যদ্যপি আমার গুরু (হার্ডকভার)
বইবাজার মূল্য : ৳ ১৬৪ (১৮% ছাড়ে)
মুদ্রিত মূল্য : ৳ ২০০
প্রকাশনী : মাওলা ব্রাদার্স
বিষয় : অন্যান্য , মাস্ট রিড ১০০
বই:-যদ্যপি আমার গুরু লেখক:- আহমদ ছফা জ্ঞানের আদি পিতা সক্রেটিস কে পরিচয় করে দেন আদর্শ ছাএ প্লেটো। সক্রেটিস তার জীবন দশায় কোন রচনা লিখে যান নি তবে তিনি পৃথিবীতে পরিচিত হয়েছেন তার ছাএ প্লেটো দারা। তবে তেমনি বাংলাদেশে জ্ঞান তপস্বী হলেন আবদুর রাজ্জাক স্যার তিনি মূলত পরিচিত হন তার শিষ্যের মাধ্যমে।তবে আবদুর রাজ্জাক স্যার কে চলমান বিশ্বকোষ বললে অতুক্তি হবে না। রাষ্ট্রবিজ্ঞান,সমাজ বিজ্ঞান, শিল্প সাহিত্য,ধর্ম ও সংস্কৃতি সবগুলো বিষয়ে মতামত দেয়ার ক্ষমতা রাখেন। স্বাধীনতা উওর ও পরবর্তী সময় ধরে প্রায় অর্ধশত বছর ভূমিকা রাখেন। তাছাড়া অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিগন তার সহচর ছিলেন। দুজন নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতেই হয় ১.দাবারু নিয়াজ মুরশেদ ২.এসএম সুলতান বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্র শিল্পী। যদ্যপি আমার গুরু বইয়ের লেখক আহমদ ছফা মুলত তিনি অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক স্যার এর সাথে পরিচিত হয় তার পিএইইচডি থিসিস পেপার সুপারভাইজার হিসেবে। এই বইয়ের উল্লেখ যোগ্য অনেক গুলো লাইনের মধ্যে একটা লাইন শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছি না। আপনি প্রথম কোথাও গেলে বইয়ের দোকান এবং বাজারে যাবেন তাহলে আপনি বুজতে পারবেন সমাজ কোন দিকে যাইতেছে। কাজী নজরুল ইসলাম, মীর মোশারফ হোসেন পর বাংলাদেশে সবচেয়ে চিন্তাশীল ব্যক্তি হলেন আহমদ ছফা। তবে আহমদ ছফা সম্পর্কে বললে আমার জ্ঞানের দারিদ্র্যতা হয়ে যাবে। ***সবশেষে এই কথা বলতে চাই বই পড়তে যারা ভালোবাসেন তারা অবশ্যই "যদ্যপি আমার গুরু " বইটি পাঠ করবেন। বইটি গুরুর দক্ষিণা বলা হয়ে থাকে।
#রিভিউ #যদ্যপিআমারগুরু মিডটার্ম পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত মার্চ মাসের ১০ তারিখে। প্রতি পরীক্ষার পর চেষ্টা করি বুকশেলফের একদিক থেকে বই পড়া শুরু করা। কয়েক দিন বিরতি নিয়ে শুরু করলাম হুমায়ূন আহমেদের গৌরীপুর জংশন। ঠিক কয়েক দিন পর ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যায় করোনাভাইরাসের কারণে। ১৮ মার্চে গ্রামের বাড়ির পথে রওনা দিলাম ট্রেনে। ট্রেনে উঠে মনে পড়ল, বইয়ের ব্যাগটি ফেলে এসেছি ঢাকায়। অগত্যা বাড়িতে ফিরে পিডিএফ ডাউনলোড করে পড়া শুরু করি। কিন্তু কোনো বই–ই মনঃপূত হচ্ছিল না। একনাগাড়ে কোনো বই শুরু থেকে শেষ অবধি পড়ার মতো ধৈর্য পাচ্ছিলাম না। ওয়েবসাইট থেকে আহমদ ছফার যদ্যপি আমার গুরু বইটির পিডিএফ ডাউনলোড করে পড়া শুরু করি। একজন শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষার্থীর যে আন্তসম্পর্ক, তা–ই ফুটে উঠেছে যদ্যপি আমার গুরু বইটিতে। তবে বইটি পড়ে পাঠক কিছুটা হলেও আফসোস করবেন। কারণ, যে শিক্ষককে নিয়ে বইটি লেখা, তিনি কখনো কলমই ধরেননি। অর্থশাস্ত্র, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, শিল্পসাহিত্য—সব