যায়, “ক্ষত হলো সেই স্থান, যেখান দিয়ে তোমার ভেতর আলো প্রবেশ করে”। তো, নিজেদের অন্তরাত্মায় আলো প্রবেশের সুযোগ তৈরি করে দেয়ার জন্য যাপিত জীবনের নানান পর্যায়ে আমাদের ব্যক্তিগত দুঃখ-অভিমান আর না পাওয়াগুলোর ভূমিকা কি অস্বীকার করা যায়? এই যে বহু প্রার্থনার পরও না পাওয়া, বহুকামনার পরও প্রত্যাখ্যাত হওয়া, বহুবার ছেড়ে যেতে চাইলেও জীবনের যাপন, এসব দুঃখে পুড়েই কি মানুষ খাঁটি হয়? তবে, বিপরীত দিকেও প্রশ্ন থেকে যায় বৈকি! সর্বগ্রাসী পুঁজিবাদ পৃথিবীর সিংহভাগ মানুষকে যে দুঃখের সাগরে ডুবিয়ে রেখেছে, ধর্ষণের পর প্রশ্নবাণের মাধ্যমে আক্রান্ত মানুষটির যে বারংবার ছদ্মধর্ষণ, সংসারের রুটি-রুজি জোগাতে আমাদের যে জীবিত লাশ হয়ে ধুকে ধুকে বেঁচে থাকা- এসব দুঃখ কি আদৌ আমাদের খাঁটি মানুষে পরিণত করতে পারে? নাকি গুটিকতকের সুখ নিশ্চিত করতে গিয়ে আমরা শেষ হয়ে যাই প্রতিনিয়ত? দ্বিমুখী এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়াও সহজ নয়। খুঁজে পেলে মানুষ আসলে সন্ধান পেত জীবন বদলে দেয়া আশ্চর্য পরশ পাথরের। সেদিক বিচারে স্বপন মিয়া সম্ভবত মানবজীবনের নানামুখী দুঃখের আগুনে পুড়ে খাঁটি হওয়ায় বিশ্বাস রাখেন। কিংবা রাখেন না! তবুও স্বপন মিয়ার ‘জীবন এক নিয়ন্ত্রণহীন ট্রেন' আদতে মানুষের দুঃখভারাক্রান্ত, কিন্তু প্রবল সম্ভাবনাময় এক মহামূল্যবান জীবনের কথা বলে... শিবলী নোমান সহকারী অধ্যাপক, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।