। কারণ সেটাই মানবাধিকারের পক্ষে মানুষের সংগ্রামের একমাত্র ইতিহাস।
তাই, প্রিয় পাঠক- নারীবাদ, মৌলবাদ থেকে শুরু করে কাঁটাতার এবং বিভেদে ভরা দুনিয়ায় তথাকথিত রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় আইনকে চ্যালেঞ্জ করা একজন নারীর বয়ানে শ্বাসরুদ্ধকর ইতিহাস লেখার এই ঐতিহাসিক যাত্রায় আপনাকে স্বাগতম!
জান্নাতুন নাঈম প্রীতি
ছােটদের ও বড়দের জন্য ছােটগল্প, প্রবন্ধ ও কবিতা লেখেন। পাশাপাশি চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক ও সঙ্গীতে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। মাত্র সাত বছর বয়সেই ক্লাস টুতে থাকাকালীন অবস্থায় তিনি সারা দেশের মধ্যে 'Anchor-প্রথম আলাে গল্প লেখা প্রতিযােগিতায় সেরা গল্পকারের খেতাব লাভ করেন। তার উল্লেখযােগ্য পুরস্কারগুলাের মধ্যে ২০১৪ সালে ইউনিসেফ মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’-এর সৃজনশীল লেখা শাখার প্রথম পুরস্কার, 'Anchor' প্রথম আলাে গল্প লেখা প্রতিযােগিতায় সেরাদের সেরার খেতাব; ২০০৫, ২০০৬, ২০০৮, ২০১০, ২০১১-তে ঐতিহ্য আয়ােজিত জাতীয় গল্প লেখা প্রতিযােগিতায় পাঁচবারের অন্যতম সেরা গল্পকারের সম্মাননা, ব্রিটিশ কাউন্সিল আয়ােজিত রচনা প্রতিযােগিতা ও আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব আয়ােজিত রচনা প্রতিযােগিতায় পুরস্কার লাভসহ চিত্রকলা, আবৃত্তি, বিতর্ক ও সঙ্গীতে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন। পড়াশােনায় কৃতিত্বের জন্য পেয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের সম্মাননা ‘এসাে বাংলাদেশ গড়ি’-এর জাতীয় পর্যায়ে কৃতী শিক্ষার্থী অ্যাওয়ার্ড, বিভাগীয় পর্যায়ে মেয়র পদকসহ বেশ কিছু পুরস্কার। বেশ কিছু চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্রেও তার ভূমিকা রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৪ সালে দিল্লির দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার জেতা পােস্টার’ ছবিটি উল্লেখযােগ্য। বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও লিটলম্যাগসহ দেশে ও দেশের বাইরে বেশ কিছু সঙ্কলনে তার লেখা বেরিয়েছে, তার প্রথম গ্রন্থ শিশুদের জন্য লেখা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপন্যাস‘বাংলাদেশ নামটি যেভাবে হল’ (একুশে বইমেলা ২০১৪)। তরুণ এই লেখক স্বপ্ন দেখেন দেশকে পৃথিবীর দরবারে অনন্য সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করার।