বিষয়ে বিশেষজ্ঞের মতো মতামত দেওয়ার ক্ষমতা রাখতেন তিনি, যিনি আহমদ ছফার পিতৃতুল্য শিক্ষক জাতীয় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক। বইটিতে লেখক অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের উচ্চারিত বাক্যের শুধু প্রতিধ্বনি করেননি, বরং ব্যাখ্যা করেছেন, উপযুক্ত পরিপ্রেক্ষিত স্থাপন করেছেন, এমনকি প্রয়োজনে প্রতিবাদও করেছেন। ১৯৭০ সালের শেষের দিকে একটি গবেষণার সুপারভাইজার হওয়ার অনুরোধ নিয়ে আহমদ ছফা অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে দেখা করেন। দেখা করার আগে তাঁর বন্ধুবান্ধব তাঁকে অনেকবার হুঁশিয়ার করেন যে রাজ্জাক সাহেব বেশ নাক–উঁচু স্বভাবের মানুষ। বাঘা বাঘা লোকেরাও তাঁর কাছে ঘেঁষতে ভীষণ ভয় পান। এক প্রকার সাহস সঞ্চার করেই আহমদ ছফা তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। বিভিন্ন কথাবার্তার মধ্য দিয়ে তাঁদের গুরু–শিষ্যের সম্পর্ক এগিয়ে চলে। প্রত্যেক শিক্ষকের কিছু ব্যাপার থাকে, যা তাঁর ছাত্রদের আকৃষ্ট করে। তেমনি অধ্যাপক রাজ্জাকের বাড়ি থেকে ফেরার সময় তিনটি বিষয় আহমদ ছফার মনে দাগ কাটে। প্রথমটি হচ্ছে, রাজ্জাক সাহেবের চোখের দৃষ্টি অসাধারণ তীক্ষ্ণ, যা তাঁর মর্ম স্পর্শ করেছিল সেদিন। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, তিনি ঢাকাইয়া বুলি অবলীলায় ব্যবহার করতে পারতেন। তাঁর মুখে শুনলে ভাষাটি ভদ্রলোকের ভাষা বলে মনে হতো। তৃতীয়টি হচ্ছে, আহমদ ছফাকে তিনি ‘মৌলবি আহমদ ছফা’ বলতেন। কোনো এলাকার হাবভাব বোঝার জন্য দুটো জিনিস দেখতে হয়—তারা কী খায় আর কেমন বই পড়ে। এই একটি কথা পাঠকের মনে চিন্তার খোরাক জোগাবে। অল্প বয়সী নিয়াজ মোরশেদকে দাবা খেলার ট্রেনিং দেওয়ার আলোচনা, অমর্ত্য সেনের সঙ্গে অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা, নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কিংবা শেক্সপিয়ারের লেখার সমালোচনা, এমনকি জসীমউদ্দীনের সঙ্গে রাজ্জাক সাহেবের স্মৃতিকথাও উঠে এসেছে বইটিতে। লেনিন-মার্ক্স, হেনরি কিসিঞ্জার, ধর্মনিরপেক্ষতা—এসব নিয়ে নতুন করে ভাবার বিষয়টি মাথায় আসবে হয়তো আবদুর রাজ্জাক ও আহমদ ছফার কথোপকথন থেকে। সাহিত্যের আলোচনায় তিনি যখন বলেন, ‘চাঁদ সওদাগরের মতো শক্তিশালী চরিত্র বাংলা সাহিত্যে বিরল’, অথবা মার্চেন্ট অব ভেনিস নিয়ে তাঁর সমালোচনা কিংবা তাঁর কাছ থেকে শাইলকের ডায়ালগের ব্যাখ্যা শুনে পুরোনো সাহিত্যের প্রতি টান অনুভব করতে পারেন পাঠক। ময়লা পাঞ্জাবি, ছেঁড়া গেঞ্জি, এক পায়া ভাঙা কাঠের চৌকিতে থাকা আবদুর রাজ্জাক নামের মলিন মানুষটি চার দশক ধরে কীভাবে তরুণ বিদ্যার্থীদের মধ্যে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন, সেটাই আহমদ ছফা প্রথম পুরুষে লিখেছেন যদ্যপি আমার গুরু বইটিতে। বইটি মাত্র ১১০ পৃষ্ঠায় সীমাবদ্ধ হলেও এর বিষয়বস্তু আর উপাদানের বিস্তৃতি হাজারো পৃষ্ঠা অবধি। একজন শিক্ষককে কতটুকু উদার হয়ে তাঁর ছাত্রদের ভেতর জ্ঞানের স্পৃহা ছড়িয়ে দিতে হয়, সেটি প্রখরভাবে ফুটে উঠেছে বইটির