বাংলাদেশ নিয়েই তার সমগ্র জীবনের স্বপ্ন , কর্ম এবং কর্ম-পরিকল্পনা আবর্তিত। তিনি মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশে পরিব্যাপ্ত দরিদ্র জনগােষ্ঠীর অর্থনৈতিক মুক্তির পথ গ্রামীণ ব্যাংক’-এর কর্মসূত্রে লাভ করেছেন বড় সম্মান-শান্তির জন্য নােবেল পুরস্কার। কিন্তু এই মানুষটি মােটেই শান্তিতে নেই , কেননা তাঁর প্রিয় বাংলাদেশ সীমাহীন রাজনৈতিক সংকটে আচ্ছন্ন, দুনীতিতে নিমগ্ন, সন্ত্রাসে বিপন্ন। মুহাম্মদ ইউনূস তাই অস্থির আবেগে এতসব সমস্যার সমাধান-চিন্তায় রচনা করেছেন নানা প্রবন্ধ । তিনি মনে করেন-বাংলাদেশের সবগুলাে সমস্যা পরস্পর অবিচ্ছিন্ন , যে – কারণে সমস্যাগুলাের সমাধানের রাস্তা সততা , নিষ্ঠা , নীতি বা নিরপেক্ষ আইনতান্ত্রিক পথে অভিন্ন গন্তব্য নির্দেশ করে । তবে, এও সত্য সঠিক পথ ও গন্তব্য নির্দেশের জন্য দেশের আপামর জনগণের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। মুহাম্মদ ইউনূসের এই গ্রন্থ জনগণকে সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস
মুহাম্মদ ইউনুসের জন্ম (১৯৪০) বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা করার সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জোবরা গ্রামে ১৯৭৭ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প শুরু করেন। এখন ক্ষুদ্র ঋণের জন্য গ্রামীণ ব্যাংক মডেল এবং তার উদ্ভাবক। মুহাম্মদ ইউনুস আন্তর্জাতিকভাবে একটি প্রতিষ্ঠিত নাম। সম্ভবত বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুপরিচিত মানুষ তিনিই।
‘গ্রামীণ ব্যাংক’-এর সাফল্য তাকে বিশ্বজোড়া পরিচিতি এনে দিয়েছে। এ পর্যন্ত পনেরােটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তেরােটি সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রিও তিনি পেয়েছেন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন।
ড. ইউনুস ইউ এন ফাউন্ডেশন' সহ অন্তত দশটি আন্তর্জাতিক সংস্থার পরিচালনা পরিষদের সদস্য বা উপদেষ্টা । সম্প্রতি তিনি জাতিসংঘের 'UNAIDS-এর ‘ইন্টারন্যাশনাল গুডউইল অ্যাম্বাসাডর’-এর সম্মান লাভ করেন। ‘গ্রামীণ ব্যাংক' ছাড়াও বাংলাদেশে গরিবদের ভাগ্যোন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি বেশ কয়েকটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন। '২০০৬-এ গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে নােবেল শান্তি পুরস্কারে সম্মানিত।