অতিমারীর বিষণ্ণতাময় সময়ের রাহু থেকে মুক্ত হতে লেখক পাড়ি জমান গ্রিসে। পশ্চিম উপকূলের দ্বীপ করফু’তে। দ্বীপের নোনা হাওয়ায় গা জুড়িয়ে এখানে-ওখানে পরিভ্রমণের পর্যায়ে আমরা সন্ধান পাই বর্ষীয়ান এক যাজকের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যার জীবনে তৈরি করেছিল বিশেষ এক ঘূর্ণাবর্ত। তাঁর জীবনালেখ্য আমাদের জন্যে টুকে নিয়ে লেখক এবারে যান স্ক্যানডিনেভিয়ার দেশ ডেনমার্ক আর সুইডেনে। সেখানে স্টকহোমের উপকণ্ঠে অবস্থিত একটি চার্চের দেয়ালচিত্র দেখে আমরা শিহরিত হই। ঘুরেফিরে বারেবারে আসে কিংবদন্তিতুল্য সুইডিশ ছায়াছবি নির্মাতা ইঙ্গমার বার্গম্যান-এর প্রসঙ্গ। মূলত এই দেয়ালচিত্রটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই বার্গম্যান নির্মাণ করেছিলেন নন্দিত ছায়াছবি–‘দ্য সেভেন্থ সিল’।
এরপর ভ্রমণের ঘুড়ি উড়তে উড়তে উপস্থিত হয় দক্ষিণ ফ্রান্সের আলো-হাওয়া আর রঙের প্রাচুর্যময় এক অঙ্গনে। ভ্যান গগ, পিকাসো, পল সেজান-এর মত শিল্পীরা সেই প্রাচুর্যের কুহকী টানেই ছুটে এসেছিলেন একদা। লেখকের সঙ্গী হয়ে আমরা এবারে দেখতে যাই তাঁদের পদধূলিধন্য সেইসব ক্ষুদ্র জনপদ, সেতু, রেস্তোরাঁ কিংবা হয়তো আঁকা-আঁকির স্টুডিও। যে হাসপাতালের ঘরে বসে ভ্যান গগ এঁকেছিলেন ‘তারাভরা রাত’, যে পদ্মপুকুরের ধারে বসে ক্লদ মোনে এঁকেছিলেন নানা ঋতুর পালাবদলের খতিয়ান কিংবা যে পাহাড়ের খাঁজে দাঁড়িয়ে পল সেজান এঁকেছিলেন কোঁত দাজয়া অঞ্চলের নিসর্গ–সেগুলোকে তখন আর সুদূরের অজানা, অচেনা স্থান বলে মনে হয় না।