পঙ্ক্তিজুড়ে। এ বই পড়ে পাঠকের ভেতর প্রশ্ন জাগতে পারে, কে বেশি ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য—যাঁকে কেন্দ্র করে বইটি লেখা হয়েছে, তিনি; নাকি যিনি আবদুর রাজ্জাকের মতো মহান মানুষটিকে আমাদের সামনে তুলে এনেছেন, তিনি? এ তর্কের অবসান ঘটাতে পারেন কেবল পাঠকেরাই। তবে যদ্যপি আমার গুরু বইটি পড়ার পর আরও শতাধিক বই পড়ার আগ্রহ ও প্রবল ইচ্ছা জেগে উঠবে পাঠকের ভেতর, এটাই হয়তো বইটির সবচেয়ে বড় সার্থকতা। বই: যদ্যপি আমার গুরু লেখক: আহমদ ছফা প্রকাশক: মাওলা ব্রাদার্স প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮
বই: যদ্যপি আমার গুরু লেখক: আহমদ ছফা ১৯৭০ সাল, বিখ্যাত লেখক আহমদ ছফা ঠিক করলেন পি,এইচ,ডি করবেন। এখন দরকার একজন অফিসিয়াল থিসিস সুপারভাইজার। বন্ধুদের পরামর্শে জাতীয় অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে যান আহমদ ছফা। সেখান থেকে সখ্যতা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেতে থাকে তাদের। ১৯৭২ থেকে পরবর্তী এক যুগে প্রতি সপ্তাহে দেখা হত গুরু শিষ্যের। এই দীর্ঘদিনের পরিচত, আব্দুর রাজ্জাক স্যারকে নিয়েই আহমদ ছফার ‘যদ্যপি আমার গুরু’। এখানে ব্যক্তি আব্দুর রাজ্জাক, তাঁর বিভিন্ন ঘটনা ও দর্শন ভঙ্গি তুলে ধরেছেন আহমেদ ছফা। কলমের শক্তি কি জিনিস আহমদ ছফা তা বুঝিয়েছেন তার লেখা যদ্যপি আমার গুরু বইতে। রাজ্জাক স্যার ব্যাক্তগত জীবনে ছিলেন সাদাসিধে ধরনের। তিনি পড়ুয়াদের খুব ভালবাসতেন। ছিলেন নিজেও বইয়ের পোকা। বইটিতে আহমদ ছফা তুলে ধরেছেন সমকালিন বিভিন্ন প্রেক্ষাপট। উঠে এসেছে বিভিন্ন ব্যক্তির ভাল-মন্দ নানান দিক। যেখনে উঠে এসেছে না-জানা অনেক ইতিহাস। কবি নজরুলকে নিয়েও তিনি দিয়েছেন অনেক মজার মজার তথ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকালিন শিক্ষকদের ব্যক্তিগত জীবনে নিয়েও তিনি দিয়েছেন নানান রোমাঞ্চকর তথ্য। দিয়েছেন জয়নুল আবেদীন এবং সমসময়ীক কিছু শিল্পীদের অজানা ক্ষত ইতিহাস। জয়নুল আবেদীনকে তিনি শ্রেষ্ঠ শিল্পী বলেছেন, কারন তার ছিল অন্যরকম প্রতিভা। যাকে দেখা না অনুভব কার যায় কিন্তু ছোঁয়া যায়না। কিছু বই আছে যাকে বলে এক বসাতেই শেষ । তাদের মধ্যে একটি যদ্যপি আমার গুরু বইটি। শেষ করব বইয়ের দুইটা লাইন দিয়ে, “আমি বললাম, বাংলার ভবিষ্যত সম্পর্কে কিছু বলেন। স্যার বললেন, বাংলার ভবিষ্যত সম্পর্কে আমি আর কি কমু। সে তো আপনাগো উপর।” আবদুর রাজ্জাক স্যারের কিছু কথা: 👉 পড়ার সময় দরকারি অংশ টুইক্যা রাখার অভ্যাসটা করছেন কি ? 👉 লেখার ব্যাপারটি অইল পুকুরে ঢিল ছোড়ার মত ব্যাপার। যত বড় ঢিল যত জোরে ছুড়বেন পাঠকের মনে তরঙ্গটাও তত জোরে উঠব এবং অধিকক্ষন থাকব। 👉 লেখার ক্ষমতা আছে লেইখ্যা যান। নিজের খুশিতে লেখবেন। অন্য মাইনষে কী কইব হেইদিকে তাকাইয়া কিছু লেখবেন না। #বইবাজার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_মার্চ_২০১৯।
সব কিছুর উর্ধে এই বইটি । আমাদের জীবনের অনেক চাওয়া হয়তো পূর্ণ হয়নি, তারা যদি এই বইটি পড়ে আমার মনে হয় তাদের অনেক আশাই পূর্ণ হবে। নিসন্দেহে ভালো একটি বই।