মধ্যভারতের ছােট্ট স্বাধীন রাজ্য ঝিন্দ। রাজা ভাস্কর সিংহের মৃত্যুর পর শঙ্কর ও উদিত দুই ছেলের মধ্যে সিংহাসন নিয়ে শুরু হল বিরােধ, অভিষেকের ঠিক আগে শঙ্কর সিং নিখোজ হলেন। এদিকে কলকাতার এক বাঙালি ছেলে গৌরীশঙ্কর রায়কে হুবহু শঙ্কর সিংহের মতাে দেখতে। তাকেই শঙ্কর সিং বলে সিংহাসনে বসাতে উদ্যত হলেন ঝিন্দের পুরনাে কিছু রাজকর্মী। অভিষেক সম্পন্ন হল, পাশের রাজ্যের রাজকন্যা কস্তুরীর সঙ্গে বিবাহ পর্যন্ত স্থির। কিন্তু সহজে তা মেনে নেবেন কেন উদিত সিং? শঙ্কর সিং তাে নিখোঁজ নন, বন্দী করে রাখা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু কোথায়? শঙ্কর সিং কি মুক্তি পাবেন? গৌরীশঙ্কর কি লুকিয়ে রাখতে পারবেন তার আসল পরিচয়? তাছাড়া, তাঁর সঙ্গে এমন চেহারাগত অবিকল সাদৃশ্যই বা কন মধ্যভারতের স্বাধীন রাজ্যের এক রাজকুমারের? ঝিন্দু রাজ্যের উত্তরাধিকার নিয়ে পাঁচ পুরুষ আগের এক কৌতুহলকর নাটকের যবনিকা কীভাবে ফের উত্তোলিত হল, কীভাবে সব রহস্যের ঘটল আশ্বর্য সমাধান, তাই নিয়ে অপূর্ব রােমান্স রােমাঞ্চে-ভরা এক কালজয়ী কাহিনি ‘ঝিন্দের বন্দী। এ কাহিনির উৎস বিদেশি, কিন্তু বিস্ময়কর মুনশিয়ানায় পটভূমি ও চরিত্রাবলীকে পুরােপুরি ভারতীয় করে তুলেছেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম প্রকাশের দিন থেকে আজও জনপ্রিয় এই উপন্যাস।
শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৭ চৈত্র, ১৩০৫ বঙ্গাব্দ (৩০ মার্চ, ১৮৯৯) উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর শহরে, মাতুলালয়ে। পিতা : তারাভূষণ, মাতা : বিজলী প্রভা। আদি নিবাস উত্তর কলকাতার বানগর কুঠিঘাট অঞ্চলে পড়াশােনা মুঙ্গেরে ও কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে বি-এ পাশ করে ল কলেজে ভর্তি হন। শেষ পর্যন্ত পাটনা থেকে আইন পাশ করেন। ছাত্রাবস্থাতেই বিবাহ স্ত্রী : পারুল। সাহিত্যরচনার শুরু কবিতা দিয়ে প্রথম কাব্যগ্রন্থ। ‘যৌবনস্মৃতি' (১৩২৫ বঙ্গাব্দ) এরপর দুটি-একটি গল্প । সাহিত্যকে জীবিকা করে তােলা ১৯২৯ সাল থেকে । ১৯৩৮ সাল থেকে বােম্বাইয়ে চলচ্চিত্রে চিত্রনাট্য লেখার কাজে প্রথমে বােম্বে টকিজ, পরে অন্যত্র ও ফ্রিল্যান্স। সিনেমার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে ১৯৫২ সাল থেকে পুণাতেই স্থায়ীভাবে বসবাস। জ্যোতিষচর্চায় আগ্রহ ছিল গভীর। ছদ্মনাম : চন্দ্রহাস। পুরস্কার : রবীন্দ্র পুরস্কার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরৎস্মৃতি পুরস্কার, মতিলাল পুরস্কার ও অন্যান্য । মৃত্যু : ২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭০ সাল।