সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে। শৈশব কেটেছে ছােটনাগপুরের নির্জন পাহাড়ি অঞ্চলে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক বিষয় রসায়ন। কিছুকাল দেওঘর রামকৃষ্ণ মিশনে শিক্ষকতা করেন। তারপর একটি রাসায়নিক প্রতিষ্ঠানে কেমিস্ট। অতঃপর সরকারি চাকরি শেষে সাংবাদিকতায়। সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকার সহযােগী সম্পাদক ছিলেন একসময়। প্রথম প্রকাশিত লেখা একটি গল্প ‘সারি সারি মুখ। প্রথম ধারাবাহিক সুদীর্ঘ লেখা ‘দেশ’ পত্রিকায় সঞ্জয় ছদ্মনামে ‘জীবিকার সন্ধানে পশ্চিমবঙ্গ’ পরে পুস্তকাকারে প্রকাশিত। প্রথম উপন্যাস ‘পায়রা’ শারদীয় দেশ পত্রিকাতেই প্রকাশ পায়। আনন্দ পুরস্কার, বিদ্যাসাগর পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার, নিবেদিতা পুরস্কারের পাশাপাশি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত শরৎচন্দ্র স্মৃতি পদক ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রদত্ত বঙ্গবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত।
নবনীতা দেবসেন
চিত্ত রঞ্জন মাইতি
বুদ্ধদেব গুহ
এই সময়ের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম বুদ্ধদেব গুহ। পেশাগত দিক থেকে তিনি একজন নামী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। দিল্লির কেন্দ্রীয় রাজস্ব বাের্ড তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের আয়কর বিভাগের উপদেষ্টা বাের্ড-এর সদস্য নিযুক্ত করেছিলেন। আকাশবাণীর কলকাতা কেন্দ্রের অডিশান-বাের্ড এর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ফিল্ম সেন্সর বাের্ড-এর সদস্যও ছিলেন তিনি। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বনবিভাগের বন্যপ্রাণী উপদেষ্টা বাের্ড, পর্যটন বিভাগের উপদেষ্টা বোের্ড এবং নন্দন’ উপদেষ্টা বাের্ড-এরও সদস্য। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনের পরিচালন সমিতির সদস্যও নিযুক্ত হয়েছেন। বুদ্ধদেব ছবিও আঁকেন। নিজের একাধিক বই-এর প্রচ্ছদ তিনি নিজেই এঁকেছেন। গায়ক হিসেবেও তিনি বহুজনের প্রিয়। ব্যতিক্রমী লেখক বুদ্ধদেব বাঙালি পাঠক-পাঠিকাদের একাধিক প্রজন্মকে যে ভারতের বন-জঙ্গল, বাদা-নদী, পশু-পাখি এবং অরণ্যে লালিত-পালিত সাধারণ গরিব-গুরবাে মানুষদের ভালবাসতে উদ্বুদ্ধ করেছেন তা সর্বজনস্বীকৃত। নারী-পুরুষের প্রেম-বিরহ সম্পর্কেও তাঁর কলম অপ্রতিদ্বন্দ্বী । বুদ্ধদেবের সহধর্মিণী সম্রান্ত রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়িকা শ্রীমতী ঋতু গুহ।
আশাপূর্ণা দেবী
আশাপূর্ণা দেবীর জন্ম ১৩১৬ বঙ্গাব্দ। সেকালের রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম, তাই স্কুলে-কলেজে যাননি, যা-কিছু পড়াশােনা বাড়িতে। খুব অল্পবয়স থেকেই লিখছেন।। সাহিত্যজীবনের শুরু ছােটদের রচনা দিয়ে। মাত্র তেরাে বছর বয়সে প্রথম কবিতা ছাপা হয় ‘শিশুসাথী’ পত্রিকায়। পরবর্তী রচনা একটি গল্প, সেটিও ছাপা হয় ‘শিশুসাথী’ পত্রিকাতেই। কবিতাটির নাম—বাইরের ডাক আর। গল্পটির নাম— ‘পাশাপাশি। শুধুই ছােটদের জন্য লিখেছেন ১৩২৯ সাল থেকে একটানা চোদ্দো বছর। বড়দের জন্য লেখা প্রথম গল্প ১৩৪৩ সালে, শারদীয়া আনন্দবাজার। পত্রিকায়। প্রেম ও প্রয়ােজন’ প্রথম উপন্যাস, ১৩৫১ সালে কমলা পাবলিশিং থেকে প্রকাশিত। শতাধিক গ্রন্থের লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পেয়েছেন, পেয়েছেন। রবীন্দ্র পুরস্কার। দুটি পুরস্কারই প্রথম। প্রতিশ্রুতি’ উপন্যাসের জন্য। ট্রিলজির প্রথম গ্রন্থ এটি। অন্য দুটি গ্রন্থ— ‘সুবর্ণলতা ও বকুলকথা'। ১৯৯৪ সালে নির্বাচিত হয়েছেন সাহিত্য অকাদেমির ফেলাে।। প্রয়াণ ১৩ জুলাই ১৯৯৫।