সৈয়দ শামসুল হক (২৭ ডিসেম্বর ১৯৩৫ - ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬) ছিলেন বিংশ শতাব্দীর শেষভাগের একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী সাহিত্যিক, যিনি কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প, অনুবাদসহ সাহিত্যের সব শাখায় অবদান রেখে সব্যসাচী লেখক হিসেবে পরিচিতি পান। তাঁর লেখকজীবন প্রায় ৬২ বছর ব্যাপী বিস্তৃত ছিল। মাত্র ২৯ বছর বয়সে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন, যা তাঁকে এই পুরস্কারের সবচেয়ে কম বয়সী প্রাপক করে তোলে। বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ১৯৮৪ সালে একুশে পদক এবং ২০০০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার অর্জন করেন।
শামসুজ্জামান খান
বাংলাদেশের অন্যতম লােকসাহিত্য গবেষক ও প্রাবন্ধিক শামসুজ্জামান খানের জন্ম ১৫ জুন ১৯৩৭। কৈশােরেই তাঁর সাহিত্যচর্চার সূত্রপাত। স্কুলে পড়াকালে যৌথ সম্পাদনায় বের করেন হাতে-লেখা সাহিত্যপত্রিকা ‘পূর্বাভাষ'। প্রথম লেখা ছাপা হয় দৈনিক আজাদের মুকুলের মহফিল-এ, ১৯৫৭ সালে। 'লাল শার্ট' শিরােনামের গল্পটির বিষয় ছিল ভাষা আন্দোলনের শহিদ রফিকের জীবন। ষাটের দশক থেকে কচিকাঁচার মেলার সংগঠক হিসেবে অজিত কুমার গুহ, সুফিয়া কামাল, আবদুল্লাহ আল-মুতী এবং রােকনুজ্জামান খান দাদাভাইয়ের সঙ্গে সারা দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন।
তার উল্লেখযােগ্য গ্রন্থের মধ্যে আছে-মাটি থেকে মহীরুহ, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপ ও প্রাসঙ্গিক কথকতা, কালের ধুলােয় স্বর্ণরেণু, বাংলার গণসংগীত, আধুনিক ফোকলাের চিন্তা, বর্ধমান হাউসে রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য প্রবন্ধ, সাম্প্রতিক ফোকলাের ভাবনা, বাংলা সন ও তার ঐতিহ্য ইত্যাদি। এ ছাড়াও শিশুসাহিত্যবিষয়ক অনেকগুলাে বই রয়েছে ।
তিনি ২০০১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৮৭ ও ২০১২ সালে অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার পান। এর আগে ১৯৬৭ সালে শামসুজ্জামান খানের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় কিশােরগল্প সংকলন 'সূর্যমুখী'। সংকলনটি তৎকালীন পূর্ববাংলার শিশুকিশাের সাহিত্যে একটি উল্লেখযােগ্য সংকলন হিসেবে বিবেচিত হয় এবং ১৯৬৮ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ পুরস্কার অর্জন করে।
শিক্ষকতা দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু। ২০০৯ সাল থেকে তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। ২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হয়েছেন।
প্রবন্ধগ্রন্থ : করুণ মাল্যবান ও অন্যান্য প্রবন্ধ ২০১২, কবিতাজীবনী ২০১৪, কামু মার্কেস ইলিয়াস ও অন্যান্য ২০১৫ সাক্ষাৎকার সংকলন- আলাপন অষ্টমী ২০১৫ সম্পাদনা করেছেন শামসুর রাহমান, রশীদ করীমের নির্বাচিত সাক্ষাৎকার আবদুল মানান। সৈয়দের অপ্রকাশিত-অগ্রন্থিত রচনাসহ দশটি বই এবং ছােটকাগজ- ভুবনডাঙা, আর্কেডিয়া অর্জন করেছেন এইচএসবিসি-কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার ২০১২ এবং কলকাতার আদম লিটলম্যাগের তরুণ কবি সম্মাননা ২০১৫। আমন্ত্রিত হয়ে অংশ নিয়েছেন চীনে অনুষ্ঠিত চীন-দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া লেখক সম্মেলনে বাংলা একাডেমিতে কর্মরত।
জাকির তালুকদার
জন্ম ২০ জানয়িারি ১৯৬৫ নাটোরে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্নাতক। স্নাতকোত্তর ডিগ্রী স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে। সমকালীন মুলধারার বাংলা কথাসাহিত্যে তাঁর অপরিহার্যতা ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত। অনবরত বাঁকবদল তাঁর সাহিত্যিকতার প্রধান বৈশিষ্ট। বিষয় ও আঙ্গিকে, মাধ্যম ও প্রকরণে তাঁর স্বাতন্ত্র্যচিহ্নিত অবস্থান সকল মহলেই স্বীকৃত। কথাসাহিত্য এবং চিন্তামূলক কর্মকাণ্ডের সকল ক্ষেত্রে বিচরণকারী জাকির তালুকদার ২৫ গ্রন্থের জনক। বাংলাসাহিত্যের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন তাঁর দ্বিতীয় প্রবন্ধগ্রন্থ।