আশরাফ আলী থানভী (জন্ম: আগস্ট ১৯, ১৮৬৩ - মৃত্যু: জুলাই ৪, ১৯৪৫) ছিলেন একজন দেওবন্দী আলেম, সমাজ সংস্কারক, ইসলামি গবেষক এবং পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তিনি ভারতের থানাভবনের নিবাসী হওয়ার কারণে তাঁর নামের শেষে "থানভী" যোগ করা হয়। ভারত উপমহাদেশ এবং এর বাইরেরও হাজার হাজার মানুষ তাঁর কাছ থেকে আত্মশুদ্ধি এবং তাসাওউফের শিক্ষা গ্রহণ করার কারণে তিনি "হাকীমুল উম্মত" (উম্মাহর আত্মিক চিকিৎসক) উপাধিতে পরিচিত। মুসলমানদের মাঝে সুন্নতের জ্ঞান প্রচারের সংস্থা দাওয়াতুল হক তাঁরই প্রতিষ্ঠিত।
শাইখুল ইসলাম মুফতী মুহাম্মদ তাকী উসমানী
বিচারপতি মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ তাকী উসমানী (জন্ম: ১৯৪৩) পাকিস্তানের একজন প্রখ্যাত ইসলামী ব্যক্তিত্ব। তিনি হাদীস,ইসলামী ফিকহ,তাসাউফ ও অর্থনীতিতে বিশেষজ্ঞ। তিনি বর্তমানে ইসলামী অর্থনীতিতে সক্রিয় ব্যক্তিদের অন্যতম। তিনি ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শরীয়াহ আদালতের এবং ১৯৮২ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের শরীয়াহ আপিল বেঞ্চের বিচারক ছিলেন। তিনি ইসলামী ফিকহ্ ,হাদিস, অর্থনীতি এবং তাসাউউফ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ। তিনি বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ “মাআরিফুল কোরআন” এর রচয়িতা মুফতি শফী উসমানীর সন্তান এবং বিখ্যাত দুই ইসলামী ব্যক্তিত্ব মাওলানা রফী উসমানী ও মাওলানা ওয়ালী রাজীর ভাই।
সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.
আল্লাহর পথের এক মহান দাঈ, ইলমে ওহীর বাতিঘর। যুগশ্রেষ্ঠ মনীষী। খাঁটি আরব রক্তের গর্বিত বাহক। বিশ্বময় হেদায়াতের রােশনি বিকিরণকারী। উম্মতের রাহবার ও মুরব্বি। কল্যাণের পথে আহ্বানে চিরজাগ্রত কর্মবীর।
জন্ম ১৯১৪ ঈসাব্দে। ভারতের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার সূতিকাগার উত্তর প্রদেশের রাজধানী লাখনৌর রায়বেরেলীতে। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া আদ্যোপান্তই দারুল উলুম নদওয়াতুল ওলামায়। অধ্যাপনা জীবনের সিংহভাগও এই প্রতিষ্ঠানেই নিবেদিত ছিল। । আল্লামা নদভীর খ্যাতির সূচনা হয় বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকে; সীরাতে সাইয়েদ আহমাদ শহীদ রচনার মাধ্যমে। গ্রন্থটি গােটা ভারতবর্ষে তাঁকে পরিচিত করে তােলে। এরপর তিনি রচনা করেন মা যা খাসিরাল আলাম বিনহিতাতিল মুসলিমীন নামক কালজয়ী গ্রন্থ। যা তাকে প্রথমত আরববিশ্বে ও পরবর্তীতে বৈশ্বিক সুখ্যাতি এনে দেয়। এ পর্যন্ত গ্রন্থটির শত শত সংস্করণ বেরিয়েছে।
বিগত প্রায় পৌনে এক শতাব্দী ধরে তাঁর কলম অবিশ্রান্তভাবে লিখেছে মুসলিম ইতিহাসের গৌরবদীপ্ত অধ্যায়গুলোর ইতিবৃত্ত। সীরাত থেকে ইতিহাস, ইতিহাস থেকে দর্শন ও সাহিত্য পর্যন্ত সর্বত্রই তার অবাধ বিচরণ । উর্দ থেকে তার আরবী রচনাই যেন অধিকতর অনবদ্য। আল্লামা নদভী জীবনে যেমন পরিশ্রম করেছেন, তেমনই তার স্বীকৃতিও পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক বহু ইসলামী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সদস্য ছিলেন। তিনি একাধারে রাবেতায়ে আলমে ইসলামী এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, লখনৌর বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম নাদওয়াতুল-উলামা-এর রেকটর এবং ভারতীয় মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরম মুসলিম পার্সোন্যাল ল বাের্ডের সভাপতি ছিলেন।
ইসলামের এই মহান সংস্কারক ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর জুমার আগে সুরা ইয়াসীন তিলাওয়াতরত অবস্থায় ইনতিকাল করেন। সাত খণ্ডে রচিত তারিখে দাওয়াত ও আযীমত তার। আরেকটি কালজয়ী রচনা যার অনবদ্য অনুবাদ সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস। বাংলাভাষী পাঠকদের হাতে বইটির সার্থক অনুবাদ তুলে। দিতে পেরে আমরা আল্লাহর শােকরিয়া আদায় করছি।