শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের অস্তিত্বকে কেউ যদি কেবলমাত্র শাহবাগ চত্বরের মধ্যে আবিষ্কার করার চেষ্টা করেন, তাহলে সেটা হবে মস্ত বড় ভুল। মুক্তিযুদ্ধের নতুন প্রজন্ম ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধদের চূড়ান্ত শাস্তির দাবিতে যে স্ফূলিঙ্গের জন্ম দিয়েছিলো, তা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে বিলম্ব হয়নি। ওদের কোনও কেন্দ্রীয় নেতা নেই, কোন সাংগঠনিক কাঠামো নেই। কিন্তু নতুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা বুঝে নিয়েছে এখন কী করতে হবে। তাই তারা ঘর ছেড়েছে ঘর ফিরে পাবার জন্য। নতুন প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অহিংস আন্দোলনের যে নবযুগের সূচনা করেছে, তার ইতিবাচক অভিঘাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জেগে উঠেছিল মানুষ; হতাশার আবর্ত থেকে তুলে এনেছিল দেশবাসীকে।
এসব বিষয়ই উঠে এসেছে ‘জীবনের শাহবাগ জীবনযুদ্ধের শাহবাগ’ সংকলনে অন্তর্ভুক্ত গল্প কবিতা প্রবন্ধ নিবন্ধ ও তথ্য পঞ্জীতে। ‘সৃজনী লেখক ও শিল্পী গোষ্ঠি শাহবাগে প্রজ্জ্বলিত আশার মশালটিকে অন্যান্য প্রগতিশীল ও দেশপ্রেমিক, অসাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠির সাথে ধারণ এবং প্রসারিত করার ধারাবাহিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছে। আমরা জানি, সাংস্কৃতিক নবজাগরণ ব্যতীত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্খিত লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি ইতিহাস এখানেই থেমে থাকবে না। শাহবাগে যে ইতিহাসের নবধারা সূচিত হয়েছে তাকে ধরে রাখার এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার প্রয়াস এই সংকলনে লক্ষ্য করা যাবে। ইতিহাসের প্রতিদায়বদ্ধতা থেকেই আমরা এই সংকলন প্রকাশ করলাম।